রোববার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে ইরানের 'স্বপ্নভঙ্গ', বিকল্প কী

যাযাদি ডেস্ক
  ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৪২
সিরিয়ায় ইরানের দূতাবাসে হামলার ছবি

গত ৮ ডিসেম্বর সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের শাসনের অবসানের মধ্যে দিয়ে অন্যতম এক মিত্রকে হারায় ইরান। এ যেন দেশটির ওপর একটি আঘাত। দামেস্কে ইরানের দূতাবাসে হামলা ও কাসেম সোলাইমানির লন্ডভন্ড চিত্রে সেরকমই এক আঘাতের চিহ্ন ফুটে উঠেছিল।

তবে, আসাদ সরকারের পতনের পর প্রথম ভাষণে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লাহ আলী খামেনিকে বেশ সাহসী অবস্থান নিতে দেখা যায়।

সেই ভাষণের সময় ইরানের সর্বোচ্চ নেতা দাবি করেছিলেন, ‘ইরান মজবুত ও শক্তিশালী আছে। তারা আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে।’

ভাষণে তাকে এক প্রকার বলিষ্ঠ কন্ঠেই বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের নেতৃত্বাধীন জোট 'অ্যাক্সিস অব রেজিস্ট্যান্স' আরও জোরালো হবে।’

প্রসঙ্গত, 'অ্যাক্সিস অব রেজিস্ট্যান্স' হলো ইরান সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর একটি নেটওয়ার্ক। ইরানের নেতৃত্বে থাকা এই জোটে রয়েছে হামাস, হেজবুল্লাহ, ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহী ও ইরাকি শিয়া মিলিশিয়ারা।

আয়াতোল্লাহ আলী খামেনি ভাষণে আরও বলেছিলেন, ‘যত বেশি চাপ প্রয়োগ করবেন, প্রতিরোধ তত শক্তিশালী হবে। যত বেশি নিপীড়ন করবেন, ততটাই দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়ে উঠবে। যত প্রতিরোধ করার চেষ্টা করবেন এর ব্যপ্তি ততই বাড়বে।’

এদিকে সাবেক মার্কিন কূটনীতিক ও ডেপুটি ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাডভাইজার জেমস জেফরি সিরিয়ার ঘটনায় ইরান প্রসঙ্গে বলেন, ’তাসের ঘরের মতো সব একের পর পড়ে যাচ্ছে। ইরানের আক্সিস অব রেজিস্টেন্স ইসরায়েল ভেঙে দিয়েছিল। এবার সিরিয়ার ঘটনায় তা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা ছাড়া এই অঞ্চলে কিন্তু ইরানের আর কোনও প্রকৃত প্রতিনিধি নেই।’

’যদিও ইরান এখনও প্রতিবেশী ইরাকের শক্তিশালী মিলিশিয়াদের পূর্ণ সমর্থন দিয়ে আসছে। তবে, এটা একটা আঞ্চলিক আধিপত্যের নজিরবিহীন পতন।’ এমনই এক মতামত প্রকাশ করেন জেমস জেফরি।

এর আগে, গত পহেলা ডিসেম্বর সিরিয়ার ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে এক বৈঠকে বসেছিলেন। সেই সময় সিরিয়ার রাজধানীর দিকে অগ্রসর হওয়া বিদ্রোহীদের 'গুঁড়িয়ে দেওয়ার' প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন তিনি।

তবে, সিরিয়ায় নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত হোসেইন আকবরি আসাদকে "অ্যাক্সিস অব রেজিস্ট্যান্সের সম্মুখভাগ" বলে উল্লেখ করলেও আসাদের পতনের পর ইরান এখন আসাদের প্রশাসনের সমর্থনে যুদ্ধ করতে অসমর্থ ও অনিচ্ছুক বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

ইরানের নেটওয়ার্ক তৈরির আদ্যোপান্ত

কয়েক দশক ধরে এই অঞ্চলটিতে প্রভাব বজায় রাখা ও সেই সঙ্গে ইসরায়েলি হামলার প্রতিরোধের লক্ষ্যে মিলিশিয়াদের একটা নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে ইরান। মূলত ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের সময় থেকেই এই নেটওয়ার্ক তৈরি করে রেখেছে দেশটি।

ইরানের শিয়া ধর্মগুরু ও আসাদের জোট মূলত সুন্নিপ্রধান মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের ভিত শক্ত করতে সাহায্য করে আসছিল। মিত্র ইরানের কাছে লেবাননে হেজবুল্লাহ ও অন্যান্য আঞ্চলিক সশস্ত্র গোষ্ঠীকে সহায়তা পৌঁছানোর জন্য সিরিয়া ছিল গুরুত্বপূর্ণ একটি সরবরাহ রুট।

বাশার আল-আসাদকে সহযোগিতা করার বিষয়টি ইরানের জন্য নতুন কিছু নয়। এর আগেও ২০১১ সালে সিরিয়ায় সংঘটিত গণঅভ্যুত্থান গৃহযুদ্ধে রূপ নেওয়ায় আসাদকে সেই সময় যোদ্ধা, জ্বালানি ও অস্ত্র সরবরাহ করেছিল ইরান। সেই সময় 'সামরিক উপদেষ্টা' হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে সেখানে দুই হাজারেরও বেশি ইরানি সেনা ও জেনারেল নিহত হওয়ার খবর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতে প্রকাশ পায়।

সিরিয়ার প্রতি ইরানের সাহায্যের হাত বাড়ানোর প্রসঙ্গে গবেষণা প্রতিষ্ঠান চ্যাথাম হাউসের মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা কর্মসূচির পরিচালক ড. সানাম ভাকিল বলেন, ‘আমরা জানি ২০১১ সালে সিরিয়ায় ৩০০০ কোটি ডলার থেকে ৫০০০ কোটি ডলার অর্থ ব্যয় করেছে ইরান।’

এর নেপথ্য কারণ হিসেবে ড. ভাকিলের যুক্তি, ‘অ্যাক্সিস অব রেজিস্ট্যান্স এমন একটা সুবিধাবাদী নেটওয়ার্ক, যা ইরানকে কৌশলগত গভীরতা দেওয়া এবং সে দেশকে সরাসরি আঘাত ও আক্রমণ থেকে রক্ষা করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল। তবে, কৌশল হিসেবে এটা স্পষ্টতই ব্যর্থ হয়েছে।’

এদিকে গত অক্টোবর মাসে ইরান ইসরায়েলকে নিশানা করে যেসব ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়েছিল, তার বেশিরভাগই ইসরায়েল প্রতিহত করতে পারলেও দেশটির বেশ কয়েকটি বিমানঘাঁটির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে।

অপরদিকে ইসরায়েলি হামলায় ইরানের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদন ক্ষমতাও যথেষ্ট ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে সাবেক মার্কিন কূটনীতিক ও ডেপুটি ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাডভাইজার জেমস জেফরি এক মন্তব্যে বলেন, ‘ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হুমকি শুধু কাগুজে বাঘ বলেই প্রমাণিত হয়েছে।’

উল্লেখ্য, গত জুলাই মাসে তেহরানে হামাসের সাবেক নেতা ইসমাইল হানিয়া হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়ও ইরান বেশ বেগতিক অবস্থায় পড়ে।

ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনায় ইরান প্রসঙ্গ

ইরানের বর্তমান হালচাল প্রসঙ্গে ড. ভাকিল বলেন, "ট্রাম্পের পক্ষ থেকে যে চাপ রয়েছে, তা থেকে বাঁচতে 'অ্যাক্সিস অব রেজিস্ট্যান্সের' অবশিষ্টাংশকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি আঞ্চলিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে পুনরায় বিনিয়োগ করতে চাইবে ইরান।"

ড. ভাকিল আরও বলেন, ‘ইরান নিশ্চিতভাবেই তার প্রতিরক্ষা নীতির পুনর্মূল্যায়ন করবে, যা মূলত অ্যাক্সিস অব রেজিস্ট্যান্সের ওপর নির্ভরশীল।’

তার মতে, ‘ইরান নিজেদের পারমাণবিক কর্মসূচিকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিবে এবং সরকারকে আরও বেশি নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য ওই খাতে বেশি বিনিয়োগের প্রয়োজন কি না, সে বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেওয়ার চেষ্টা করবে।’

এদিকে ডেনিস হোরাক কানাডিয়ান চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স হিসেবে ইরানে তিন বছর কাটিয়েছিলেন। তিনি মনে করেন, ‘এদের অসাধারণ ক্ষমতা রয়েছে এবং তারা অনেক কিছুই করতে পারে।’

ইরানকে কাগুজে বাঘ হিসেবে দেখতে নারাজ ডেনিস হোরাকের যুক্তি মতে, ‘ইরান এখনও মজবুত। ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধলে উপসাগরীয় আরব দেশগুলোর বিরুদ্ধে ইরান তার সেই শক্তি ব্যবহার করতে ঘুরে দাঁড়াতে পারে।’

ইরানের পারমাণবিক ক্ষমতা

ইরান জোর দিয়ে বলছে, তাদের পরমাণু কর্মসূচি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ। পারমাণবিক কার্যক্রমের ওপর লাগাম টানার বিনিময়ে তাদের ওপর থেকে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়ে ভাবছিল যুক্তরাষ্ট্র। তবে সতর্কতার সঙ্গে আলোচনার পরও ২০১৫ সালে চুক্তি থেকে সরে যান ডোনাল্ড ট্রাম্প। ধারণা করা হচ্ছে, এরপর ইরান পরমাণু কর্মসূচিতে আরও এগিয়েছে।

ওই চুক্তির আওতায় ইরানকে তিন দশমিক ৬৭ শতাংশ বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। উল্লেখ্য, স্বল্প-সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম বাণিজ্যিক পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য জ্বালানি উৎপাদন করার কাজে ব্যবহার করা যায়।

এ প্রসঙ্গে জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষণ সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি (আইএইএ) বলছে, ‘ইরান এখন উল্লেখযোগ্যভাবে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের হার বাড়িয়ে ৬০ শতাংশ করে ফেলেছে।’

বাইডেন প্রশাসন ওই চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়ায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের সেই নিষেধাজ্ঞা এখনো বহাল রয়েছে। তবে, ইরান জানিয়েছে, ট্রাম্পের আরোপিত নিষেধাজ্ঞার জবাবে তারা ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের হার বাড়ানোর কাজ করছে।

এ বিষয়ে আইএইএ প্রধান রাফায়েল গ্রোসি জানিয়েছেন, আঞ্চলিক সমীকরণ পরিবর্তনের কারণেই ইরান এসব করছে।

প্রসঙ্গত, পারমাণবিক বোমার জন্য প্রয়োজনীয় অস্ত্র-গ্রেড ইউরেনিয়াম ৯০ শতাংশ বা তারও বেশি সমৃদ্ধ।

রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিসেস ইনস্টিটিউট থিংক ট্যাংকের পারমাণবিক ক্ষমতা বিস্তার-সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ দারিয়া দোলজিকোভা বলেন, ‘এটা সত্যিই উদ্বেগজনক। ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ২০১৫ সালে যেখানে ছিল, তার তুলনায় এখন সম্পূর্ণ ভিন্ন জায়গায় চলে এসেছে।’

তাই বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ইরান সিদ্ধান্ত নিলে এক সপ্তাহের মধ্যেই অস্ত্রের জন্য পর্যাপ্ত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে পারবে। যদিও সেক্ষেত্রে তাদের একটা ওয়ারহেড তৈরি করতে হবে এবং সরবরাহ ব্যবস্থাও স্থাপন করতে হবে, যার জন্য কয়েক মাস থেকে এক বছর পর্যন্ত সময় লাগবে।

এদিকে মিজ ডলজিকোভা বলেন, ‘লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে এমন পরমাণু অস্ত্র তৈরির কতটা কাছাকাছি রয়েছে ইরান, তা আমরা জানি না। কিন্তু এরই মধ্যে এই সমস্ত অস্ত্রের নির্মাণ নিয়ে বিস্তর গবেষণা করে ফেলেছে তারা। গবেষণার মাধ্যমে অর্জিত সেই জ্ঞান ইরান থেকে কেউ কেড়ে নিতে পারবে না।’

এদিকে ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতার বিষয়ে বিশ্লেষণ করে পশ্চিমা দেশগুলো বেশ উদ্বেগেই রয়েছে বলে জানা যায়।

ইসরায়েলি ইনস্টিটিউট ফর ন্যাশনাল সিকিউরিটি স্টাডিজ এবং তেল আবিব বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ গবেষক ড. রাজ জিম্মত বলেন, ‘এটা স্পষ্ট যে, ট্রাম্প ইরানের ওপর তার সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের কৌশল আরও একবার চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবেন। সেই লক্ষ্যে তিনি ইরানকে নতুন করে আলোচনায় বসানোর চেষ্টা করবেন, যাতে ইরানকে তার পারমাণবিক কর্মসূচিতে রাশ টানার জন্য রাজি করানো যায়।’

তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক নাসের হাদিয়ান বলেন, ‘আমার ধারণা, একজন ব্যবসায়ী হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের সঙ্গে চুক্তির চেষ্টা করবেন।তবে, যদি তা না হয়, তাহলে আলোচনার বসার জন্য ট্রাম্প ইরানের ওপর সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগ করবেন।’

সংঘাতের চেয়ে দু'পক্ষের মধ্যে একটা চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি মনে করে তিনি আরও বলেন, ‘সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগ করতে গেলে বিষয়টা বিগড়ে যেতে পারে, যুদ্ধও ডেকে আনতে পারে যেটা কোনও পক্ষই চায় না।’

উর্ধ্বগতিতে উত্তেজনার মাত্রা

ইরানের সামনে বেশ কিছু অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জও রয়েছে। সর্বোচ্চ নেতার উত্তরাধিকার বেছে নেওয়া প্রসঙ্গে ড. ভাকিল বলেন, ‘খামেনেই তার উত্তরাধিকার ও ক্ষমতা হস্তান্তর সংক্রান্ত দুশ্চিন্ত নিয়েই ঘুমাতে যান। ইরানকে একটা স্থিতিশীল জায়গায় রেখে যেতে চান তিনি।’

এদিকে সঠিকভাবে হিজাব না পরার অভিযোগে অভিযুক্ত মাহসা জিনা আমিনি নামে এক তরুণীর মৃত্যুর পর ২০২২ সালে দেশব্যাপী বিক্ষোভ ইরান সরকারকে নাড়িয়ে দিয়েছিল।

এ পরিস্থিতিতে ইরানের শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে এখনও দেশটির জনসাধারণের মাঝে চাপাক্ষোভ বিদ্যমান। দেশের নাগরিকদের অভিযোগ, ‘ইরান বেকারত্ব ও উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির মতো সমস্যার সঙ্গে লড়ছে। অথচ দেশের সম্পদ অন্য দেশের সঙ্গে সংঘাতের কাজে ব্যয় করা হচ্ছে।’

ইরানের তরুণ প্রজন্ম ক্রমেই ইসলামি বিপ্লব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। এদিকে প্রায়শই নারীরা ইরানের শাসকদের জারি করা বিধি-নিষেধকে উপেক্ষা করছেন। নিজেদের চুল না ঢেকে বের হয়ে গ্রেপ্তার হওয়ার ঝুঁকিও নিচ্ছেন তারা।

তবে এমতাবস্থায় সিরিয়ার মতো ইরানের শাসনব্যবস্থারও পতন ঘটবে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা, যারা খুব কাছ থেকে দেশটিকে পর্যবেক্ষণ করে আসছেন।

এ প্রসঙ্গে মি. হোরাক মনে করেন, ‘অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা জোরদার করার চেষ্টায় ভিন্নমত পোষণকারীদের প্রতি ইরানের সরকারের সহনশীলতা আরও কমে আসবে। হিজাব না পরা নারীদের শাস্তি আরও জোরদার করার নতুন ও দীর্ঘ পরিকল্পিত আইন শিগগিরই আসছে।’

তার দৃঢ় পর্যবেক্ষণ, ‘ইরানের লাখো নাগরিক যেমন এটা সমর্থন করে না, তেমনই সেখানকারই লাখ লাখ নাগরিক এখনও এটা সমর্থন করেন। আমি মনে করি না যে শিগগিরই শাসন ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার মতো কোনো ঝুঁকি রয়েছে।’

পরিশেষে বলা যায়, ইরানের আভ্যন্তরীণ পরিস্থিতিতে বেশকিছু বিষয়ে জনমনে ক্রোধের পরিবেশ, সিরিয়ায় বর্তমানে তাদের অবস্থান শক্ত অবস্থান থেকে পিছলে যাওয়া এবং পারিপার্শ্বিক আঞ্চলিক প্রভাব বিস্তারে ঘাটতি ইরানের শাসকদের সামনের পথ যেন বেশ জটিলতর হয়ে উঠছে। তথ্যসূত্র: বিবিসি

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে