সিরিয়ার স্বৈরশাসক বাশার আল–আসাদ প্রেসিডেন্টের পদ ছেড়ে তিনি পালিয়ে যান রাশিয়ায়। এর মধ্য দিয়ে দেশটিতে আসাদের ২৪ বছরের শাসনামলের অবসান হয়েছে। সেই সঙ্গে সমাপ্তি ঘটেছে আসাদ পরিবারের টানা ৫৩ বছরের শাসনের। আসাদের পতন ঘটানো বিদ্রোহী বাহিনীর নেতা আবু মহম্মদ আল-জুলানির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে রাশিয়া। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার অনলাইনে এক প্রতিবেদনে এমন খবর প্রকাশিত হয়েছে।
শুক্রবার এ কথা জানিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সরকারের উপবিদেশমন্ত্রী মিখাইল বোগদানভ।
তিনি বলেন, ‘‘হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস)-এর নেতাদের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ রাখছি।’’
গত ৮ ডিসেম্বর প্রেসিডেন্ট আসাদ সরকারকে উৎখাত করে সিরিয়ার রাজধানী দামাস্কাস দখল করেছিল বিদ্রোহী গোষ্ঠী এইচটিএস এবং তাদের সহযোগী ‘জইশ আল-ইজ্জা’র যৌথবাহিনী। দামাস্কাস ছেড়ে সপরিবার রাশিয়া চলে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন আসাদ। যুদ্ধে জয়ী হলেও বিদ্রোহী জোটের নেতা জুলানি সরাসরি ক্ষমতা হাতে নেননি। ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী হিসাবে মহম্মদ আল-বাশিরকে নিয়োগ করেছেন তিনি।
রাশিয়া-সহ বেশ কয়েকটি দেশ জানিয়েছে, তারা সিরিয়ার নতুন সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত।
যদিও গৃহযুদ্ধ পর্বে ধারাবাহিক ভাবে আসাদের সেনাকে মদত দিয়েছে রাশিয়া। ধারাবাহিক ভাবে এইচটিএস যোদ্ধাদের উপর বোমাবর্ষণ করেছে রুশ যুদ্ধবিমান।
ব্রিটেনের মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ সংস্থা ‘সিরিয়ান অবজ়ারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস’ জানিয়েছে, সিরিয়ার ভূখণ্ডে রাশিয়ার বিমান হামলায় গত ন’বছরে ২১ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৮ হাজার ৭০০ জন অসামরিক নাগরিক।
সামরিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছেন, সিরিয়ায় দু’টি সেনাঘাঁটি রক্ষা করতেই পুতিনের এই ‘নমনীয়তা’।
প্রসঙ্গত, সিরিয়ার বন্দরশহর তারতসে রুশ নৌবাহিনীর ঘাঁটি রয়েছে। আর এক বন্দরনগরী লাতাকিয়ার অদূরে রয়েছে রুশ বায়ুসেনার ঘাঁটি। সেটি খমেইমিম বিমানঘাঁটি নামে পরিচিত। গত ২৪ বছর ধরে শাসন চালানোর পরে সিরিয়ায় এখন আসাদের জনপ্রিয়তা তলানিতে। তাঁর সরকারের পতনের পরে দামাস্কাস-সহ সিরিয়ার বিভিন্ন অংশে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে উৎসবে মেতেছে জনতা। এই আবহে পুতিনের অবস্থান বদল আসাদের ‘ভবিষ্যৎ’ আরও অনিশ্চিত করে তুলবে বলে মনে করা হচ্ছে।’’
যাযাদি/ এম