ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় বহাল

বিচারপতিদের অপসারণ ক্ষমতা ফিরল জুডিশিয়াল কাউন্সিলে

প্রকাশ | ২০ অক্টোবর ২০২৪, ১২:১২ | আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০২৪, ১২:১৮

যাযাদি ডেস্ক
ফাইল ছবি

বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদ সদস্যদের হাতে এনে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে দেওয়া আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন নিষ্পত্তি করেছেন আপিল বিভাগ। ফলে এখন থেকে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলের হাতে থাকবে।

এ সংক্রান্ত রিভিউ আবেদন নিষ্পত্তি করে রোববার (২০ অক্টোবর) সকালে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে রিভিউ আবেদন শুনানির জন্য উপস্থাপন করেন রিটকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। তিনি আদালতে বলেন, ‘অনেকদিন ধরে ষোড়শ সংশোধনীর রিভিউ আবেদন শুনানির জন্য আপিল বিভাগে রয়েছে। শুনানি হওয়া প্রয়োজন।’ পরে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান শুনানিতে অংশ নেন।

উল্লেখ্য, ১৯৭২ সালে মূল সংবিধানে বিচারপতি অপসারণ সংক্রান্ত ক্ষমতা জাতীয় সংসদের হাতে ছিল। ৭৫ সালে এই ক্ষমতা সংসদের কাছ থেকে সরিয়ে চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে দেওয়া হয় রাষ্ট্রপতির কাছে। জিয়াউর রহমানের আমলে পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে যুক্ত করা হয় সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পদ্ধতি। কাউন্সিলের মাধ্যমের বিচারপতিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হতো।

২০১৪ সালে আবারও এ ক্ষমতা জাতীয় সংসদের হাতে ফিরিয়ে নেয় তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। ওই বছরই এই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট হয়। হাইকোর্ট সেই সংশোধনী বেআইনি ঘোষণা করেন।

আওয়ামী লীগ সরকার আপিল করলেও সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ আপিল খারিজ করে হাইকোর্টের রায় বহাল রাখেন। ফলে পুনরুজ্জীবিত হয় সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল। এই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে রিভিউ পিটিশন দাখিল করে তখনকার সরকার। ওই রিভিউ পিটিশন গত আট বছরেও শুনানির উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট পতন হয় আওয়ামী লীগ সরকারের। পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উচ্চ আদালতের বেশ কয়েক জন বিচারপতির বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অসদাচরণের অভিযোগ ওঠায় তার তদন্ত ও ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো সুযোগ ছিল না। ফলে রিভিউ নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেয় বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

যাযাদি/ এসএম