যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর মধ্য দিয়ে ১৩২ বছরের এক রেকর্ড ভেঙেছেন তিনি। ট্রাম্পের কাছে পরাজিত হয়েছেন ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী কমলা হ্যারিস। নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর সমর্থকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা যে বিশ্বাস আমার ওপর রেখেছেন, তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। দেশের জন্য অফুরান ভালোবাসা।
বুধবার (৬ নভেম্বর) ওয়াশিংটন ডিসিতে হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্চে এক ভাষণে কমলা হ্যারিস এসব কথা বলেন। মঞ্চে উঠে জোর করতালির মধ্যে সমর্থকদের দিকে উজ্জ্বল দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলেন হ্যারিস। ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজছিল বিয়ন্সের গান- ফ্রিডম, যা তার প্রচার সংগীতে পরিণত হয়েছিল।
ভাষণের শুরুতেই কমলা হ্যারিস বলেন, আমার হৃদয় আজ পরিপূর্ণ। আপনারা যে বিশ্বাস আমার ওপর রেখেছেন, তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। দেশের জন্য রইল অফুরান ভালোবাসা। তিনি বলেন, এ নির্বাচনের ফল আশানুরূপ হয়নি। তবে আমেরিকার প্রতিশ্রুতির আলো সবসময় জ্বলতে থাকবে, যতদিন আমরা হাল ছাড়ব না এবং লড়াই চালিয়ে যাব।
তিনি আরও বলেন, আমার প্রচারণা ছিল কমিউনিটি তৈরি এবং জোট গঠনের উদ্দেশে। আমি ও আমার দল এ যাত্রা সফলভাবে চালিয়ে যেতে পেরেছি বলে গর্বিত। আমি জানি, সবাই এখন ভিন্ন ধরনের অনুভ‚তির মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। আমি তা বুঝতে পারছি।
কমলা হ্যারিস বলেন, নির্বাচনের ফল আমাদের মেনে নিতেই হবে। ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলে তাকে জয়ের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছি। গণতন্ত্রের একটি মৌলিক নীতি হলো ফল মেনে নেওয়া। এটি স্বৈরতন্ত্র থেকে গণতন্ত্রকে আলাদা করে। আমি এ নির্বাচনের ফল মেনে নিয়েছি। কিন্তু আমি এ লড়াই ছেড়ে দিচ্ছি না। তিনি বলেন, আমাদের দেশে আমরা প্রেসিডেন্ট বা দলের প্রতি নয় বরং যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান, আমাদের বিবেক ও ঈশ্বরের প্রতি আনুগত্য জানাই। স্বাধীনতা, সুযোগ, ন্যায়বিচার এবং সব মানুষের মর্যাদা রক্ষার জন্য সংগ্রাম করার অর্থ হলো সেই মূল্যবোধ যা আমেরিকাকে তার শ্রেষ্ঠ অবস্থানে তুলে ধরে।
তিনি আরও বলেন, আমেরিকা, আমরা কখনোই গণতন্ত্র, আইনের শাসন, সমান ন্যায়বিচার এবং সেই অধিকার ও স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম ছেড়ে দেব না, যা মর্যাদাপূর্ণভাবে রক্ষা এবং প্রতিষ্ঠিত করা জরুরি। আমরা এ সংগ্রাম চালিয়ে যাব ভোটকক্ষে, আদালতে এবং জনসমক্ষে।
ডেমোক্রেটিক পার্টির এ প্রার্থী বলেন, আমি কখনোই সেই ভবিষ্যতের জন্য সংগ্রাম ছেড়ে দেব না, যেখানে আমেরিকানরা তাদের স্বপ্ন, আকাঙ্ক্ষা এবং আশা পূর্ণ করতে পারবে, যেখানে আমেরিকার নারীদের কাছে তাদের নিজের শরীর নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা থাকবে এবং তাদের কী করতে হবে, সরকার তা বলতে পারবে না।
কমলা হ্যারিস এক উজ্জীবিত বার্তা দিয়ে তার ভাষণ শেষ করেন। হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থিত জনতার উদ্দেশে তিনি বলেন, কেবল যখন অন্ধকার অনেক গভীর হয়, তখনই আপনি তারকা দেখতে পারেন। আমি জানি, মানুষ মনে করছে আমরা একটি অন্ধকার সময়ে প্রবেশ করছি। আশা করি এমনটি হবে না।
যাযাদি/ এসএম