মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১

গর্ভাবস্থায় যেভাবে সহবাস করবেন

যাযাদি ডেস্ক
  ২০ অক্টোবর ২০২৪, ২০:৩৫
আপডেট  : ২০ অক্টোবর ২০২৪, ২১:০০
ছবি: সংগৃহীত

গর্ভধারণের প্রথম তিন মাস এবং শেষের তিন মাসে সহবাস করলে গর্ভের সন্তানের ক্ষতি হতে পারে বলে অনেকে আশংকা করে থাকেন। তবে এই ধারণাটি সঠিক নয়। এমনটি বলেছেন, ডা. ইমা ইসলাম ও ডা. সামিয়া আফরিন এবং ডা. বিদিশা কুন্ডু প্রমা।

আপনার গর্ভাবস্থা যদি স্বাভাবিক হয় এবং যদি নির্দিষ্ট কোন স্বাস্থ্য জটিলতার জন্য ডাক্তার আপনাকে সহবাস থেকে বিরত থাকার পরামর্শ না দিয়ে থাকে, তাহলে আপনার জন্য গর্ভাবস্থায় সহবাস করা সম্পূর্ণ নিরাপদ ও ঝুঁকিমুক্ত। এতে গর্ভের সন্তানের কোন ধরনের আঘাত পাওয়ার বা ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

তবে গর্ভবতী অবস্থায় অনেকেরই সহবাসের ইচ্ছা কমে যায় বা ইচ্ছার পরিবর্তন হয়।

এমনটা হওয়া স্বাভাবিক। এটা নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। এমনটা হলে আপনার সঙ্গীর সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করুন। এই বিষয়ে আপনাদের নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ ও পারস্পরিক বোঝাপড়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আপনার গর্ভাবস্থা যদি স্বাভাবিক ও জটিলতামুক্ত হয়, তাহলে কেবলমাত্র সহবাসের কারণে গর্ভপাত (Miscarriage) বা সময়ের আগে সন্তান প্রসব হওয়ার (Early Labour) কোন সম্ভাবনা নেই। তবে গর্ভাবস্থার শেষের দিকে সহবাসের কারণে জরায়ুতে মৃদু সংকোচন অনুভব করতে পারেন।

এমনটা হলে আপনার জরায়ুর পেশীগুলো শক্ত হয়ে যাচ্ছে বা টান খাচ্ছে বলে মনে হবে। এ ধরনের সংকোচনকে ডাক্তারি ভাষায় “Braxton Hicks Contractions” বলা হয়। এতে আপনার কিছুটা অস্বস্তি বোধ হতে পারে, কিন্তু এটা সত্যিকার অর্থে প্রসব বেদনা নয়।

গর্ভাবস্থার শেষের দিকে সহবাস ছাড়াও অন্যান্য কারণে, এমনকি সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই মাঝে মাঝে এমনটা অনুভূত হতে পারে। এতে চিন্তার কোনো কারণ নেই, এটি গর্ভাবস্থার একটি স্বাভাবিক ঘটনা। এমনটা হলে আপনি কিছুক্ষণ শুয়ে বিশ্রাম নিতে পারেন, অথবা অন্য কোন বিষয়ে মনোযোগ দিয়ে রিল্যাক্সড থাকার চেষ্টা করতে পারেন। সাধারণত এসব মৃদু সংকোচন কিছুক্ষণ পরে নিজে থেকেই ঠিক হয়ে যায়।

গর্ভাবস্থায় কিছু ক্ষেত্রে সহবাস থেকে বিরত থাকতে পরামর্শ দেওয়া হয়, যেমন—

  • যদি গর্ভাবস্থায় কোন কারণে মাসিকের রাস্তা দিয়ে ভারী রক্তপাত হয়ে থাকে
  • যদি গর্ভবতীর জরায়ুমুখে (সারভিক্সে) কোন দুর্বলতা বা জটিলতা থাকে
  • যদি পূর্বের প্রেগন্যান্সিতে নির্ধারিত সময়ের আগেই সন্তান প্রসব হয়ে থাকে
  • যদি প্লাসেন্টা বা গর্ভফুল নিচে থাকা—ডাক্তারি ভাষায় একে ’প্লাসেন্টা প্রিভিয়া’ বলে
  • যদি প্রসবের আগে পানি ভাঙ্গে
  • যদি একই সময়ে দুই বা তার বেশি (জমজ) সন্তান ধারণ করে থাকেন

যেভাবে গর্ভাবস্থায় সহবাস করবেন:

যদিও অধিকাংশ দম্পতির জন্য গর্ভাবস্থায় সহবাস করা নিরাপদ, তবে সবসময় এটি সহজ নাও হতে পারে। গর্ভাবস্থায় স্বাভাবিক সময়ের মত সহবাস করতে কোন সমস্যা হলে বিভিন্নভাবে পজিশন বা অবস্থান পরিবর্তন করে চেষ্টা করে দেখতে পারেন। এক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রীর ব্যক্তিগত স্বাচ্ছন্দ্যের ব্যাপারটিই মুখ্য। তবে গর্ভাবস্থায় সহবাসের ফলে আপনি বা গর্ভের সন্তান যেন কোনোভাবে আঘাত না পান সে ব্যাপারে সবসময় সাবধান থাকা উচিত।

গর্ভাবস্থায় সহবাস করার সময় আপনার সঙ্গী উপরে অবস্থান করলে তা আপনার জন্য কিছুটা অস্বস্তিকর হতে পারে, যেহেতু এসময় আপনার পেট আকারে বাড়তে থাকে আর সেই সাথে স্তন ও শরীরের অন্যান্য অংশে এসময় ব্যথাও অনুভব হয়। এছাড়া গর্ভাবস্থায় সহবাসের সময় পুরুষাঙ্গ আপনার শরীরের বেশি গভীরে গেলেও এসময় অস্বস্তির কারণ হতে পারে৷ তাই এসব সমস্যা এড়াতে যেকোনো একদিকে কাত হয়ে শুয়ে সহবাসের চেষ্টা করে দেখতে পারেন।

এছাড়া আপনার সঙ্গীর পরিবর্তে আপনি উপরে অবস্থান করে বা আপনি সামনে আপনার সঙ্গী পেছনে অবস্থান করেও চেষ্টা করে দেখতে পারেন। হাতে বা হাঁটুতে ভর দেয়ার সময় বালিশ বা কুশন ব্যবহার করতে পারেন।

সূত্র: সহায়

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে