যশোরের কেশবপুরে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে ছুরিকাঘাতে হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড ও একলাখ টাকা অর্থদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সাথে রায়ে হত্যাকাণ্ডের শিকার গৃহবধূর শ্বশুর ও শাশুড়িকে খালাশ প্রদান করেছেন বিচারক।

রোববার বিকালে যশোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক গোলাম কবির (জেলা ও দায়রা জজ) এ রায় প্রদান করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর পিপি সেতারা খাতুন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আনিসুর রহমান ওরফে সাগর কেশবপুর উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামের মোস্তফা দপ্তরি ও নাছিমা বেগম দম্পতির ছেলে।

হত্যাকাণ্ডের শিকার আনিসুর রহমান ওরফে সাগরের স্ত্রী মেরিনা খাতুন একই উপজেলার গড়ভাঙ্গা গ্রামের আবুল কালাম আজাদের মেয়ে।

মামলার বিবরণ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, আনিসুর ও মেরিনার মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। ২০১৯ সালের ২৬ অক্টোবর তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় আনিসুরকে নগদ চার লাখ টাকা দেয় মেরিনার পরিবার। এর কয়েকদিনের মাথায় ফের দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে আনিসুর ও তার পরিবারের সদস্যরা। টাকা না দেয়ায় মেরিনাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকে। একপর্যায়ে ২০২২ সালের ৩ মে ঈদুল ফিতরের দিন বিকেলে আনিসুর নেশা করে বাড়িতে ফেরে। এসে ওই দুই লাখ টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে। টাকা না দেয়ায় মেরিনাকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে গুরুতর জখম করে। গুরুতর অবস্থায় তাকে নেয়া হয় কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সে।

সাধন ৭ দিন, সমীর ৩ দিনের রিমান্ডে

অবস্থার অবনতি হলে মেরিনাকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় আটদিন পর ১১ মে দুপুরে মারা যান মেরিনা। এরপরই পালিয়ে যান স্বামী আনিসুর। এদিকে, এ ঘটনায় নিহতের বাবা উপরে উল্লিখিত তিন আসামি এবং আনিসুরের খালাতো ভাই পাজিয়া গ্রামের আল আমিন ও আনিসুরের চাচা সাহেব আলীসহ পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলার পর আনিসুর আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। এ মামলাটি তদন্ত করে কেশবপুর থানার এসআই লিখন কুমার সরকার চারজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন। একই সাথে আলআমিনকে অব্যাহতির আবেদন জানান। বিচারক চার্জগঠনের সময় এ মামলার দুই আসামি সাহেব আলী ও আল আমিনকে অব্যাহতি প্রদান করেন। মামলার দীর্ঘ শুনানি শেষে রোববার বিচারক আসামিদের উপস্থিতিতে আনিসুরকে ফাঁসির আদেশ ও তার বাবা-মাকে খালাশ প্রদান করেন।

যাযাদি/ এস