দুধ বিক্রেতা থেকে সেনার লেফটেন্যান্ট!
প্রকাশ | ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৭:১৮
করিশ্মা ঠাকুর। হিমাচল প্রদেশের কোঠি গইরি গ্রামের বাসিন্দা। পাঁচ ভাইবোন এবং মাকে নিয়ে সংসার। পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে করিশ্মাই কনিষ্ঠ। বাবা ললিত শর্মার মৃত্যু হয়েছে ২০১৭ সালে।
চেষ্টা আর অদম্য মনোবল থাকলে যে অর্থাভাবকে উপেক্ষা করেও লক্ষ্যে পৌঁছনো যায়, এমন উদাহরণ দেশের কোনায় কোনায় ছড়িয়ে রয়েছে। সেই তালিকায় এ বার জুড়ে গেলেন হিমাচলের এ কন্যা। অর্থাভাবকে দূরে সরিয়ে আজ তিনি ভারতীয় সেনার লেফটেন্যান্ট। ডিসেম্বরেই ওই পদে যোগ দিতে চলেছেন তিনি।
বাবা মৃত্যুর পর, তার পরই শর্মা পরিবারের উপর নেমে আসে আর্থিক অনটনের পাহাড়। পাঁচ সন্তানকে মানুষ করার একা দায়িত্ব কাঁধে নেন করিশ্মার মা দ্রুমতী দেবী। সংসার এবং ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার খরচ চালাতে শুরু করেন গরুর দুধের ব্যবসা। পাশাপাশি, মনরেগা প্রকল্পের অধীনে কাজ করা শুরু করেন। পড়াশোনার পাশাপাশি, ব্যবসায় মাকে সহযোগিতা করতেন করিশ্মা এবং তাই অন্য ভাইবোনেরা।
করিশ্মা জানিয়েছেন, তাঁর মা দিনরাত খেটে তাঁদের পড়াশোনার খরচ চালিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘শৈশব থেকেই ইচ্ছা ছিল সেনাবাহিনীতে কাজ করব। কিন্তু আচমকা বাবার মৃত্যু হওয়ায় সব কিছু ওলটপালট হয়ে যায়। কিন্তু স্বপ্নকে হারিয়ে যেতে দিইনি।’’ স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে মান্ডির বল্লভ সরকারি কলেজ থেকে কলা বিভাগে স্নাতক পাশ করেন। যে হেতু করিশ্মার মধ্যে সৈনিক হওয়ার উদগ্র বাসনা ছিল, তাই কলেজে এনসিসিতে নিজের নাম নথিভুক্ত করান। সেখানেও সাফল্য পান। আর সেই সাফল্য সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার পথ সুগম করে। গ্রাম থেকে মান্ডিতে চলে এসেছিলেন করিশ্মা। সেখানেই সেনাবাহিনীর পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেন। গত এক বছর ধরে সেই প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি। সম্প্রতি ফল প্রকাশ হয়। আর সেখানে নিজের নাম দেখে আনন্দে কেঁদে ফেলেন তিনি।
তাঁর কথায়, ‘‘নিজের স্বপ্নকে কখনও মাটিতে মিশে যেতে দিইনি। অনটনের মধ্যেও স্বপ্নকে জিইয়ে রেখেছিলাম। আজ সেই স্বপ্ন পূরণ হল।’’ আগামী মাসে চেন্নাইয়ে অফিসার্স ট্রেনিং অ্যাকাডেমিতে যোগ দেবেন তিনি।
যাযাদি/ এম