বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১

শাহরিয়ার, মোজাম্মেল ও শ্যামলের আকুতি শুনে রিমান্ড মঞ্জুর  

যাযাদি ডেস্ক
  ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪:৪৮
ছবি : যায়যায়দিন

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গুলিতে গৃহকর্মী লিজা আক্তারকে হত্যার অভিযোগে রমনা মডেল থানায় দায়ের করা মামলায় একাত্তর টেলিভিশনের সিইও মোজাম্মেল হক বাবু ও একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির উপদেষ্টামণ্ডলীর সভাপতি শাহরিয়ার কবিরের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। অন্যদিকে, ছাত্র আন্দোলনকালে গুলি করে যুবক ফজলুকে হত্যার অভিযোগে ভাষানটেক থানায় করা মামলায় ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্তের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. ছানাউল্ল্যাহের আদালত শুনানি শেষে তাদেরকে রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন। এদিন তাদের প্রত্যেকের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে পুলিশ।

সকাল ৯টার দিকে ওই তিনজনকে আদালতে হাজির করা হয়। তাদের ঢাকার সিএমএম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। ৯টা ৪০ মিনিটের দিকে তাদের এজলাসে তোলা হয়। এ সময় আইনজীবীরা তাদের উদ্দেশে কটূক্তি করতে থাকেন।

আইনজীবীরা বলেন, মুরগি বাবা, মুরগি খাবা? শাপলা চত্বরের খুনি। শ্যামল দত্ত দালালি করছে। মোজাম্মেল বাবু কই? এরা সাংবাদিক, তবে বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না।

এ সময় একজন সিনিয়র আইনজীবী এসব কথা বলতে বারণ করেন। এতে তোপের মুখে পড়েন তিনি। অন্য আইনজীবীরা বলেন, ওদের দালালি করবেন না। দালালির দিন শেষ। শাহরিয়ার কবির শাহবাগের নাস্তিক। আলেম, মসজিদ, মাদ্রাসার বিরুদ্ধে সব কথা বলেন।

১০টার কিছু আগে আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথমে মোজাম্মেল বাবু ও শাহরিয়ার কবিরের রিমান্ডের বিষয়ে শুনানি হয়। রাষ্ট্রপক্ষ রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করে। বিএনপিপন্থি আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকীও রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন।

পরে আদালত জানতে চান, তারা কিছু বলবেন কি না? শাহরিয়ার কবির বলেন, আমি অসুস্থ, হাঁটতে পারি না। হুইল চেয়ার ছাড়া আমি চলতে পারি না। আমি শতাধিক বই লিখেছি। কোথাও দেখতে পাবেন না যে, ইসলামের বিরুদ্ধে কিছু বলেছি। রিমান্ড দিবেন বা না দিবেন, আপনার ইচ্ছা।

এর পর মোজাম্মেল বাবু কথা বলতে চাইলে আইনজীবীদের তোপের মুখে পড়েন। পরে হাতজোড় করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন তিনি। মোজাম্মেল বাবু বলেন, আমার জয় বাংলা, জয় হিন্দ বক্তব্য ম্যানিপুলেট করা হয়েছে। আমি ক্যানসারে আক্রান্ত।

এর পর শ্যামল দত্তের রিমান্ডের বিষয়ে শুনানি হয়। শ্যামল দত্ত আদালতকে বলেন, আমি পেশাদার সাংবাদিক। ৩৭ বছর সাংবাদিকতা করেছি। ৩৩ বছর একই হাউজে আছি। আমি কোনো দিন সরকারের সুবিধা নিইনি। কোনো প্লট নিইনি, টিভি নিইনি।

আমি জাতীয় প্রেস ক্লাবের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক। সম্পাদক পরিষদের ভাইস প্রেসিডেন্ট। ঘটনার সময় আমি ঢাকাতে ছিলাম না। সরকারের নির্দেশনা আছে, যাচাই-বাছাই না করে যেন সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার করা না হয়। তারপরও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

পরে আদালত তাদের প্রত্যেককে সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে