বাল্টিক সাগরের তলদেশ ডেনমার্ক থেকে জার্মানি পর্যন্ত নির্মিত হচ্ছে রেকর্ড-ব্রেকিং টানেল
প্রকাশ | ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১৪:৪৯

ইউরোপের দেশ ডেনমার্ক এবং জার্মানির মধ্যে একটি রেকর্ড-ব্রেকিং টানেল তৈরি করা হচ্ছে।
বাল্টিক সাগরের তলদেশে তৈরি হতে যাওয়া এই টানেলটি ভ্রমণের সময় কমিয়ে দেবে এবং ইউরোপের বাকি অংশের সাথে স্ক্যান্ডিনেভিয়ার দেশটির যোগাযোগও উন্নত করবে।
১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ, ফেমার্নবেল্ট টানেলটি হবে বিশ্বের দীর্ঘতম প্রি-ফ্যাব্রিকেটেড সড়ক ও রেল সুড়ঙ্গ। বুধবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
মূলত ডেনমার্ক ও জার্মানির মধ্যে বাল্টিক সাগরের নিচ দিয়ে যে ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ফেমার্নবেল্ট টানেল নির্মাণ হচ্ছে, তা বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রি-ফ্যাব্রিকেটেড সড়ক ও রেল টানেল হবে।
এই টানেল নির্মাণের ফলে স্ক্যান্ডিনেভিয়া এবং ইউরোপের মূল ভ‚খÐের মধ্যে যোগাযোগ অনেক সহজ ও দ্রæত হবে।
কারে মাত্র ১০ মিনিট আর রেলে ৭ মিনিটেই ডেনমার্কের রডবিহ্যাভন থেকে জার্মানির পুটগার্টেনে পৌঁছানো যাবে,যেখানে আগে ফেরি পারাপারে ৪৫ মিনিট সময় লাগতো। পানির নিচের অধিকাংশ টানেলের মতো মাটির নিচে বোরিং করে বানানো হচ্ছে না এটি।
বরং ৯০টি বিশাল টানেল “এলিমেন্ট” তৈরি করে, সাগরের তলদেশে লেগো ইটের মতো করে জোড়া লাগানো হচ্ছে। প্রতিটি অংশের দৈর্ঘ্য ২১৭ মিটার, প্রস্থ ৪২ মিটার ও ওজন ৭৩ হাজার টনের বেশি। এই অংশগুলো ডেনমার্কের লোল্যান্ড দ্বীপের উপক‚লে নির্মিত একটি কারখানায় তৈরি হচ্ছে। তারপর এগুলো সমুদ্রে ভাসিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে নামিয়ে বসানো হচ্ছে।
বিবিসি বলছে, এই প্রকল্পের মোট ব্যয় প্রায় ৭.৪ বিলিয়ন ইউরো। এর বেশিরভাগ অর্থ দিচ্ছে ডেনমার্ক সরকার, তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কমিশনও ১.৩ বিলিয়ন ইউরো দিচ্ছে। প্রকল্পটি ২০২৯ সালে চালু হওয়ার কথা রয়েছে।
মূলত প্রথমে একটি সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা ছিল, কিন্তু খোলা সমুদ্রের প্রবল বাতাস ও নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে তা বাদ দেওয়া হয়। এছাড়া পরিবেশবিদদের একটি অংশ বিরোধিতা করেছিল। কারণ তারা বলেছিল, এই অঞ্চলের ডলফিন প্রজাতির জন্য শব্দদূষণ ও পরিবেশগত প্রভাব মারাত্মক হতে পারে।
ডেনমার্কের লোল্যান্ড দ্বীপ একসময় অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে থাকা এলাকা ছিল। স্থানীয়দের আশা, এই টানেল নতুন ব্যবসা, কর্মসংস্থান ও পর্যটন বাড়াবে।
এছাড়া চালু হওয়ার পর প্রতিদিন টানেলটি দিয়ে ১২ হাজার গাড়ি ও ১০০টির বেশি ট্রেন চলবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই রাজস্ব থেকেই ধীরে ধীরে প্রকল্পের জন্য নেওয়া ঋণ শোধ করা হবে। যা শোধ করতে প্রায় ৪০ বছর সময় লাগবে।
যাযাদি/আর