পুরুষ ও নারীর কাফনের কাপড়ে যে পার্থক্য
প্রকাশ | ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৮:৪৭
মহিলা ও পুরুষের কাফনের কাপড়ের সংখ্যাগত পার্থক্যের ব্যাপারে কোন সহীহ হাদীস পাওয়া যায় না। অতএব, মহিলাদের কাফনও পুরুষদের মতোই। তবে মহিলাদের পাঁচ কাপড়ের কাফনের ব্যাপারে যে হাদীসটি বর্ণনা করা হয়, সেটি যয়ীফ। তদনুরূপ সাত কাপড়ের হাদীসও যয়ীফ অর্থাৎ দুর্বল।
তবে যারা এ হাদীসটিকে হাসান মনে করেন তাঁরা পাঁচ কাপড় নিমরূপে দেন: কাফনদাতা দুটি লেফাফা সমান মাপে কাটবে। ১টি কামীস এমন মাপে কাটবে; যাতে লাশের কাঁধ থেকে পায়ের গাঁট পর্যন্ত ঢাকা হয়। ডাবল ভাঁজের কাপড় নিয়ে ভঁজের মাঝখানে গোল করে কেটে মাথা প্রবেশ করার মতো জায়গা করে নেবে।
ইজার বা লুঙ্গী এমন মাপে কাটবে; যেন লাশের বগল থেকে নিয়ে পা পর্যন্ত আবৃত হয়। খিমার বা ওড়না ৯০ বর্গ সেঃ মিঃ হওয়া বাঞ্ছনীয়। লেফাফা দুটিকে উপরি বিছাবে। কামীসের পিঠের দিকটা বিছিয়ে বুকের দিকটা মাথার দিকে গুটিয়ে রাখবে। এরপর লুঙ্গির কাপড় বিছাবে। ওড়না রাখবে পাশে। লেঙ্গটের প্রয়োজন হলে লুঙ্গির উপর দেবে।
ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী পুরুষের সুন্নত কাফন হলো— কামিস (জামা), ইজার (লুঙ্গি) ও লেফাফা (চাদর)। (মুসলিম, হাদিস : ১৫৬৫) পুরুষের কেফায়া কাফন হলো, ইজার ও লেফাফা। এর চেয়ে কম করা মাকরুহ। (বুখারি, হাদিস : ১১৮৬)
আর পুরুষের জন্য প্রয়োজনীয় কাফন হলো, প্রয়োজনের ক্ষেত্রে যে পরিমাণ কাফন পাওয়া যায়, সেটা শুধু সতর ঢাকা পরিমাণই হোক না কেন। (বুখারি, হাদিস : ১১৯৭)
ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী নারীদের সুন্নত কাফন হলো লেফাফা, ইজার, কামিস, ওড়না ও সিনাবন্ধ (বক্ষবন্ধনী)। (আবু দাউদ, হাদিস : ২৭৪৫)
নারীদের কেফায়া কাফন হলো, ইজার, লেফাফা ও ওড়না। (হেদায়া : ১/৮৯) নারীদের জরুরি কাফন হলো, প্রয়োজনের সময় যতটুকু পাওয়া যায়। উত্তম হলো সিনাবন্ধ সিনা থেকে রান পর্যন্ত হওয়া। (বুখারি, হাদিস : ১১৯৭)
পুরুষকে কাফন পরানোর নিয়ম: প্রথমে লেফাফা রাখা, তারপর লেফাফার ওপর ইজার রাখা। অতঃপর কামিস রাখা। এরপর মৃতকে এর ওপর রেখে প্রথমে কামিস পরানো। অতঃপর ইজারকে বাঁ দিক থেকে চড়ানো। এরপর ডান দিক থেকে চড়ানো। এরপর বাঁ দিক থেকে লেফাফা মুড়ে দেওয়া, তারপর ডান দিক থেকে লেফাফা মোড়ানো। উভয় দিক থেকে কাফনকে বেঁধে দেওয়া, যাতে কাফন এলোমেলো না হয়ে যায়। (আবু দাউদ, হাদিস : ২৭৪৫)
নারীদের কাফন পরানোর নিয়ম: প্রথমে লেফাফা বিছানো। লেফাফার ওপর ইজার, তার ওপর কামিস বিছানো। প্রথমে কামিস পরানো। চুলগুচ্ছকে দুই ভাগ করে সিনার দুই পাশে কামিসের ওপর রেখে দেওয়া। এরপর ওড়না মাথার ওপর রাখা। ওড়না পেঁচানোও যাবে না, বাঁধাও যাবে না। বরং শুধু রেখে দিতে হবে। এরপর ইজারকে প্রথমে বাঁ দিক থেকে, তারপর ডান দিক থেকে পেঁচিয়ে সিনার দিক থেকে বেঁধে দেওয়া। অতঃপর লেফাফা পেঁচিয়ে দেওয়া। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা : ৩/২৫২)
যাযাদি/ এম