শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩০ ভাদ্র ১৪৩১

জিয়াউলের ক্যাশিয়ার পরকীয়া প্রেমিকা সিনথিয়া ও সাজগোজ

যাযাদি ডেস্ক
  ২৯ আগস্ট ২০২৪, ১৬:৪২
আপডেট  : ২৯ আগস্ট ২০২৪, ১৬:৫৮
ছবি : যায়যায়দিন

গুম, খুন ও আয়নাঘরের কারিগর হিসেবে অভিযুক্ত সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান গ্রেপ্তার হয়েছেন গত ১৫ আগস্ট। রাজধানীর খিলক্ষেত থানায় একটি হত্যা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করে ওই থানার পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর তাকে আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডেও নিয়েছে পুলিশ। তবে এখনো অজানা রয়েছে তার বহু অবৈধ সম্পদের খবর।

তেমনই একটি প্রতিষ্ঠানের খোঁজ পাওয়া গেছে। ‘সাজগোজ’ নামের বিশাল বিনিয়োগের কসমেটিক্স বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানটি গড়ে উঠেছে জিয়াউল আহসানের টাকায়। তবে এই প্রতিষ্ঠানটি চলছে সিনথিয়া শারমিন ইসলাম নামে তার পরকীয়া প্রেমিকার নামে। কোথাও কোথাও শারমিনকে নিজের স্ত্রী হিসেবেও উপস্থাপন করেছেন জিয়াউল আহসান।

একটি সূত্রের খবর, সাজগোজ নামের কসমেটিক্স বিক্রেতা প্রতিষ্ঠনটি শুরু হয় মাত্র ২০১৮ সালে। মাত্র ৫ বছরে আঙ্গুল ফুলে কলাগাজ হয়েছে তারা। রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্ক, বসুন্ধরা সিটি, ইস্টার্ন মল্লিকা, সীমান্ত স্কয়ার, বেইলিরোড, মিরপুর, ওয়ারি ও উত্তরার মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় গড়ে তুলেছেন বিশাল বিশাল শোরুম। ঢাকার বাইরে চট্টগ্রামেও রয়েছে কয়েক হাজার স্কয়ার ফিটের শোরুম।

সাজগোজ থেকে সত্য চাকরি ছাড়া এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ‘সাজগোজের মোট ৯টি আউটলেট আছে। ৯টি আউটলেটের সেটাপ খরচই আগে প্রায় ২০ কোটি টাকা। এসব আউটলেটে তেমন বেচাকেনা না দেখলেও প্রতি রাতে বিপুল পরিমাণ পণ্য কেনাবেচার ডাটা এট্রি করা হয়। এটা দেখে আমার সন্দেহ হয় যে, এখানে কালো টাকা সাদা করা হয়। এজন্য আমি নিজে থেকে চাকরি ছেড়ে দিয়েছি।’

জানা যায়, কিছু দিন পূর্বে সাজগোজে অভিযান চালায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। সেখানে নকল পণ্য পাওয়ায় তাদের জরিমানা করা হয়।

এই ঘটনা নিয়ে নিউজ করে জাতীয় একটি দৈনিকের প্রিন্ট ও অনলাইন ভার্সন। তখন তৎকালীন ক্ষমতাধর সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসনা ওই পত্রিকার সম্পাদককে ফোন করে জানান যে, ‘সাগজোগ’ আপনার ভাবির প্রজেক্ট। এটার বিরুদ্ধে নিউজ করা যাবে না।

জিয়াউল আহসানের ওই হুমকির পর পত্রিকা বন্ধ হয়ে যাওয়ার শঙ্কায় ওই পত্রিকার ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেল থেকে ভিডিও ডিলিট করে দেয়া হয়। কিন্তু সম্প্রতি জিয়াউল আহসান গ্রেপ্তার হওয়ার পর সেই নিউজ আবার আপলোড করে ওই পত্রিকা।

এ বিষয়ে জাতীয় দৈনিকটির অনলাইন প্রধানের (এডিটর, অনলাইন) কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘জিয়াউল আহসান ফোন করে বলেছিলেন, এটা তার স্ত্রীর প্রজেক্ট। কিন্তু আমরা নিশ্চিত হয়েছি, সিনথিয়ার আসলে তার স্ত্রী না। মূলত শারমিনের সঙ্গে তার বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। মূলত জিয়াউল আহসানের অবৈধ সম্পদের ক্যাশিয়ারদের মধ্যে শারমিন একজন।’

জানা গেছে, মাত্র পাঁচ বছর আগে শুরু করা প্রতিষ্ঠানটিতে প্রতি দিন ৩০ থেকে ৫০ লাখ টাকা বিক্রির ভাউচার বানানো হয়। দৈনিক অর্ডার দেখানো হয় প্রায় ৪ হাজার। কিন্তু বাস্তবে এমন বিক্রি দেখা যায় না। মূলত জিয়াউল আহসানের কালো টাকা সাদা করতে তার পরকীয়া প্রেমিকা এ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বলে অভিযোগ সম্প্রতি চাকির ছাড়া ওই কর্মকর্তার।

এদিকে জিয়াউল আহসান গ্রেপ্তারের পর নগদ টাকার সঙ্কটে পড়েছে সাজগোজ। প্রতিষ্ঠানটির মাসিক বেতন প্রায় এক কোটি টাকা। চলতি মাসে স্টাফদের বেতন দিতে পারবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে শারমিনের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে সাজগোজের ব্রান্ড ম্যানেজার রাজিব বলেন, এসব অভিযোগ সত্য না। জিয়াউল আহসান গ্রেপ্তারের পর সাজেগোজ বিপদে আছে তা স্বীকার করে।

যাযাদি/ এম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে