শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১

মাশহাদে চিরনিদ্রায় শায়িত ইব্রাহিম রাইসি

যাযাদি ডেস্ক
  ২৪ মে ২০২৪, ০৯:১১
ছবি-সংগৃহিত

হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানো ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে দেশটির উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় শহর মাশহাদে সমাহিত করা হয়েছে। মৃত্যুর চার দিন পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জানাজা শেষে শহরের শিয়াদের মূল সমাধি ইমাম রেজার পবিত্র মাজারে তার দাফন সম্পন্ন হয়। ৬৩ বছর বয়সি সদ্য প্রয়াত এই প্রেসিডেন্টের জন্ম ও বেড়ে ওঠা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম এই শহরে।

বৃহস্পতিবার মাশহাদের ইমাম রেজা মাজারের চারপাশে প্রেসিডেন্ট রাইসির বড় বড় ছবি, কালো পতাকা এবং শিয়াদের নানা প্রতীক টানানো হয়। রাইসিকে শেষ বিদায় জানাতে সকাল থেকেই মাশহাদে জড়ো হতে থাকেন লাখো মানুষ। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি রাইসির জানাজায় বিভিন্ন দেশের নেতা, রাষ্ট্রপতি, রাষ্ট্রদূত এবং আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্বরাও অংশ নেন। এর আগে সকালে দক্ষিণ খোরাসান প্রদেশের রাজধানী বিরজান্দে নেওয়া হয় রাইসির মরদেহ। সেখানেও তাকে শ্রদ্ধা জানান সাধারণ মানুষ। ইরানের নেতৃত্বের ওপর নজরদারি করা দেশটির সবচেয়ে প্রভাবশালী পর্ষদ ‘অ্যাসেম্বলি অব এক্সপার্টস’র প্রতিনিধি হিসেবে এখানে সম্প্রতি পুনরায় নির্বাচিত হয়েছিলেন প্রয়াত রাইসি।

১৯৬০ সালে মাশহাদে জন্মগ্রহণ করেন রাইসি। সেখানে তিনি আস্তান-ই কুদস-ই রাজাভি নামে একটি প্রভাবশালী দাতব্য সংস্থা পরিচালনা করতেন। মাশহাদে অষ্টম শিয়া ইমাম রেজার মাজার রয়েছে এবং রাইসির দাতব্য সংস্থা থেকে ওই মাজারের কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।

এর আগে মঙ্গলবার ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের রাজধানী তাবরিজে নিহত প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে হাজারো শোকার্ত মানুষ শামিল হন। পরে তাবরিজ থেকে রাইসি ও তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ানের মরদেহ ইরানের মধ্যাঞ্চলের ঐতিহাসিক কোম শহরে নেওয়া হয়। সেখানেও তাদের জানাজা হয়। এরপর রাইসি ও আবদুল্লাহিয়ানের মরদেহ তেহরানে নেওয়া হয়। বুধবার রাজধানী তেহরানে রাইসির জানাজায় শোকার্ত লাখো মানুষ অংশ নেন।

গত রোববার দেশটির পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। ওই সময় তার সঙ্গে একই হেলিকপ্টারে ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ান ছাড়াও আরও আটজন। যাদের সবাই এই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান। সদ্য সাবেক প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি আজারবাইজানের সীমান্তবর্তী এলাকায় দুই দেশের যৌথভাবে নির্মিত একটি বাঁধ উদ্বোধন করতে যান। সেখানে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভও উপস্থিত ছিলেন। তাদের বহনকারী তিনটি হেলিকপ্টারের দু’টি হেলিকপ্টার নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছায়।

দুর্ঘটনায় পড়ে বিধ্বস্ত হয় রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি।

এদিকে, ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুতে বাংলাদেশে বৃহস্পতিবার একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় শোক পালনের অংশ হিসেবে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণসহ দেশের সব সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সব সরকারি-বেসরকারি ভবন এবং বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনগুলোতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। নিহতদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনার জন্য বাংলাদেশের সব মসজিদে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানেও বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে