রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসম্মেলনের পর টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমার ময়দানে নিরাপত্তা জোরদার করেছে তাবলিগের জুবায়েরপন্থিরা। আগে থেকেই ইজতেমা ময়দান তাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল।
মঙ্গলবার বিকালে টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে গিয়ে দেখা যায়, মূল ফটক বন্ধ রেখে জুবায়েরপন্থিরা পাহারা দিচ্ছেন। মূল ফটকে আগে থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে দেখা গেছে তাদের।
বিশ্ব ইজতেমা ময়দানের প্রধান ফটকে বিদেশী মেহমানদের গেটের নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন মো. এরফান আলী (৭০), মোবারক হোসেন (৭০), মাহবুবুর রহমান (৫৭) ও খোকন মিয়া (৪৬)। তারা বলেন, ময়দানে কোন ঝামেলা নেই, পরিবেশ সুন্দর।
জুবায়েরপন্থি মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লা রায়হান বলেন, সমসাময়িক দিক বিবেচনা করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে।
টঙ্গী পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইস্কান্দার হাবিবুর রহমান বলেন, নিরাপত্তার কোন ঝুঁকি নেই। পুলিশ সজাগ ও সচেতন আছে।
এদিকে সামগ্রিক বিষয়ে অবস্থান জানাতে বুধবার সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করবেন সাদপন্থি আলেমরা। হক্কানী উলামা মাশায়েখ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুফতি শফিউল্লাহ শাফী মাক্কী ও সাধারণ সাথীদের পক্ষে তৌহিদুল হক সোহেল স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
এর আগে সোমবার তাবলিগের দুই পক্ষকে নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি আলোচনা সভার আয়োজন করে সরকার। তবে এ আলোচনায় মাওলানা সাদ কান্ধলভির অনুসারীরা অংশগ্রহণ করলেও মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা অংশ নেননি।
মন্ত্রণালয়ে বৈঠক শেষে সাদ অনুসারী মাওলানা মুয়াজ বিন নূর বলেন, আমরা টানা সাত বছর ইজতেমার মাঠসহ বিভিন্ন বিষয়ে বঞ্চিত হচ্ছি। যারা আমাদের এতদিন বাধা দিয়ে আসছেন তাদেরকে (মাওলানা জুবায়ের অনুসারী দল) মন্ত্রণালয় থেকে দাওয়াত দেওয়া হলেও তারা আসেননি। তারা বাংলাদেশে এই বৈষম্য সৃষ্টি করে রেখেছে। এই না আসার মধ্যে দিয়ে তারা সরকারকে অবজ্ঞা করেছে। তারা বুঝাতে চেয়েছে তারা যা ইচ্ছা তাই করবে।
অন্যদিকে মঙ্গলবার ঢাকার সমাবেশে জুবায়েরপন্থিদের পক্ষ থেকে বলা হয়, তাবলিগ জামায়াতের ইজতেমাকে কেন্দ্র করে যদি মাওলানা সাদ ও তার অনুসারীদের এদেশে আসতে দেওয়া হয়, তাহলে এই সরকারকেই দেশ ছেড়ে পালাতে হবে।
প্রসঙ্গত, আগামী বিশ্ব ইজতেমা দুই ধাপে অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম ধাপে ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এবং দ্বিতীয় পর্ব ৭ থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। সোমবার (৪ নভেম্বর) সচিবালয়ের সম্মেলনকক্ষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এ তথ্য জানান।
ইজতেমা নির্বিঘ্ন করতে তাবলিগের দুই পক্ষকে নিয়ে বৈঠকের কথা ছিল। তবে বৈঠকে মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা অংশ নিলেও মাওলানা জুবায়েরের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন না। তা ছাড়া কোন পক্ষ আগে ও কোন পক্ষ পরে করবে তা-ও এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
এমন আবহে মঙ্গলবার ঢাকায় সমাবেশ করে জুবায়েরপন্থিরা প্রতিপক্ষ সাদপন্থিদের প্রতিরোধে হুশিয়ারি দেয়। এর প্রতিবাদে সাদপন্থিরা বুধবার সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছে।
যাযাদি/ এস