বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৭ ভাদ্র ১৪৩১

বিদ্যুৎ খাতে লুটপাটের মহোৎসব

সাখাওয়াত হোসেন
  ১৭ আগস্ট ২০২৪, ০৯:৩৬
ফাইল ছবি

‘যারা কুইক রেন্টাল নিয়ে বেশি কথা বলবে তাদের বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেওয়া হবে’- এমন হুমকি দিয়ে সদ্য পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার শাসনামলের ১৫ বছর এ খাতে লুটপাটের সব বড় ফাঁদ উন্মুক্ত করে দেন। পাশাপাশি ক্যাপাসিটি চার্জের নামে গুটি কয়েক কোম্পানির হাতে হাজার হাজার কোটি টাকা তুলে নেওয়ার পথ প্রশস্ত করেন। যার দায়ভার এখন শুধু বিদ্যুৎ বিভাগই নয়, সারাদেশের মানুষকে বহন করতে হচ্ছে।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের বিদ্যুৎ খাত ‘খোলা’ হয়ে গেছে; ভেতরে কিছু নেই। ক্যাবের পক্ষ থেকে বারবার সতর্ক করা হলেও আমলে নেওয়া হয়নি। এ মুহূর্তে দেশের সব উন্নয়ন বন্ধ রেখে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ওপর নজর দেওয়া জরুরি, তা না হলে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। আর জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাত যদি ধসে যায় তাহলে গোটা অর্থনীতি বালুর বাঁধের মতো তছনছ হয়ে যাবে।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানির সব চুক্তি খতিয়ে দেখতে টাস্কফোর্স গঠন করা জরুরি। এই টাস্কফোর্স চুক্তি খতিয়ে দেখে বাতিল করার পরামর্শ দেবে এবং কেন্দ্রের ক্যাপাসিটি পেমেন্টের যৌক্তিক পুনর্মূল্যায়ন করবে। আগামী তিন বছর বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম বাড়ানো যাবে না। এসব না করা গেলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত যেভাবে ডুবেছে, তাকে আর ভাসানো যাবে না।

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) তথ্য বলছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ক্যাপাসিটি চার্জ ছিল ৩২ হাজার কোটি টাকা যার বেশিরভাগই গেছে এসব রেন্টাল বা কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালন ব্যয়ে। এর আগের অর্থবছরে অর্থাৎ ২০২২-২৩ অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল ২৮ হাজার কোটি টাকা এবং ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ছিল ৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। টাকার অবমূল্যায়নসহ নানা কারণে মাত্র পাঁচ বছরের ব্যবধানে প্রায় ছয় গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে ক্যাপাসিটি চার্জের পরিমাণ।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, দেশে স্থাপিত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর বর্তমান মোট উৎপাদন ক্ষমতা ২৯ হাজার ৭২৭ মেগাওয়াট এবং এর মধ্যে গ্রিডভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা ২৬ হাজার ৫০৪ মেগাওয়াট। চাহিদা আছে সাড়ে ১৩ হাজার থেকে ১৭ হাজার মেগাওয়াট এবং এর বিপরীতে উৎপাদন করা হচ্ছে ১৩ হাজার থেকে সাড়ে ১৫ হাজার মেগাওয়াট। পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ তথ্য বলছে, ২২ এপ্রিল ২০২৪ দেশে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়েছিল ১৬ হাজার ২৩৩ মেগাওয়াট এবং এর আগের দিন ১৫ হাজার ৬৬৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়েছিল। জানা যায়, ২০২২-২৩ অর্থবছরে গ্রীষ্মকালে বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদার বিপরীতে ২০২৩ সালের ১৯ এপ্রিল সর্বোচ্চ উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ১৫ হাজার ৬৪৮ মেগাওয়াট। শীতকালে বিদ্যুতের চাহিদা কমে যাওয়ায় তখন বিদ্যুতের সর্বোচ্চ উৎপাদন ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার মেগাওয়াটে নেমে আসে।

জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকির বেশিরভাগ অর্থই এসব বেসরকারি রেন্টাল-কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর ক্যাপাসিটি চার্জ মেটাতে ব্যয় করা হচ্ছে। এই কেন্দ্রগুলো বিদ্যুৎ উৎপাদন না করলেও তাদের উৎপাদন ক্ষমতার ওপর ভিত্তি করে একটি নির্দিষ্ট ফি কেন্দ্রগুলোকে দিতে হয়, যার পুরোটাই সরকারকে বহন করতে হয়। এই পরিমাণ অর্থ বিদ্যুতের অন্য কোনো উন্নয়নমূলক কর্মকাÐে ব্যবহার হলে তা দেশের জন্য উপকার হতো বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের গুরুত্ব বিবেচনায় এ খাতে ৩০ হাজার ৩১৭ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়। এর মধ্যে বিদ্যুৎ খাতে ২৯ হাজার ২৩০ কোটি টাকা এবং জ্বালানি খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১ হাজার ৮৭ কোটি টাকা।

আওয়ামী লীগ সরকার গত সাড়ে ১৫ বছরে বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র ও ভাড়াভিত্তিক (কুইক রেন্টাল) বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ ১ লাখ ৩৮ হাজার ৭৮৬ দশমিক ৫০ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে। বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রকে অলস বসিয়ে রাখলে চুক্তি অনুযায়ী তাদের যে পরিমাণ ভর্তুকি দিতে হয় সেটারই আনুষ্ঠানিক নাম ক্যাপাসিটি চার্জ। জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা দেশের বিদ্যুৎ খাতের ক্যাপাসিটি চার্জ নিয়ে শুরু থেকেই বেশ সমালোচনা মুখর ছিলেন। তারা এ পদ্ধতিকে রাষ্ট্রের অর্থ লুটপাটের সুযোগ হিসেবে উল্লেখ করে তীব্র সমালোচনা করেন। বিদ্যুৎ বিভাগের তথ্য বলছে, ২০০৮-০৯ থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছর ১৬ বছরের জন্য ১ লাখ ৩৮ হাজার ৭৮৬ দশমিক ৫০ কোটি টাকা ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধ করতে হয়েছে। এর মধ্যে ২০০৮-০৯ থেকে ২০১৭-১৮ অর্থবছর পর্যন্ত ১০ বছরে ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধের পরিমাণ ছিল ৪৩ হাজার ৩৩৩ দশমিক ৮৩ কোটি টাকা। অথচ ২০১৮-১৯ অর্থবছর থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছর পর্যন্ত ৬ বছরে ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধ করা হয়েছে ৯৫ হাজার ৪৫২ দশমিক ৬৭ কোটি টাকা।

জানা গেছে, গত ১৪ বছরে বিদায়ী সরকার সংশ্লিষ্ট সামিট পাওয়ারের পকেটে ক্যাপাসিটি চার্জের প্রায় ১০ হাজার ৬২৩ কোটি টাকা ঢুকেছে যা মোট ক্যাপাসিটি চার্জের প্রায় ১২ শতাংশ। তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক কোম্পানি এগ্রিকো ইন্টারন্যাশনাল ৭ হাজার ৯৩২ কোটি টাকা (৮.৮৪ শতাংশ) এবং তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে মালয়েশিয়াভিত্তিক চীনা কোম্পানি এরদা পাওয়ার হোল্ডিংস ৭ হাজার ৫২৩ কোটি টাকা (৮.৩৯ শতাংশ)। চতুর্থ ইউনাইটেড গ্রুপ ৬ হাজার ৫৭৫ কোটি টাকা, পঞ্চম রুরাল পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (আরপিসিএল) ৫ হাজার ১১৭ কোটি টাকা, ষষ্ঠ বাংলা ক্যাট গ্রুপ ৫ হাজার ৬৭ কোটি টাকা, সপ্তম বাংলাদেশ ও চীনের যৌথ বিনিয়োগে গড়ে ওঠা পায়রা কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র ৪ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা, অষ্টম ওরিয়ন গ্রুপ ৪ হাজার ৫২৫ কোটি টাকা, নবম খুলনা পাওয়ার কোম্পানি (কেপিসিএল) ৪ হাজার ৫৪ কোটি টাকা, দশম হোসাফ গ্রুপ ২ হাজার ৬৯৯ কোটি টাকা, ১১তম মোহাম্মদী গ্রুপ ২ হাজার ৫৪৪ কোটি টাকা, ১২তম ডরিন গ্রুপ ২ হাজার ১৮৩ কোটি টাকা, ১৩তম ম্যাক্স গ্রুপ ২ হাজার ১৫৪ কোটি টাকা, ১৪তম যুক্তরাষ্ট্রের এপিআর এনার্জি ২ হাজার ৮৭ কোটি টাকা, ১৫তম সিঙ্গাপুরের সেম্বকর্প ২ হাজার ৫৭ কোটি টাকা, ১৬তম শাহজিবাজারের ১ হাজার ৯৬৮ কোটি টাকা, ১৭তম সিকদার গ্রুপ ১ হাজার ৮৪২ কোটি টাকা ও ১৮তম কনফিডেন্স গ্রুপ ১ হাজার ৫৭৪ কোটি টাকা, ১৯তম যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক নিউ ইংল্যান্ড পাওয়ার কোম্পানির এনইপিসি কনসোর্টিয়ামের হরিপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র ১ হাজার ৫২৮ কোটি টাকা, ২০তম শ্রীলংকান বিদ্যুৎ কোম্পানি লক্ষধনভি অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস ১ হাজার ৪০১ কোটি টাকা, ২১তম সিনহা গ্রুপ ১ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা, ২২তম আনলিমা গ্রুপ ১ হাজার ২৭৪ কোটি টাকা, ২৩তম বারাকা গ্রুপ ১ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা, ২৪তম রিজেন্ট গ্রুপ ১ হাজার ৩৭ কোটি টাকা ও ২৫তম এনার্জিপ্যাক ১ হাজার ২৭ কোটি টাকা।

এছাড়া ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করতে গিয়ে ৯ বছরে ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হয়েছে প্রায় ১১ হাজার ১৫ কোটি টাকা। দেশটি থেকে বিদ্যুৎ আমদানি শুরু হয় ২০১৩-১৪ অর্থবছর এবং সে বছর ক্যাপাসিটি চার্জ ছিল প্রায় ৫০১ কোটি টাকা, ২০১৬-১৭ অর্থবছর ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধ বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ৬৮ কোটি টাকা এবং ২০২১-২২ অর্থবছরে ছিল ১ হাজার ৭২৪ কোটি টাকা। এভাবেই বিদ্যুৎ খাতে চলেছে কুইক রেন্টালের নামে দুর্নীতি। আর ক্যাপাসিটি চার্জের নামে বেড়েছে অর্থের অপচয় বা লুটপাটের মহোৎসব।

এটি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয় যখন সরকারের একটি প্রতিষ্ঠানের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার তৈরি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। ওই প্রতিবেদনে দেশের বিদ্যুৎকেন্দ্রের ক্যাপাসিটি চার্জকে একটি ‘লুটেরা মডেল’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে স্থাপিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের মোট সক্ষমতার মাত্র ৫৬ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়। এর কারণ, জ্বালানি ও কয়লানির্ভর বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর ইউনিট প্রতি বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ অনেক বেশি। এসব বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে অতিরিক্ত মূল্যে বিদ্যুৎ কিনে গ্রাহকদের সরবরাহ করতে সরকারকে বিপুল পরিমাণ অর্থ ভর্তুকি দিতে হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, বর্তমানে দেশে বিদ্যুতের উৎপাদন ক্ষমতা ২৯ হাজার ৭২৭ মেগাওয়াট কিন্তু উৎপাদন হচ্ছে মাত্র ১৪ হাজার মেগাওয়াট। অথচ ব্যবহার না করেই উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। সদ্য পতিত সরকার যে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা তৈরি করেছে তা ২০৩০ সালেও প্রয়োজন হবে না। আজ থেকে ছয় বছরে চাহিদা দাঁড়াতে পারে ১৯ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট। ২৫ শতাংশ রিজার্ভ ধরলে তখন ২৩ হাজার ২৫২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সক্ষমতা হলেই হয়। অথচ সক্ষমতা বাড়লেও দেশে লোডশেডিং হচ্ছে। গরমে গড়ে ১১০০ মেগাওয়াট লোডশেডিং হচ্ছে। চাহিদার থেকে এখন দেশে বিদ্যুতের উৎপাদন সক্ষমতা ৪৬.৪ শতাংশ বেশি। কিন্তু এ সক্ষমতাই অর্থনীতির মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকার চুক্তি করেছে, বিদ্যুৎ কিনুক বা না কিনুক মাসের শেষে টাকা দিতে হবে। উৎপাদন না করলেও দেশের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে দিতে হয় ক্যাপাসিটি চার্জ।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলেন, কুইক রেন্টাল ও ক্যাপাসিটি চার্জের নামে লুটপাটের মহোৎসব নিয়ে কেউ যাতে কোনো কথা বলতে না পারে এজন্য বিশেষ আইনও করা হয়। যা এখন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০১০ সালে দুই বছরের জন্য বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে দরপত্র এড়াতে সংসদে পাস করা হয় ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রæত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন’। এই আইনে করা কোনো বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রকল্পের বিরুদ্ধে প্রশ্ন উত্থাপন করা যাবে না, যাওয়া যাবে না দেশের আদালতে। পরে আইনটির মেয়াদ কয়েক দফা বাড়িয়ে সর্বশেষ ২০২৬ সাল পর্যন্ত করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ক্ষমতাধর বিনিয়োগকারী গোষ্ঠীর স্বার্থের সুরক্ষা দিচ্ছে এ আইন। এখানে সরকারি ক্রয় বিধিমালা লঙ্ঘন করে উন্মুক্ত দরপত্র আহবানের সুযোগ রাখা হয়নি। ফলে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির জায়গাটি উপেক্ষিত। ক্রয় প্রক্রিয়ায় অসচ্ছতা কিংবা যেকোনো ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতি হলেও আদালতে যাওয়ার কোনো এখতিয়ার নেই। উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার অভাবে বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতের সর্বোচ্চ ভ্যালু ফর মানিপ্রাপ্তির সুযোগ নেই। এতে ব্যয় বাড়ছে। দিন শেষে সেই বোঝা জনগণকেই বহন করতে হচ্ছে।

পিডিবি সূত্র জানায়, গত ১৫ বছরে বিদ্যুতের ভুল নীতির কারণে লোকসান গুনেছে ১ লাখ ৬১ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ২০২১-২২ ও ২০২২-২৩ অর্থবছরে লোকসান প্রায় ৮৫ হাজার কোটি টাকা। অথচ ১৫ বছর আগে বছরে লোকসান ছিল মাত্র ৮২৮ কোটি টাকা। গত অর্থবছরে লোকসান দেয় ৫১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। এই বিপুল অর্থ সরকারের অর্থ বিভাগ ধার হিসেবে দেয় পিডিবিকে। তবে অর্থ বিভাগের কাছে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় এখন পিডিবিকে টাকা দিতে পারছে না। কারণ, পিডিবি দেনা শোধ করে মার্কিন ডলারে। রিজার্ভের ওপর টান পড়ায় বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালিকরাও পিডিবির কাছে বিদ্যুতের বিল পাবেন। বিগত সরকার বন্ড ইস্যু করেও পরিস্থিতির উন্নতি করতে পারেনি।

যাযাদি/ এসএম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে