বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ৮ কার্তিক ১৪৩১

রাষ্ট্রপতি ইস্যুতে রাজনৈতিক ঐক্য প্রয়োজন: আইন বিশেষজ্ঞদের মত

এ কে এম রেজাউল করিম, বিশেষ প্রতিনিধি
  ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ১২:২৩
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি- সংগৃহীত

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র ইস্যুতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সাম্প্রতিক মন্তব্যের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। রাষ্ট্রপতির মন্তব্যের পর শিক্ষার্থীদের কয়েকটি সংগঠন গতকাল মঙ্গলবার বঙ্গভবন ঘেরাও কর্মসূচি থেকে তাকে পদত্যাগের জন্য ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে। তারা হুঁশিয়ারি দিয়েছে যে, রাষ্ট্রপতি পদত্যাগ না করলে ‘দুর্বার আন্দোলন’ গড়ে তোলা হবে।

তবে আইন ও সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতিকে সরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া নিয়ে জটিলতা রয়েছে। সংবিধানে রাষ্ট্রপতিকে সরানোর জন্য সংসদকে প্রয়োজন, কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে সংসদ বাতিল হওয়ায় সেই সুযোগ নেই। তাছাড়া, রাষ্ট্রপতি চাইলে স্পিকারের কাছে পদত্যাগ করতে পারেন, কিন্তু স্পিকার পদত্যাগ করেছেন এবং ডেপুটি স্পিকার কারাগারে থাকায় সেটিও সম্ভব হচ্ছে না।

রাজনৈতিক ঐক্য ছাড়া সমাধান সম্ভব নয়

বিশিষ্ট আইন বিশেষজ্ঞ ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেছেন, রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের পরিস্থিতি সমাধানে রাজনৈতিক ঐক্য প্রয়োজন। সংবিধানের মধ্যে সমাধান খোঁজা হলে তা সম্ভব হবে না বরং রাজনৈতিক সমঝোতা ও ঐকমত্যের মাধ্যমেই এই জটিলতা নিরসন করা যাবে।

অন্যদিকে, সুপ্রিমকোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহদীন মালিক বলেন, আইনগতভাবে রাষ্ট্রপতিকে অপসারণের সুযোগ নেই, কিন্তু সরকার চাইলে জনআকাঙ্ক্ষার ভিত্তিতে তা করতে পারে।

সাংবিধানিক দিকনির্দেশনার অভাব

আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, ১৯৯০ সালের গণ-আন্দোলন এবং সামরিক সরকারের পতনের সময় যে ধরনের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়েছিল, তেমন কোনো সাংবিধানিক নির্দেশনা বর্তমানে নেই। ফলে রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগ বা অপসারণের প্রক্রিয়া নিয়ে যে বিতর্ক চলছে, তা রাজনৈতিক ঐক্য ছাড়া সমাধান করা সম্ভব নয়।

ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি

বাংলাদেশের ইতিহাসে রাষ্ট্রপতি পরিবর্তন নিয়ে নানা জটিলতা ও অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, যেমন ১৯৭৫ সালে খন্দকার মোশতাক আহমেদ বা ১৯৯০ সালে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের পদত্যাগ। এখনকার পরিস্থিতিতেও আইন বিশেষজ্ঞরা রাজনৈতিক সমঝোতার মাধ্যমে সমাধানের আহ্বান জানাচ্ছেন।

সংবিধান ও আইনগত দিকনির্দেশনা

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বর্তমান সংকট সমাধানে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ থেকে একটি রেফারেন্স নেওয়া যেতে পারে, যা পরবর্তী সময়ে এই প্রক্রিয়ার বৈধতা দেবে।

যাযাদি/ এসএম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে