বিপজ্জনক দাহ্য পণ্যের ৪ কন্টেনার চট্টগ্রাম বন্দর থেকে খালাস
প্রকাশ | ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩৫
দাহ্য ও বিপজ্জনক পণ্যের চারটি কন্টেনার দ্রুত সরানো নাহলে চট্টগ্রাম বন্দরের অবস্থা লেবাননের বৈরুতের মতো হতে পারে– গত ১ অক্টোবর ২০২৪ তারিখের বন্দর-কাস্টমস যৌথ সভায় এ কথা বলে এনবিআর চেয়ারম্যানের কাছে এটি দ্রুত নিস্পত্তির হস্তক্ষেপ চান চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান। নিবিড় তদারকি ও আনুক্রমিক চেষ্টায় গত ২৭ অক্টোবর কন্টেনারগুলো নিলাম দরদাতার কাছে খালাস দেয়া হয়। চবক ও নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাগণ আপাত অসাধ্য সাধনের জন্য স্বস্তি প্রকাশ ও এনবিআর কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
প্রসংগত, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের আমন্ত্রণে গত ০১/১০/২০২৪ খ্রি. হতে ০৩/১০/২০২৪ খ্রি. তারিখে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান সংশ্লিষ্ট সদস্যদের নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি বিভিন্ন অংশীজনের সাথে সভা ও মতবিনিময় করেন। বন্দরের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত যৌথ সভায় ডিজি কার্গো নিয়ে আলোচনাকালে চার কন্টেইনার ৯৩ মেট্রিক টন অতি দাহ্য Sodium glycerolate (এইচএসকোড ২৯০৫৪৫০০) নিয়ে চবক চেয়ারম্যান শংকা প্রকাশ করেন।
২০১২ সালে আমদানিকৃত বারংবার নিলাম উদ্যোগ নিয়েও বিভিন্ন জটিলতার কারনে কমিশনার দীর্ঘকাল এটি নিস্পত্তি করতে পারেননি এবং এটি ব্যবস্থিত করতে না পারলে লেবাননের বৈরুত বন্দরের মতো জীবনহানির আশংকা প্রকাশ করেন। ইতোপূর্বে বন্দর কর্তৃপক্ষ একাধিকবার কমিশনারকে পত্র দেন এবং সর্বশেষ গত ১৮/৯/২০২৪ তারিখে এ বিষয়ে এনবিআরে চিঠি দেন।
যৌথসভা শেষে এনবিআর চেয়ারম্যান বিপজ্জনক পণ্যের চালানটি নিস্পত্তির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জগুলো দ্রুত চিহ্ণিত করে কোন বাধা থাকলে এনবিআর পর্যায়ে হলে নিস্পতি করে কন্টেনারগুলো দ্রুত খালাসের ব্যবস্থা নিতে কাস্টমস সদস্য ও কমিশনারকে নির্দেশ দেন।
কমিশনার কাস্টম হাউস চট্টগ্রাম নিলাম কমিটির সাথে জরুরী সভা করে চালানটি নিলাম প্রক্রিয়ায় খালাসে জটিলতা চিহ্নিত করেন। জানমালের সম্ভাব্য ক্ষতি এড়াতে এনবিআর চেয়ারম্যান কমিশনার ও বন্দর চেয়ারম্যানের সাথে এ নিয়ে টেলিফোনে কয়েক দফা কথা বলেন। নিলাম দরদাতাকে এ পর্যায়ে সম্পৃক্ত করা হয়। অবশেষে ৪১ লক্ষ টাকা রাজস্ব আদায় করে নিলাম দরদাতা মেসার্স এস এ ট্রেডিং এন্ড কোং-কে পণ্য চালানটি খালাস দেয়া হয়।
অতি দাহ্য ও বিপজ্জনক পণ্যের চালানটি খালাসের ফলে বন্দরের দীর্ঘদিনের দুশ্চিন্তা দূর হয়েছে। কাস্টমস ও বন্দর কর্মকর্তা কর্মচারীদের মধ্যে স্বস্তি বিরাজ করছে। চৌদ্দ বছরের অনিষ্পন্ন কার্গো জটিলতার বেড়াজাল ভেঙ্গে এক মাসের কম সময়ে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ খালাস দিয়ে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। ভবিষ্যতে এ ধরণের অপেক্ষমাণ পণ্যচালান খালাসের দৃষ্টান্ত তৈরি হয়েছে।
নিলাম সংশ্লিষ্ট অংশীজনগণ মনে করেন, কর্তৃপক্ষ আন্তরিক হলে ট্রেডের যেকোন সমস্যা সমাধান সম্ভব এবং তাঁরা এটিকে কাস্টমসের বড় সফলতা হিসেবে দেখছেন। অগ্রাধিকার সমস্যা সমাধানে শ্রম ও আন্তরিকতা নিয়ে কাজ করার জন্য এনবিআর চেয়ারম্যান, চবক চেয়ারম্যান, তাঁর সহকর্মীগণ এবং চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার ও তাঁর টিমকে ধন্যবাদ জানান।
যাযাদি/ এস