নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে কোনো বিবৃতিতে সই না করার ঘোষণা দিয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহমেদ ভূঁইয়া রাষ্ট্রের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আনিসুল হক বলেন, ‘গণমাধ্যমের সঙ্গে ড. মোহাম্মদ ইউনুসের বিষয়ে কথা বলার আগে তাঁর (এমরান আহমেদ ভূঁইয়া) উচিত ছিল পদত্যাগ করা অথবা তার কর্তৃপক্ষ অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়া। কিন্তু, তিনি কোনোটাই করেননি। এটা শৃঙ্খলার পরিপন্থি।’
ডেপুটি অ্যাটর্নির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী বিষয়টি দেখবে অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়।’
এর আগে আইন মন্ত্রণালয়ের সলিসিটর উইং থেকে জানানো হয়, শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে বিবৃতিতে সই না করায় ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহমেদ ভূঁইয়াকে চাকরিচ্যুত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, ড. ইউনূসের পক্ষে ১০০ জন নোবেল বিজয়ীসহ ১৬০ জনেরও বেশি বিদেশি বিবৃতি দিয়েছেন। এই বিবৃতিদাতাদের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনও রয়েছেন। বিবৃতিতে তারা বলেছেন যে- ওনাকে বিচারিক হয়রানি করা হচ্ছে। সেটার বিপরীতে অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস থেকে প্রতিবাদ জানিয়ে একটি বিবৃতি দেওয়ার কথা রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘নোটিশ দেওয়া হয়েছে, অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে কর্মরত সবাইকে সেই বিবৃতিতে স্বাক্ষর করার জন্য। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এই বিবৃতিতে আমি স্বাক্ষর করব না।’
কেন স্বাক্ষর করবেন না জানতে চাইলে সাংবাদিকদের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘ইসরায়েলের অ্যাটর্নি জেনারেল ইসরায়েলের যে আইন সংস্কার হচ্ছে; বিচার সম্পর্কিত, তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন, এটা আমার নিজস্ব চিন্তা। সে রকমই।’
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আরও বলেন, ‘যে বিবৃতি দিয়েছেন ১৬০ জন নোবেল বিজয়ী এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন, আমি ওনাদের বিবৃতির সঙ্গে একমত।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি মনে করি, অধ্যাপক ড. ইউনূস একজন সম্মানিত ব্যক্তি। তার সম্মানহানি করা হচ্ছে এবং এটা বিচারিক হয়রানি।’
উল্লেখ, গত ২৭ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি সমর্থন জানিয়ে চিঠি লিখেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। তার একদিন পরই ১৬০ জন বিশ্বনেতার চিঠি নিয়ে আবারও আলোচনায় ড. ইউনূস ও আসন্ন নির্বাচন।
যাযাদি/ এসএম