শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ২১ আশ্বিন ১৪৩১
হামলা-ভাঙচুর,শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের লাঞ্ছিত করার অভিযোগ

রামপুরা একরামুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষকের বিচারের দাবি

যাযাদি ডেস্ক
  ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ১৩:৪৭
ফাইল ছবি

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করা রামপুরা একরামুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক হোসনেয়ারার বিরুদ্ধে বহিরাগত সন্ত্রাসী নিয়ে বিদ্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অভিভাবক, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে।

বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) একরামুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে নিজ দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক হোসনেয়ারাসহ হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোসা. জরিনা বেগম।

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোসা. জরিনা বেগম বলেন, গত সোমবার বেলা ১১টায় রামপুরা একরামুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পদত্যাগকারী প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক হোসনেয়ারার নেতৃত্বে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে বিদ্যালয়ের গেট ভেঙে প্রবেশ করেন। সন্ত্রাসীরা বিদ্যালয়ের দুটি মাইক, অফিস কক্ষের জানালা, ফুলের টব ভাঙচুর করেন। প্রধান শিক্ষকের কক্ষ তালাবদ্ধ থাকায় তারা তালা ভাঙার চেষ্টা করেন। তাদের এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা প্রতিবাদ করে স্লোগান দিতে থাকলে সন্ত্রাসীরা ছাত্রী-অভিভাবক ও শিক্ষকদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন এবং শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে আঘাত করেন। এতে বেশকিছু ছাত্রী, অভিভাবক ও শিক্ষক আহত হন।

তিনি বলেন, ওইদিন এমন পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা চাইলে সেনাবাহিনীর সদস্য ও পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে প্রাক্তন প্রধান শিক্ষককে থানায় নিয়ে যান। এসময় হাতিরঝিল খানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণ জানতে চাইলে প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক জানান, তিনি গত ১৪ আগস্ট থেকে ছুটি ছিলেন। কিন্তু ছুটি অনুমোদনের কোনো দালিলিক প্রমাণ তিনি দেখাতে পারেননি। অথচ গত ১৪ আগস্ট তিনি অফিস করেছেন এবং একই তারিখে তিনি স্বেচ্ছায় ও স্বজ্ঞানে পদত্যাগ করেছেন। ম্যানেজিং কমিটিও সেই পদত্যাগ পত্র অনুমোদন করে বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আমাকে (ভারপ্রাপ্ত) প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব দেন।

জরিনা বেগম বলেন, প্রাক্তন প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের পর শ্রেণি কার্যক্রম গতিশীল করার লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হলে প্রাক্তন প্রধান শিক্ষকের অনুগত শিক্ষক মো. আকরাম খান, মোহাম্মদ ওবায়দুর রহমান ও স্বরজিত কুমার বিশ্বাস বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন। তাদের কাছে ব্যক্তিগত কোচিং করা কিছু সংখ্যক ছাত্রীদের পরীক্ষার মার্কস বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন অবৈধ সহায়তা করার প্রলোভন দেখিয়ে বিদ্যালয়ের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে বহিরাগতদের সহায়তায় প্রাক্তন প্রধান শিক্ষককে পুনরায় বহাল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন। পদত্যাগের পর সকল শিক্ষক-কর্মচারী প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক হোসনেয়ারার বিভিন্ন অসদাচরণ, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে বিদ্যালয়ের বর্তমান সভাপতি, সিনিয়র সহকারী কমিশনার, সহকারী কমিশনার (জেএম) জেলা প্রশাসকের কার্যালয় বরাবর আবেদন করেন।

আবেদন করার পর হতে বিভিন্নভাবে তিনি আমাদের কয়েকজন শিক্ষককে হুমকি দিয়ে আসছেন। গত ২৯ সেপ্টেম্বর বিদ্যালয় ছুটির সময় মো. আকরাম খান, মোহাম্মদ ওবায়দুর রহমান ও স্বরজিত কুমার বিশ্বাস আগামীকাল 'ফাইনাল খেলা' হবে বলে হুমকি দিয়ে যান। পরে ওই দিন হাতিরঝিল থানায় আমি নিজে বাদী হয়ে প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক হোসনেয়ারা ও হুমকিদাতা শিক্ষকদের নামে জিডি করি। সংঘটিত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এবং প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক হোসনেয়ারার সকল অনিয়ম, দুর্নীতির তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আগেই শিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বোর্ড ঢাকা, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, জেলা শিক্ষা অফিসার ও থানা শিক্ষা অফিসার বরাবর আবেদন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক হোসনেয়ারা বহিরাগত সন্ত্রাসীদের সাথে নিয়ে যে ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে তা আমরা কোনো শিক্ষক, স্কুল কর্তৃপক্ষ, অভিভাবক ও এলাকাবাসী কেউ কামনা করি নাই। আমরা ওই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। সেই সঙ্গে ভাঙচুর ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।

যাযাদি/ এসএম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে