ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে উচ্চশিক্ষা নিতে আসা কাশ্মীরি শিক্ষার্থীরা আজ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। শিক্ষার্থীরা আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন এবং কীভাবে তারা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। জিও নিউজ।
কাশ্মীরের পাহালগামে হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হন। এই ঘটনার পর, ভারতের বিভিন্ন স্থানে বসবাসরত কাশ্মীরি মুসলিমদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। দেহরাদুনে হিন্দু রক্ষা দলের নেতা ললিত শর্মা একটি ভিডিও বার্তায় কাশ্মীরি মুসলিমদের সকাল ১০টার মধ্যে উত্তরাখণ্ড ছাড়ার হুমকি দেন। এই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর, ছয়জন কাশ্মীরি শিক্ষার্থী গভীর রাতে তাদের হোস্টেল ছেড়ে পালিয়ে যান এবং দেহরাদুনের জলি গ্রান্ট বিমানবন্দরে আশ্রয় নেন। "
এই হুমকি শুধু দেহরাদুনেই সীমাবদ্ধ ছিল না। উত্তরপ্রদেশ, পাঞ্জাব, হরিয়ানা এবং দিল্লির এনসিআর এলাকায় কাশ্মীরি শিক্ষার্থীরা হয়রানি, হুমকি এবং এমনকি বাসা থেকে উচ্ছেদের মুখোমুখি হন। অনেক শিক্ষার্থী জানান, তাদের পরিচিতরাও তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছেন। এই পরিস্থিতিতে, অনেকেই নিরাপত্তার জন্য বিমানবন্দরে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন। "
এই পরিস্থিতিতে কিছু সহানুভূতিশীল মানুষ এগিয়ে এসেছেন। বেঙ্গালুরুর এক ব্যক্তি কাশ্মীরি শিক্ষার্থীদের তার বাড়িতে আশ্রয় দেওয়ার প্রস্তাব দেন, যা সামাজিক মাধ্যমে প্রশংসিত হয়। তবে, সামগ্রিকভাবে কাশ্মীরি শিক্ষার্থীরা আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন এবং তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন।"
জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ জানান, যেসব রাজ্যে কাশ্মীরি শিক্ষার্থীদের হুমকি বা তাদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে, সেসব রাজ্যের কর্মকর্তাদের সঙ্গে তার সরকার যোগাযোগ রাখছে। এ বিষয়ে তিনি বিস্তারিত আর কিছু বলেননি।
ওমর আবদুল্লাহর দল ন্যাশনাল কনফারেন্সের (এনসি) একজন মুখপাত্র জানান, বেশ কিছু ভিডিওতে দেখা গেছে, বিভিন্ন কলেজে ও জায়গায় কাশ্মীরি শিক্ষার্থীদের হয়রানি করা হচ্ছে। এসব ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়ে পড়েছে।
আবদুল্লাহর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ও সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি জানান, তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে কথা বলে যেসব জায়গা থেকে এ ধরনের অভিযোগ এসেছে, সেখানে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার অনুরোধ জানিয়েছেন।
জম্মু ও কাশ্মীর স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান নাসির খুইহামি একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন। সেখানে দেখা যায়, উত্তরাখন্ড রাজ্যে উগ্র হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠী কাশ্মীরি মুসলিম শিক্ষার্থীদের রাজ্য ছেড়ে যেতে হুমকি দিচ্ছে। না হলে তাদের শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হবে বলে ভয় দেখানো হয়।
যাযাদি/ এম