রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেট প্রার্থিতা নিয়ে জল্পনা

যাযাদি ডেস্ক
  ২৪ জুলাই ২০২৪, ১১:২২
-ফাইল ছবি

আগামী ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থিতা থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তারপর থেকেই জল্পনা শুরু হয়েছে কে হবেন নতুন ডেমোক্রেট প্রার্থী। এরই মধ্যে একেক প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে। যদিও প্রার্থিতার দৌড়ে ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে সমর্থন দিয়েছেন বাইডেন। কিন্তু দেশটির স্বতন্ত্র সিনেট সদস্য জো মানচিন ডেমোক্রেটিক পার্টিতে ফিরে এসে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার কথা ভাবছেন। তথ্যসূত্র : এএফপি

তবে প্রার্থিতা চূড়ান্ত হবে আগামী মাসে অনুষ্ঠেয় ডেমোক্রেট কনভেনশনে। স্পষ্টভাবে কেউ এগিয়ে না থাকলেও কমলা হ্যারিসের পাশাপাশি আলোচনা চলছে গ্রেচেন হুইটমার, গেভিন নিওসোম, পিট বুটেজেজের মতো নেতাদের নিয়েও। এখন মানচিনের নাম যুক্ত হয়েছে।

জো বাইডেনের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পর তার বিকল্প হিসেবে সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত হচ্ছে ভাইস প্রেসিডেন্ট ৫৯ বয়সি কমলা হ্যারিসের নাম। তিনি ছাড়াও সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে উচ্চারিত হচ্ছে মিশিগানের গভর্নর গ্রেচেন হুইটমারের নাম। আগে থেকেই বাইডেনের উত্তরসূরি হিসেবে আলোচনায় ছিলেন। বাইডেন সরে যাওয়ায় ধারণা করা হচ্ছে, কপাল খুলে যেতে পারে ৫২ বছর বয়সি হুইটমারের। সম্ভাব্য প্রার্থী হওয়ার তালিকায় আরও আছে ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গেভিন নিওসোম, পেনসিলভানিয়ার গভর্নর জস শ্যাপিরো, ইলিনয়ের গভর্নর জেবি পিরিৎজকার ও পরিবহণমন্ত্রী পিট বুটেজেজ।

দলে বেশ জনপ্রিয়তা রয়েছে কেন্টাকির গভর্নর অ্যান্ডি বিশেয়ার, মেরিল্যান্ডের গভর্নর ওয়েস মুর, সিনেটর ইমি ক্লোবাচার, কোরি বুকার, রাফায়েল ওয়ারনকের মতো ডেমোক্রেট নেতাদেরও। তবে যতই আলোচনা আর হিসাব-নিকাশ হোক না কেন, ডেমোক্রেট প্রার্থী চূড়ান্ত হবে দলের কনভেনশনেই। আগস্টে অনুষ্ঠিত কনভেনশনে তিন হাজার ৯০০ ডেলিগেট নির্ধারণ করবেন দলের নতুন প্রার্থীকে।

সেখানে মতপার্থক্য থাকলে অনুষ্ঠিত হবে দ্বিতীয় রাউন্ড। তবে দ্বিতীয় বা চূড়ান্ত রাউন্ডে প্রার্থিতার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন দলের সবচেয়ে সিনিয়র ও প্রভাবশালী ৭০০ ডেলিগেট।

স্থানীয় সময় গত রোববার সামাজিক মাধ্যম ‘এক্সে’ নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের কথা জানান জো বাইডেন। তিনি বলেন, ‘এটা আমার জীবনের সেরা সম্মান, আমি প্রেসিডেন্ট হিসেবে আপনাদের সেবা করতে পেরেছি। দেশ এবং দলের স্বার্থে আমি মনে করি, আমার সরে যাওয়াই উচিত। প্রেসিডেন্ট হিসেবে এখন আমার হাতে যে দায়িত্ব রয়েছে, তা পূরণ করাটাই এখন জরুরি।’

গত ২৭ জুন প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে টেলিভিশন বিতর্কে ধরাশায়ী হওয়ার পর থেকেই বাইডেনের সরে দাঁড়ানোর দাবি বেশ জোরালো হয়। নিজ দলেই তোপের মুখে পড়েন তিনি। ৮১ বছর বয়সি বাইডেনকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান ডেমেক্রেটিক পার্টির অনেক সাবেক ও বর্তমান কংগ্রেসম্যান। এমনকি বেশ কয়েকজন দাতা সদস্যও বিকল্প প্রার্থীর দাবি জানান। সম্প্রতি করোনায় আক্রান্ত হয়ে ‘আইসোলেশনে’ ছিলেন তিনি।

এদিকে আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের লড়াই থেকে ডেমোক্রেট প্রার্থী জো বাইডেন সরে দাঁড়ানোয় মিশ্রপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে দলটির ভেতরে-বাইরে। এতে হতাশ প্রকাশ করেছেন তার শিবিরের অনেকে। যদিও মার্কিন প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন অনেক ডেমোক্রেট নেতা। তবে বাইডেনের এমন সিদ্ধান্তের পর স্বভাবতই হতাশ হয়েছেন বাইডেন সমর্থকরা। তার এক সমর্থক জানান, ‘এটা দুঃখজনক। আমার শতভাগ আশা ছিল, বাইডেন আবারও লড়াই করবেন। আমি জানি না এখন কী হবে।’ এ বিষয়ে ডেমোক্রেট নেতা চাক শুমার বলেন, ‘জো বাইডেন শুধু একজন অসাধারণ আইনপ্রণেতা কিংবা প্রেসিডেন্টই নন।

তিনি একজন অসাধারণ মানুষও। এই সিদ্ধান্ত নেওয়া তার জন্য খুবই কঠিন ছিল। আবারও তিনি তার দল ও দেশের স্বার্থকেই প্রাধান্য দিলেন।’

ভুলভাল কথা আর উদ্ভট কাজের জন্য আলোচিত-সমালোচিত মুখ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বয়সের কারণে প্রেসিডেন্ট হওয়ার যোগ্যতা নিয়ে কটাক্ষের শিকার হয়েছেন নিজ দলের কাছেই। এমনকি আমেরিকার আসন্ন নির্বাচনে নাম প্রত্যাহারের জন্য বাইডেনের ওপর ছিল দলীয় চাপ। সব জল্পনা বয়সের কারণেই। এমনিতেই বহু প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে। অন্যদিকে ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে দাঁড়ায় তার নিয়মিত ভুল শব্দের ব্যবহার।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে