রোববার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

অগ্নিগর্ভ ভারতের মণিপুর, মন্ত্রীর বাড়িতে হামলা, চলছে কারফিউ

যাযাদি ডেস্ক
  ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৬
মন্ত্রীর বাড়িতে হামলা

অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠেছে ভারতের মণিপুর রাজ্য। শনিবার রাজ্যে রাজধানী ইম্ফলে রাজ্যের দু'মন্ত্রী ও তিন বিধায়কের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে ক্ষুব্ধ জনতা। শুক্র ও শনিবার মোট ছয়জন মেইতেই জনগোষ্ঠীর মানুষ অপহৃত হন। তাদের লাশ পাওয়া গিয়েছে।

তারই প্রতিবাদে শুরু হয়েছে বিক্ষোভ। পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে পূর্ব ও পশ্চিম ইম্ফলে কার্ফু জারি করা হয়েছে। সাত জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

রাজ্যের এক প্রশাসনিক কর্মকর্তা জানিয়েছে ক্ষুব্ধ মানুষজন স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্বপম রঞ্জনের বাড়িতে হামলা চালায়। পশ্চিম ইম্ফলে বিজেপি এমএলএ আর কে এমোর বাড়ির সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখায়। জনতার দাবি ছয়জনের মৃত্যুর পেছনে যারা রয়েছে, তাদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে খুঁজে বের করতে হবে।

পাঁচ দিন আগেই জিরিবাম জেলা থেকে একই পরিবারের তিন মহিলা এবং তিন শিশুকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছিল সন্দেহভাজন কুকি উগ্রবাদীদের বিরুদ্ধে। ওই ছয়জন ছিলেন মেইতেই সম্প্রদায়ের। তাদের খোঁজ শুরু করে নিরাপত্তাবাহিনী।

শুক্রবার রাতে তিনজনের মৃতদেহ উদ্ধারের পর শনিবার উদ্ধার হলো আরো তিনজনের মৃতদেহ। মৃতদেহগুলো এখনো শনাক্ত করা যায়নি। এর পরেই প্রশ্ন উঠছে, উদ্ধার হওয়া মৃতদেহগুলো কি অপহৃত ছয় মহিলা ও শিশুর? ছয়জনের মৃতদেহ উদ্ধারের পর গোলমালের আশঙ্কায় ইম্ফল পশ্চিম এবং ইম্ফল পূর্বে কারফিউ জারি করা হয়েছে। বন্ধ সাত জেলার ইন্টারনেট পরিষেবা।

পুলিশ সূত্রে খবর, শুক্রবার সন্ধ্যায় অসম-মণিপুর সীমানায় জিরি নদীতে তিনটি লাশ ভাসতে দেখা যায়। জিরিঘাট এলাকা থেকে ওই তিন মৃতদেহ উদ্ধার করে শুক্রবার রাতে আসামের শিলচরের মর্গে পাঠানো হয়। সেখানে শিলচর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে সেই মৃতদেহগুলোর ময়নাতদন্ত করা হয়।

প্রাথমিকভাবে মনে করা হয়েছিল, ওই মৃতদেহ তিনটি প্রাপ্তবয়স্কদের। শনিবার ওই হাসপাতালের একটি সূত্রকে উদ্ধৃত করে সর্বভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, উদ্ধার হওয়া মৃতদেহগুলোর একটি মহিলার। বাকি দুই মৃতদেহ শিশুদের। পানিতে ভেসে ফুলে ওঠায় তদন্তকারীরা বয়স বুঝতে পারেননি।

শনিবার দুপুরে সরকারি একটি সূত্র ওই সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছে, আরো তিনটি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সেগুলো এখনো শনাক্ত করা যায়নি। শিলচরের হাসপাতালে ময়াতদন্তের জন্য পাঠানো হচ্ছে।

মণিপুরের জিরিবামে কুকি উগ্রবাদী এবং সিআরপিএফ জওয়ানদের মধ্যে গুলি বিনিময় হয়। অভিযোগ, সেই সময় একদল কুকি উগ্রবাদী মেইতেই সম্প্রদায়ের তিন মহিলা এবং তিন শিশুকে অপহরণ করে। নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত হন ১০ কুকি উগ্রবাদী। যদিও কুকি সম্প্রদায়ের দাবি, নিহত ১০ জন ছিলেন ‘গ্রামের স্বেচ্ছাসেবী’। তাদের মৃতদেহ মিজোরামে নিতে চেয়ে গত সোমবার থেকে শিলচরের হাসপাতালের মর্গ ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন কুকিরা।

শনিবার সকালে পুলিশ ১০ জনের লাশ নিয়ে কুকি অধ্যুষিত চুরাচাঁদপুরের দিকে রওনা হলে তাদের ঘেরাও করেন কুকিরা। বিক্ষোভ দমন করতে লাঠি চালায় পুলিশ। এই ঘটনার পরে সতর্ক আসামের পুলিশও। সূত্র : জি নিউজ

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে