জাপানে এক গবেষণায় উঠে এসেছে, সব বয়সী কিশোরদের মধ্যে হস্তমৈথুনের প্রবণতা আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। অন্যদিকে এ বছরের শুরুর দিকে একটি পৃথক জরিপে দেখা গেছে, জাপানে প্রায় অর্ধেক বিবাহিত দম্পতি যৌন সম্পর্কহীন জীবন যাপন করছেন।
এই গবেষণার ফলাফলগুলো এমন একটি সময় প্রকাশ পেয়েছে, যখন জাপান ক্রমহ্রাসমান জন্মহার নিয়ে লড়াই করছে এবং এটি আরো উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিভিন্ন দেশে কিশোর বয়সে প্রথম চুম্বন একটি সাধারণ ব্যাপার হিসেবে দেখা হয়। তবে এক সাম্প্রতিক জরিপে দেখা গেছে, জাপানের ১৫-১৮ বছর বয়সী ৮০ শতাংশ ছেলে এখনো এই অভিজ্ঞতা অর্জন করেনি। মেয়েদের ক্ষেত্রেও পরিস্থিতি প্রায় একই, মাত্র চারজনের মধ্যে একজন স্কুলছাত্রী তার প্রথম চুম্বনের অভিজ্ঞতা লাভ করেছে।
১৯৭৪ সালে জাপানে কিশোর-কিশোরীদের যৌন অভ্যাস নিয়ে প্রশ্ন করা শুরু হয়েছিল।
তখন থেকে এখন পর্যন্ত এটিই সর্বনিম্ন পরিসংখ্যান। কম জন্মহার নিয়ে লড়াইরত দেশটির জন্য এটি উদ্বেগজনক হতে পারে।জাপান অ্যাসোসিয়েশন ফর সেক্স এডুকেশনের (জেস) এই গবেষণায় ১২ হাজার ৫৬২ জন ছাত্র-ছাত্রীকে তাদের প্রথম চুম্বন থেকে যৌনমিলন পর্যন্ত নানা বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। প্রতি ছয় বছর পর পর এই জরিপ পরিচালিত হয়।
২০০৫ সাল থেকে প্রথম চুম্বনের হার কমছে, যখন এই হার ছিল প্রায় দুজনের মধ্যে একজন। এদিকে এ বছরের প্রতিবেদনে শুধু চুম্বনের হার কমে যাওয়ার কথাই উল্লেখ করা হয়নি। যৌনমিলনের হারেও একই ধরনের পতন দেখা গেছে। জরিপে দেখা যায়, স্কুলের ছাত্রদের মধ্যে যারা যৌনমিলন করেছে, তাদের হার ২০১৭ সাল থেকে ৩.৫ পয়েন্ট কমে ১২ শতাংশে নেমে এসেছে এবং ছাত্রীদের মধ্যে এ হার ৫.৩ পয়েন্ট কমে ১৪.৮ শতাংশে নেমেছে।
২০২৩ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী সতর্ক করেছিলেন, কম জন্মহার দেশটির কার্যক্ষমতা বজায় রাখার ক্ষমতাকে ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে।
কিছু গবেষক বলেছেন, বর্তমানে জাপানের জনসংখ্যা ১২৫ মিলিয়ন হলেও শতকের শেষ নাগাদ এটি ৫৩ মিলিয়নের নিচে নেমে যেতে পারে। জীবিকা নির্বাহের ব্যয় বৃদ্ধি, শিক্ষিত ও কর্মজীবী নারীর সংখ্যা বৃদ্ধি এবং জন্মনিয়ন্ত্রণের সহজলভ্যতা—এসব কারণেও অনেক নারী সন্তান ধারণের সংখ্যা কমিয়ে দিচ্ছেন।
এ পতনের একটি কারণ হিসেবে করোনা মহামারির প্রভাবকে দায়ী করেছেন বিশেষজ্ঞরা। মাইনিচি পত্রিকায় মুসাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের অধ্যাপক ইউসুকে হায়াশি জানান, স্কুল বন্ধ থাকা ও শারীরিক সংস্পর্শে বিধি-নিষেধ থাকার ফলে ছাত্র-ছাত্রীরা এমন একটি সংবেদনশীল সময়ে বাধাপ্রাপ্ত হয়, যখন তারা যৌনতা বিষয়ে আগ্রহী হয়ে উঠছিল।
জাতিসংঘের হিসাবে, ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সের মানুষের অনুপাতে জাপানে বিশ্বের সবচেয়ে বেশিসংখ্যক বয়স্ক মানুষ রয়েছে। ২০২৩ সালের শেষের দিকে প্রথমবারের মতো জাপানে প্রতি ১০ জনের একজন ৮০ বছর বা তার বেশি বয়সের বলে জানা যায়।
মার্চ মাসে ডায়াপার নির্মাতা ওজি হোল্ডিংস ঘোষণা দেয়, তারা শিশুদের জন্য ডায়াপার তৈরি বন্ধ করবে এবং প্রাপ্তবয়স্কদের ডায়াপারের উৎপাদনে বেশি মনোযোগ দেবে।
সূত্র : বিবিসি