২০০৮ সাল। হঠাৎই এক কাল্পনিক চরিত্রের প্রতি যৌন আকর্ষণ অনুভব করলেন জাপানি যুবক আকিহিকো কোন্দো। এর পর ১০ বছর পর্যন্ত সেই কাল্পনিক চরিত্রের সঙ্গে প্রেমপর্ব চলে তাঁর।
২০১৮ সালে সেই কাল্পনিক চরিত্র হাতসুনে মিকুর একটি হলোগ্রামের সঙ্গে বিয়েও করেছিলেন আকিহিকো। হাতসুনে আসলে জাপানের জনপ্রিয় কম্পিউটার গেমের এক পপ গায়িকা চরিত্র।
কিন্তু এ ভাবে কাল্পনিক চরিত্রের প্রতি যৌন আকর্ষণ অনুভব করা বা সেই চরিত্রের হলোগ্রামকে বিয়ে করার কথা কি কেউ কখনও শুনেছেন? এই ঘটনা কি আদৌ স্বাভাবিক?
বিজ্ঞানের ভাষায় আকিহিকোর এই বাসনা আসলে ‘ফিক্টোসেক্সুয়ালিটি’ নামে পরিচিত এবং আকিহিকো এক জন ‘ফিক্টোসেক্সুয়াল’ মানুষ।
ফিক্টোসেক্সুয়াল হলেন সেই ব্যক্তি, যিনি কোনও জনপ্রিয় কাল্পনিক চরিত্রের প্রতি একতরফা আকর্ষণ অনুভব করেন এবং মনে মনে সম্পর্কও গড়েন। সেই আকর্ষণ কখনও যৌন আকর্ষণও হতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘ফিক্টোসেক্সুয়াল’ মানুষদের এলজিবিটিকিউপ্লাস–এর অধীনে শ্রেণিবদ্ধ করা যায় না।
২০০৮ সালে কর্মক্ষেত্রে মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে কম্পিউটার গেমের কাল্পনিক পপ গায়িকা চরিত্র হাতসুনেকে মনে ধরে আকিহিকোর।
হাতসুনেকে দেখে তাঁর মধ্যে প্রেম এবং অনুপ্রেরণার সঞ্চার ঘটেছিল বলেও আকিহিকো জানান। যৌন আকর্ষণও অনুভব করেন।
এর পর ২০০৮ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত ‘চুটিয়ে প্রেম’ করেন আকিহিকো। ২০১৭ সালে প্রথম বারের মতো হাতসুনের সঙ্গে কথা বলতে সক্ষম হন তিনি।
‘গেটবক্স’ নামক মেশিনের সাহায্যে হাতসুনের সঙ্গে কথা বলেন আকিহিকো। গেটবক্স এমন এক মেশিন, যাতে হলোগ্রামের সঙ্গে কথা বলার প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়।
২০১৮ সালে হাতসুনের একটি হলোগ্রামকে বিয়েও করেন আকিহিকো। বিয়ের পর হাতসুনের সঙ্গে নিজের দাম্পত্য জীবনের কথা নেটমাধ্যমে জানিয়ে রাতারাতি তারকা হয়ে ওঠেন তিনি।
তবে বিয়ের চার বছর কাটতে না কাটতেই মোহ ভাঙে আকিহিকোর। চার বছর দাম্পত্য জীবন কাটিয়ে ২০২২ সালে নিজের কল্পিত স্ত্রীর সঙ্গে আর কথা বলতে পারছেন না বলে নিজেই জানিয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, ‘ফিক্টোসেক্সুয়ালিটি’ শব্দবন্ধটি পরিচিতি পায় ২০১০ সালের কাছাকাছি সময়ে। সমাজমাধ্যমের পাতায় খোঁজখবর নিলে বর্তমানে এই সংক্রান্ত বহু পেজ নজরে পড়বে। সেখানে বিষয়টি নিয়ে রীতিমতো চর্চা চলে।