‘হাসিনা ও তার সঙ্গীসাথীদের দেখলে মনে হয় সূরা লাহাবের কথা’

সাইয়েদ আব্দুল্লাহর পোস্ট, শেয়ার করলেন হাসনাত

প্রকাশ | ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩১

যাযাদি ডেস্ক
সাইয়েদ আব্দুল্লাহ ও হাসনাত আব্দুল্লাহ। ছবি: সংগৃহীত

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার দলীয় সঙ্গীসাথীদের অনুশোচনাহীন কর্মকাণ্ডকে পবিত্র কোরআন শরীফের সূরা লাহাবে বর্ণিত ঘটনার সঙ্গে তুলনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আইন বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী সাইয়েদ আবদুল্লাহ।

গতকাল শুক্রবার দিবাগত মধ্যরাতে সাইয়েদ আব্দুল্লাহ তার ফেসবুক আইডিতে একটি পোস্ট করেন। পবিত্র কোরআন শরীফে অন্তর্ভুক্ত সূরা লাহাবের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি পোস্টে উল্লেখ করেন, ‘স্বৈরাচারী হাসিনা ও তার সঙ্গীসাথীদের দেখলে মনে হয় সূরা লাহাবের কথা।’

সেই পোস্টটি আজ শনিবার সকালে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক আইডিতে শেয়ার করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। 

তিনি মূল পোস্টদাতার ক্রেডিট দিয়ে পুরো লেখাটি নিজ টাইমলাইনে হুবহু তুলে দিয়েছেন। সেই সঙ্গে কমেন্ট বক্সে পোস্টদাতাকে ট্যাগ করে লিখেছেন ‘লেখা- বন্ধু সাইয়েদ আব্দুল্লাহ’।

পাঠকদের জন্য পোস্টের পুরো লেখাটি হুবহু তুলে ধরা হলো-

‘পবিত্র কোরআনের সূরা লাহাব আমি যতবার পড়েছি, ততবারই যেই ব্যাপারটা আমার মাথায় আসে— আবু লাহাবের প্রতি স্বয়ং আল্লাহ কেন এমন কঠোর অবস্থানে চলে গেলেন যে তার শাস্তির ব্যাপারে কোরআনে একেবারে ওইভাবে সুস্পষ্টভাবে ঘোষণা দিয়ে বলে দিলেন?

“ধ্বংস হোক আবু লাহাবের দুই হাত এবং সে নিজেও!"

শুধু আবু লাহাবই না, তার ইন্ধনদাতা স্ত্রীর প্রতিও কঠোর শাস্তির বর্ণনা কেন এভাবে ঘোষণা করে দিলেন?

আল্লাহ একদিকে যেমন মহাপরিক্রমশালী কঠোর বিচারক, অন্যদিকে উনি তো পরম ক্ষমাশীল-ও। বহুক্ষেত্রে অসম্ভব রকমের ক্ষমাশীলতা উনি দেখানোর ব্যাপারে বলেছেন। ইনফ্যাক্ট, উনি ক্ষমাশীল না হলে একটা সিঙ্গেল প্রাণীও কোনদিন কোন রহমতের আশ্রয় পেতো না বা পাবেও না।

কিন্তু সেই স্রষ্টাই কেন তাহলে আবু লাহাবের প্রতি সরাসরি এভাবে এত কঠোর ঘোষণা দিলেন?

এই ব্যাপারে আমার জানার ভুল থাকতে পারে বা বুঝবার সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে, তবে আমার একেবারেই পার্সোনাল আন্ডারস্ট্যান্ডিং হলো—

সব অপরাধ বা পাপের ক্ষমা হয় না। বিশেষ করে যেখানে প্রচণ্ড সীমালঙ্ঘন করার পরও ওই অপরাধীর মনে কোন অনুশোচনাবোধ বা অনুতপ্তবোধ জন্ম না নেয়।

সত্যি করে বলেন তো, আশেপাশে এমন কোন আওয়ামী লিগার দেখেছেন যারা অনুতপ্ত? জুলাই গণঅভ্যুত্থানে দুই হাজার মানুষ মেরে ফেলা, পঁচিশ হাজার মানুষকে চিরতরে মারাত্মক আহত করে ফেলা নিয়ে ন্যূনতম কোন অনুশোচনা? বিগত ১৫ বছরে ওরা যে হাজার হাজার মানুষকে মেরে ফেলেছে, গুম, নিপীড়ন, লুটপাট চালিয়েছে—এগুলো নিয়ে ওদের ভেতর ন্যূনতম অনুশোচনা দেখেছেন?

বরং ওরা প্রতিশোধ নিতে চায় সুযোগ পেলেই। সুযোগ পেলেই তাদের অরিজিনাল রূপটা বের করে ফেলতে চায়। এরা হলো এই লেভেলের অমানুষ!

ক্ষমা করা যায় তাদেরকে, যাদের ভেতর অনুশোচনাবোধ জাগ্রত হয়, যারা অনুতপ্ত হয়। কিন্তু যারা নিজেদের চরম অপরাধের পরও ন্যূনতম অনুতপ্ত না, এমন অমানুষদের ক্ষমা করার মানে হলো অন্যদের প্রতি অবিচার করা এবং সামনে ওদের জন্য অপরাধ করার দুয়ার উন্মুক্ত রাখা। এজন্যই আমি এদের বিচার চাই, কঠোর বিচার চাই।

স্বৈরাচারী হাসিনা ও তার সঙ্গীসাথী এবং তাদের সকল ইন্ধনদাতাদের দেখলে তাই আমার মনে হয় সূরা লাহাবের কথা।

অতিরিক্ত সুশীলগিরি দেখিয়ে কেউ কেউ দেখি নরম সুরে কথা বলার চেষ্টা করে সুযোগ পেলেই। কিন্তু সবাই যে ক্ষমার যোগ্য না, এই শিক্ষাটাও কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ, ইনফ্যাক্ট মহাগুরুত্বপূর্ণ!’

যাযাদি/ এস