হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাসেবা প্রদানে হয়রানি ও অবহেলাসহ নানাবিধ অনিয়মের অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)
গতকাল মঙ্গলবার অভিযানকালে দুদক সরেজমিনে দেখতে পায় হাসপাতালের ইমার্জেন্সী বিভাগে ডাক্তারের পরিবর্তে মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট দিয়ে সেবা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও দুদক টিম বিভিন্ন ওয়ার্ড পরিদর্শন করে রোগীদের সাথে কথা বলে সেবার মান ও খাবার মান যাচাই করে।
দুদক টিম জানতে পারন, উক্ত স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্যাথলজি বিভাগে ব্লাড, ইউরিন ইত্যাদি স্বল্প কিছু টেস্ট করা হয়, যা সেবা প্রার্থীদের সংখ্যার তুলনায় অপ্রতুল। উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে চিকিৎসা সেবা, খাবারের মান আরো উন্নত ও সার্বিক বিষয়ে নজরদারি করার জন্য টিম কর্তৃক পরামর্শ প্রদান করা হয়।
অভিযানকালে অন্যান্য অভিযোগের বিষয়ে রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করা হয়, যা পর্যালোচনাপূর্বক টিম কমিশন বরাবর বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করবে। রোগীদের চাপ থাকলেও নেই পর্যাপ্ত চিকিৎসক।
দালালের কারনে প্রতি মুহূর্তে নানা ধরনের হয়রানির শিকার হতে হয় চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনদের।
উপজেলার পাঁচ লক্ষাধিক মানুষের জন্য চারজন চিকিৎসক যেমন যথেষ্ট নয়, তেমনি যারা দায়িত্বে আছেন তাদেরও কিছুই করার থাকেনা। তাই রোগীদের পাঠিয়ে দেওয়া হয় কর্তাগণের প্রাইভেট চিকিৎসা কেন্দ্রে।
উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভাসহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন উপজেলার মানুষ চিকিৎসা নিতে আসে এ হাসপাতালে। প্রতিদিন এ হাসপাতালে ৫ শতাধিক মানুষ চিকিৎসা নিতে এসে বঞ্চিত হন প্রায় এক তৃতীয়াংশ মানুষ।
চিকিৎসক ও চিকিৎসা সরঞ্জামের সংকট থাকায় ঠিকমতো সেবা দিতে পারছেননা বলে দাবি কর্তৃপক্ষের। তারা বলেন পর্যাপ্ত জনবল ও ঔষধ ও সরঞ্জাম দিলে হয়তো সেবা নিশ্চিত করা যেতো।
তাই রোগীদের বাধ্য হয়েই স্থানান্তর করা হয় জেলা সদর হাসপাতাল বা সিলেট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। তারা আরও জানান স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে দীর্ঘ সাত মাস ধরে প্রয়োজনীয় ঔষধ ও চিকিৎসাসামগ্রীর সরবরাহ নেই। এতে চিকিৎসক ও নার্সরা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন।
হাসপাতালের বাইরে চিকিৎসা নিতে গিয়ে চাপে পড়ছেন স্বল্প আয়ের মানুষ। সরকারিভাবে ক্যানুলা ও সিরিঞ্জ সরবরাহ কম হওয়ায় রোগীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।