ভারতের অস্কারজয়ী সুরকার এ আর রহমান এবং সায়রা বানুর বিবাহ বিচ্ছেদের কারণ হিসেবে তাদের আইনজীবী বন্দনা শাহ বলেছেন, ‘মানসিক চাপের’ কারণে তারা আলাদা হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিন্তু কেন তৈরি হয়েছে মানসিক চাপ তার কারণ অজানা। হয়তো অজানাই থেকে যাবে। কানাডার প্রেসিডেন্ট জাস্টিন ট্রুডো আর মার্গারেট সোফির বিবাহবিচ্ছেদের কারণ যেমন এখনও অজানা।
এক এক দম্পতির সম্পর্ক এক এক কারণে ভেঙে যায়। তবে দাম্পত্য সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার মূল কিছু কারণ রয়েছে। যেগুলো খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছে ‘অস্টিন ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অফ ফ্যামিলি অ্যান্ড কালচার’। এই কারণগুলোর মধ্যে উভয় পক্ষের ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ প্রধানতম দায়ী। এ ছাড়া একে অন্যের চাহিদার প্রতি যত্নশীল না থাকা, সঙ্গীর অপরিপক্কতা, মানসিক নির্যাতন এবং আর্থিক সমস্যার মতো কারণ রয়েছে।
কোনা দম্পতি যখন একজন আরেকজনের সঙ্গে মানিয়ে চলতে পারেন না, তখন মনে করেন বিবাহবিচ্ছেদ সম্ভবত সেরা বিকল্প। দম্পতি যখন মনে করে যে, তারা তাদের সম্পর্ককে সমস্ত কিছু দিয়ে দিয়েছে, নতুন করে আর কিছু দেওয়ার নেই তখনও বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্তে আসতে পারে।
যখন দম্পতিরা একে অপরের সাথে কথা বলা বন্ধ করে, তখন তারা বিচ্ছিন্ন এবং একাকী বোধ করতে পারে এবং একে অপরের যত্ন নেওয়া বন্ধ করে দেয়। এতে সম্পর্ক ভেঙে যেতে পারে। ৬৫% বিবাহবিচ্ছেদের সবচেয়ে বড় কারণ হল দুর্বল যোগাযোগ। এছাড়া সংসারের কাজকর্ম নিয়ে ঝগড়া করা এবং বাচ্চাদের নিয়ে অবিরাম তর্ক করা দাম্পত্য সম্পর্ক বিচ্ছেদের দিকে নিয়ে যায়।
বিবাহবিচ্ছেদের আরও যেসব কারণ রয়েছে
তথ্য গোপন: বিবাহবিচ্ছেদের জন্য যে যে কারণ উল্লেখ করা হয় তার একটি কারণ হচ্ছে সঙ্গী তথ্য গোপন করে। যেমন, তার হয়তো আগে একটি বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু সেই সম্পর্কের কথা গোপন করে দ্বিতীয়বার বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। জানাজানির পরে অন্যজন নিজেকে প্রতারিত মনে করেন এবং সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চান।
পারিবারিক সহিংসতা: জীবনে মানুষের নানামুখী চাপ বাড়ছে। এর প্রভাব পড়ছে পারিবারিক সম্পর্কেও। ফলে পারিবারিক সহিংসতা বাড়ছে। যা বিবাহবিচ্ছেদের অন্যতম কারণ।
সমঝোতা কমে যাওয়া: সমাজিবিদদের মতে, দাম্পত্য সম্পর্কে সমঝোতা কমে গেছে। শুধুমাত্র ঢাকা শহরে প্রতিদিন প্রায় ৪০টি বিবাহবিচ্ছেদের ঘটনা ঘটে। এতে পারিবারিক সংস্কৃতিতে বড় পরিবর্তন এসেছে। ব্রোকেন পরিবারের সংখ্যা বাড়ছে। শিশুরা বেড়ে উঠার যাত্রায় বাবাকে পেলে মাকে পাচ্ছে না, মাকে পেলে বাবাকে পাচ্ছে না।
সমাজবিজ্ঞানীরা বলছেন, দাম্পত্য সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে হলে সঙ্গীর প্রতি সহনশীল আচরণ করতে হবে। একে অন্যের প্রতি সহনশীল না হলে বিচ্ছেদ কমানো যাবে না। এ ছাড়া দাম্পত্য সম্পর্কে প্রতিনিয়ত ভালোবাসার পরিচর্যা থাকতে। সূত্র: ম্যারেজ.ডট কম অবলম্বনে
যাযাদি/ এস