ঝাড়খণ্ডের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি অনুপ্রবেশ ইস্যু নিয়ে কড়া অবস্থানে রয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সরাসরি জেএমএম-কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এবার তার প্রতিক্রিয়ায় মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন শেখ হাসিনার প্রসঙ্গ তুলে বিজেপির বিরুদ্ধে আক্রমণ করেছেন।
গণ আন্দোলনের মুখে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনাকে ভারতে আশ্রয় দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কেন হাসিনাকে ভারতে ঠাঁই দেয়া হলো?’
এক জনসভায় হেমন্ত বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে কি বিজেপির গোপন কোনো চুক্তি আছে? কেন শেখ হাসিনাকে ভারতের মাটিতে আশ্রয় দেওয়া হলো?’
তিনি উল্লেখ করেন যে- বিজেপি দাবি করছে, তাদের রাজ্য দিয়েই অনুপ্রবেশকারীরা ভারতে প্রবেশ করছে।
দলীয় প্রার্থীর হয়ে প্রচারে গিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ করেন হেমন্ত। একই সঙ্গে শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও নিশানা করেন তিনি।
হেমন্ত অভিযোগ করে বলেন, ‘বাংলাদেশ সম্পর্কে ‘দ্বৈত’ ভূমিকা নিচ্ছে কেন্দ্র এবং বিজেপি নেতারা। মোদি প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেওয়ার সময় সংবিধানের সামনে মাথা নত করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, সংবিধান অনুযায়ী দেশ চলবে। সমাজের সব অংশ সমান অধিকার পাবে। আমি তাকে (মোদি) প্রশ্ন করতে চাই, আপনি কি বাংলাদেশের সঙ্গে অভ্যন্তরীণ কোনো ব্যবস্থা করেছেন? আপনি কেন হাসিনার হেলিকপ্টার ভারতে নামতে দিলেন?’
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার ও হিন্দুস্তান টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, এর আগে ঝাড়খণ্ডে প্রচারে এসে অমিত শাহ দাবি করেছিলেন, বাংলাদেশ থেকে সীমান্ত পেরিয়ে অনুপ্রবেশকারীদের ভারতে ঢুকে পড়া চাইলেই আটকে দিতে পারে পশ্চিমবঙ্গ এবং ঝাড়খণ্ড সরকার। স্থানীয় প্রশাসন এবং রাজ্য সরকারের প্রশ্রয়েই অনুপ্রবেশ বেড়ে চলেছে।
ওই সময়ে অমিত শাহ প্রতিশ্রুতি দেন, ঝাড়খণ্ডে বিজেপি ক্ষমতায় এলে অনুপ্রবেশকারীদের থেকে জমি কেড়ে নেবে এবং তাদের দেশ থেকে বিতারিত করার জন্য কঠোর আইন করবে।
তবে অমিত শাহকে পাল্টা প্রশ্ন রেখে হেমন্ত বলেন, ‘ঝাড়খণ্ডে উৎপাদিত বিদ্যুৎ বাংলাদেশে সরবরাহ করা হচ্ছে।’ সুতরাং সীমান্ত পাহারা দেওয়া এবং অনুপ্রবেশ ঠেকানো কেন্দ্রের দায়িত্ব। এ ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের কোনো হাত নেই।
উল্লেখ্য, শেখ হাসিনা চলতি বছরের ৫ অগাস্ট বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে ভারতে চলে যান এবং তিনি সেখানেই আশ্রয় নিয়েছেন। দেশটির সরকার জানিয়েছে, বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় চেয়েছিলেন এবং তাকে ‘আপাতত’ থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং তাকে ফেরত নেওয়ারও চেষ্টা চলছে।
যাযাদি/ এস