মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১

চিরুনি ও তেলের অভাবে চুল কেটে ফেলতে বাধ্য হচ্ছেন গাজার মেয়েরা

যাযাদি ডেস্ক
  ১৪ আগস্ট ২০২৪, ১২:৫১
আপডেট  : ১৪ আগস্ট ২০২৪, ১২:৫৩
ফিলিস্তিনি শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. লোবনা আল-আজাইজা। ছবি : রয়টার্স

লোবনা আল-আজাইজার একজন শিশু বিশেষজ্ঞ। ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় চিকিৎসা সেবা দিয়ে চলেছেন তিনি। একজন শিশু বিশেষজ্ঞ হলেও এখন তার কাছে সব বয়সের মানুষ চিকিৎসা নিতে আসেন। তার কাছে অনেক মেয়ে অভিযোগ করে বলেন, তাদের চুল আঁচড়ানোর মতো চিরুনি নেই। তাই বাধ্য হয়ে তাদের চুল কেটে ফেলার পরামর্শ দেন তিনি। খবর রয়টার্সের।

তবে আপাতদৃষ্টিতে চিরুনির অভাব বলে মনে হলেও টানা ১০ মাস ধরে ইসরায়েলি যুদ্ধ ও অবরোধের বিধ্বস্ত পুরো গাজা উপত্যকা। সেখানে ব্যাপক প্রাণহানির পাশাপাশি ভয়াবহ মানবিক সংকট বিরাজ করছে। ছোট্ট এই উপত্যকায় এখন শ্যাম্পু, সাবান, পিরিয়ড পণ্য বা বাড়িঘর পরিষ্কারের মতো জিনিস খুব কম বা নেই বললেই চলে।

গাজায় বর্জ্য সংগ্রহ ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থাও ভেঙে পড়েছে। তাই সেখানে কেন ছোঁয়াচে রোগ ছড়িয়ে পড়ছে তা সহজে বোঝা যায়।

ডা. লোবনা বলেন, বিগত সময়ে আমরা সবচেয়ে সাধারণ যে রোগ দেখেছি তা হলো চামড়ার ফুসকুড়ি ও চর্মরোগ। এর অনেক কারণ রয়েছে। যেমন শরণার্থীশিবিরে অনেক গাদাগাদি, তাঁবুর ভেতরে অসহনীয় গরম, শিশুদের অতিরিক্ত ঘাম হওয়া এবং গোসলের জন্য পর্যাপ্ত পানির অভাব।

বেইট লাহিয়ার কামাল আদওয়ান হাসপাতালে কাজ করতেন ডা. লোবনা। তবে ট্যাংকের মাধ্যমে ইসরায়েলি বাহিনী গাজাকে উত্তর ও দক্ষিণে ভাগ করলে তিনি সেখান থেকে চলে আসেন। এরপর গাজার বেশিরভাগ চিকিৎসকের মতো তিনিও চিকিৎসা দেয়া অব্যাহত রেখেছেন।

শুরুটা করেন শিশুদের দিয়ে। একটি তাঁবু কাটিয়ে ক্লিনিক তৈরি করেন। তবে এখন উদ্ভাস্তু সব বয়সী মানুষ তার কাছে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করেন।

গাজায় তেমন ওষুধপত্র পাওয়া যায় না। যা পাওয়া যায় তা সাধারণ মানুষ ক্রয় করতে পারেন না। কারণ সেগুলো তাদের নাগালের বাইরে। সাধারণ বার্ন মলমের একটি টিউব কিনতে ২০০ শেকেল বা ৫৩ ডলার গুণতে হয়।

রাফা সীমান্ত ক্রসিং ইসরায়েল দখলে নেয়ার পর পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়েছে। গাজাজুড়ে আন্তর্জাতিক ত্রাণসহায়তা বিতরণ নাটকীয়ভাবে কমে গেছে। এই কারণে সেখানে মানবিক সংকটের আরও অবনতি হয়েছে। যদিও ইসরায়েল এই জন্য জাতিসংঘ ও অন্যান্য দাতব্য সংস্থাগুলোকে দায়ী করছে।

গাজায় এত এত সমস্যা থাকলেও তাৎক্ষণিক সমাধান নিয়ে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই ডা.লোবনার। তিনি বলেন, সীমান্ত ক্রসিংটি অবশ্যই খুলে দিতে হবে যাতে আমরা ওষুধ আনতে পারি। কারণ বর্তমানের বেশিরভাগ ওষুধই অকার্যকর।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে