সাবেক সাংসদ নুরুল ইসলাম মনি'র উপর হামলার ঘটনায় মামলা 

প্রকাশ | ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৪৭

পাথরঘাটা‌ (বরগুনা) প্রতিনিধি
মামলার আসামি সাবেক এমপি রিমনে

২০২২ সালে সেপ্টেম্বরের চার তারিখে বরগুনা-২ আসনের বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য ও বর্তমান বিএনপির নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম মনি বাবা মায়ের কবর জিয়ারত করতে নিজ এলাকা পাথরঘাটায় প্রবেশের সময় আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের হামলার শিকার হন। এতে তিনি সহ বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মী আহত হন। এসময় অন্তত দশটি মটর সাইকেলে অগ্নিসংযোগ ও শতাধিক মটর সাইকেল ভাংচুর করে ও অর্ধ শতাধিক মটরসাইকেল নিয়ে যায় আ'লীগের নেতারা।

এ ঘটনার জেরে গতকাল  বৃহস্পতিবার (৩/১০/২০২৪) পাথরঘাটা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শান্তনু কুমার মন্ডলের আদালতে মামলা দায়ের করেন নুরুল ইসলাম মনির বড় ভাইয়ের ছেলে সোলায়মান।

এতে বরগুনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শওকত হাসানুর রহমান রিমন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রিপন, সদ্য সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এনামুল হোসেন ও বর্তমান ও সাবেক ৯ ইউপি চেয়ারম্যান সহ ১০৫ জনে নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয়েছে। এছাড়াও ২'শ থেকে ৩'শ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাথরঘাটা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বেঞ্চ সহকারী মোহাম্মদ মোহাম্মদ মুবিন।

এর আগে একই ঘটনার জেরে পাথরঘাটা উপজেলা বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের ৯৯ জনকে আসামী করে  মিথ্যা মামলা করেছিলেন কাকচিড়ার ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আলাউদ্দীন পল্টু। এতে আরো অজ্ঞাত আড়াইশ থেকে তিনশনকে অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছিল।

মামলার আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইফরাত আহসান ইপু জানান, বাদী সোলায়মানের আপন চাচা নুরুল ইসলাম মনি বরগুনা-২ আসনের ৩ বারের নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য ছিলেন। বর্তমানে তিনি বিএনপির নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান। তিনি ঢাকায় অবস্থান করে ব্যবসা বানিজ্য পরিচালনা ও রাজনৈতিক করেন। সে সংসদ সদস্য থাকাকালীন সময় পাথরঘাটা সহ বরগুনার সকল মানুষের জনপ্রিয় প্রতিনিধি হওয়ায় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের লোকজন পূর্ব থেকেই খুন করে দুনিয়া থেকে শেষ করার পরিকল্পনা করছিল। ২০২২ সালের ৪ সেপ্টেম্বর রবিবার বিকাল ৪টার দিকে বাদীর চাচা তার বাবা-মায়ের কবর জিয়ারত করার জন্য ঢাকা থেকে বাড়ীতে আসে। এসময় বাদী সহ কয়েক শত মানুষ তাকে এগিয়ে নেয়ার জন্য পাথরঘাটা মঠবাড়িয়া আঞ্চলিক সড়কের সিএন্ডবি এলাকায় আসলে তত্কালীন এমপি ও আ'লীগের নেতারা তাদের উপর হামলা চালায়। এতে বাদীর চাচা নুরুল ইসলাম মনি সহ শতাধিক বিএনপির নেতাকর্মীরা আহত হন। 

ঘটনার সময় গুরুত্বর আহত পাথরঘাটা পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল মামুন কাজী জানান, রাজনৈতিক ক্ষমতার দাপটে আ'লীগ এলাকায় সমাজ বিরোধী, রাষ্ট্রদ্রোহী, নারী-নির্যাতন ও অবৈধ ভাবে ভূমি দখল করে নিরীহ মানুষকে নিঃস্ব করেছে। উপজেলা ব্যাপি তারা সব সময় ত্রাস সৃষ্টি করে রাখতো। আমার উপর অন্তত পাঁচ বার হামলা করে রক্তাক্ত করেছে। আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে লোহার পাত বসানো রয়েছে। তারাই আমাদের উপর হামলা করে উল্টো মিথ্যা মামলা দিয়ে বছরের পর বছর জেল খাটিয়েছে। এবার বিলম্বে হলেও স্বৈরাচারী সরকারের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করার সুযোগ হয়েছে।

পাথরঘাটা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বেঞ্চ সহকারী মোহাম্মদ মুবিন দৈনিক যায়যায়দিন কে জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে ১০৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত দুই থেকে তিন'শ কে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে মামলার এফআইআর গ্রহণের জন্য পাথরঘাটা থানার ওসিকে আদালত থেকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

যাযাদি/ এস