ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ভূখণ্ড গাজা উপত্যকা ও লেবাননে ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বরতা থামছেই না। দখলদার দেশটির হামলায় প্রতিনিয়ত দীর্ঘ হচ্ছে লাশের সারি। ইসরায়েলি হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় দুই দেশে আরও ৯১ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে ৬৩ জন এবং লেবাননে নিহত হয়েছেন ২৮ জন।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার গাজাজুড়ে ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৬৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৩ হাজার ৬৬৫ জনে। আর আহতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে এক লাখ তিন হাজার ৭৬।
গতকাল গাজায় যারা নিহত হয়েছেন তাদের মধ্যে নারী ও শিশু আছেন। আহত হয়েছেন অনেকে। এখনো খোঁজ মিলছে না অনেকের। তারা ভবনের ধ্বংসস্তুপের নিচে চাপা পড়েছেন বলে ধারণ করা হচ্ছে।
গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। মূলত ইসরায়েলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মনে করছে, গাজা উপত্যকাজুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।
জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর হামলার কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন। এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৭০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।
অন্যদিকে গাজা ছাড়া লেবাননেও হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি বাহিনী। গত ২৪ ঘণ্টায় বৈরুতের দক্ষিণ শহরতলী এবং মাউন্ট লেবাননের শহরগুলোতে ইসরায়েলের বোমা হামলায় অন্তত ২৮ জন নিহত হয়েছেন।
এ নিয়ে গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে ৩২৮৭ জন নিহত এবং ১৪ হাজার ২২২ জন আহত হয়েছেন।
যাযাদি/ এস