সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১

লিবিয়ায় মানব পাচার ও মুক্তিপণ আদায়কারী চক্রের মূলহোতাসহ গ্রেফতার ২ 

যাযাদি ডেস্ক
  ২৮ জুন ২০২৪, ২০:১১
আপডেট  : ২৮ জুন ২০২৪, ২১:০৮
ছবি-সংগৃহীত

গত ২৬ জুন সিআইডি প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী-এর নির্দেশেনায় সিআইডি’র সিরিয়াস ক্রাইম টিএইচবি শাখার একটি টিম লিবিয়ায় মানব পাচারকারী চক্রের মূলহোতা কক্সবাজার জেলার পেকুয়া থানার পাহাড়িয়া খালী এলাকার মৃত নুরুল আলমের ছেলে বাদশা মিয়া (৪২) এবং তার অপর সহযোগী আরজু বেগম (৩১), স্বামী রেজাউল করিম, সাং পাহাড়িয়া খালী, থানা পেকুয়া, জেলা কক্সবাজার দ্বয়কে কক্সবাজার হতে গ্রেফতার করে।

মানব পাচারকারী চক্রটি বিদেশগামী অসহায় লোকদের উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখিয়ে প্রথমে ভিজিট ভিসায় দুবাই নিয়ে যায় এবং পরবর্তীতে লিবিয়ায় অবস্থানরত গ্রেফতারকৃত আরজু বেগমের স্বামী রেজাউল করিমের তত্ত্বাবধানে আটক করে মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্যে অন্য চক্রের নিকট হস্তান্তর করে।

এ চক্রটি ভিকটিমদের পরিবারের কাছে ইমোতে কল দিয়ে নির্যাতনের ভিডিও দেখিয়ে মুক্তিপণ দাবি করতো। মুক্তিপণ প্রদানের পর, ভিকটিমদের ঝুঁকিপূর্ণভাবে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে পাঠানো হতো। এই প্রক্রিয়ায় অনেক ভিকটিম সাগরে মৃত্যুবরণ করেছে, কিছু লোক উদ্ধার হয়েছে এবং অল্পসংখ্যক ভিকটিম ইউরোপে পৌঁছাতে পেরেছে।

মানব পাচারপূর্বক মুক্তিপণ আদায় সংক্রান্তে রুজুকৃত মাগুরা সদর থানার মামলা নং ২৭, তারিখ-২০/০৫/২৪ এর তদন্তকালে জানা যায় যে, ভিকটিম মো. নাছির হোসেন, পিতা মৃত জালাল উদ্দিন মোল্ল্যা, গ্রাম, আড়ুয়াকান্দি, মাগুড়া; বিগত ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখে তার চাচা ওমর আলীর মাধ্যমে ভারত ও দুবাই হয়ে লিবিয়া যান। সেখানে লিবিয়া প্রবাসী জনৈক মাহবুবুর রহমান ছদরুলের তত্ত্বাবধানে তিনি টাইলসের কাজ করতেন। চার মাস পূর্বে নাছিরকে লিবিয়ার অজ্ঞাত স্থানে মানব পাচারকারী চক্র কর্তৃক আটক করা হয়। মুক্তিপণের দাবিতে বাদীর কাছে ইমোতে কল করে ১৫ লক্ষ টাকা দাবি করা হয়। মুক্তিপণ প্রদানের জন্য ভিকটিমের পরিবারকে বিভিন্ন বিকাশ ও ব্যাংক একাউন্টে টাকা পাঠাতে বাধ্য করা হয়।

তদন্তে দেখা যায়, বাদশা মিয়া তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে একটি কারেন্ট একাউন্ট খুলে আরজু বেগমকে তা ব্যবহার করতে দেন। উক্ত একাউন্টে মোট ১২,৫০,৯১০ টাকা জমা হয় এবং ১০,৯৭,২৮৫ টাকা উত্তোলন করা হয়। বাদশা মিয়াকে কক্সবাজার জেলার পেকুয়া থানাধীন আবিদ স্টোর নামীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে গ্রেফতার করা হয়। তার প্রতিবেশী সম্পর্কীয় চাচাতো বোন আরজু বেগমের স্বামী রেজাউল করিম লিবিয়ায় মানব পাচারের সঙ্গে জড়িত বলে জানা যায়। আরজু বেগমকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।

গ্রেফতারকৃত বাদশা মিয়া এবং আরজু বেগম আদালতে আন্তর্জাতিক মানব পাচারকারী চক্রের সাথে সংযোগ থাকার কথা স্বীকার করেছেন এবং কাঃবিঃ আইনের ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছেন। সিআইডি’র মানব পাচার প্রতিরোধ শাখা এই ধরনের অপরাধমূলক কার্যক্রমের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত আছে।

যাযাদি/ এসএম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
X
Nagad

উপরে