আজ নুহা-নাবার ছুটি, তারা এখন আলাদা...

প্রকাশ | ১০ নভেম্বর ২০২৪, ১০:০৭

যাযাদি রিপোর্ট
ছবি: সংগৃহীত

৩১ মাস পর আজ ছাড়পত্র পাচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আলাদা হওয়া জোড়া শিশু নুহা-নাবা। এই দুই শিশুর আরও একটি করে অপারেশন বাকি আছে। এই অপারেশন করবে শিশু সার্জারি বিভাগ। ৩১ মাস সাত দিন হাসপাতাল থেকে আলাদা হয়ে দুটি শিশু বাড়ি ফিরবে। 

শিশু দুটির পরিবার বলছে, নুহা-নাবার চিকিৎসা খরচ মেটানোর কথা ছিল সাবেক প্রধানমন্ত্রীর। তার পদত্যাগের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসন এসে একটি অপারেশন বাকি রেখে ছুটি দিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় আগের প্রশাসন যেখানে বিনামূল্যে চিকিৎসার দিচ্ছিল, সেখানে নতুন প্রশাসন কেবিনের ভাড়া ভাড়া বাবদ ২১ লাখ ৮৫ হাজার ৫০০ টাকা পরিশোধের জন্য চাপ দিচ্ছেন। 

সরেজমিন শনিবার দুপুরে হাসপাতালের কেবিন ব্লকে ৬১৮ নম্বর কক্ষে নুহা-নাবার বাবা ও মায়ের সঙ্গে কথা বলে এমন সব তথ্য পাওয়া গেছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) শিশু সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. এ কে এম জাহিদ হোসেন যায়যায়দিনকে বলেন, ‘শিশু দুটির চিকিৎসা মোটামুটি শেষ পর্যায়ে। এখনো একটি অপারেশন বাকি আছে। সেটা পরে করতে হবে। ওই অপারেশন করতে সময় লাগবে। অনেক দিন ধরে হাসপাতালে আছে। নিউরো সার্জারি বিভাগ থেকে ছুটি হয়ে গেছে। আমাদের বিভাগ থেকে রোববার ছুটি দিব। তাহলে তারা বাড়ি চলে যেতে পারবে।’

নুহা-নাবার বাবা আলমগীর হোসেন যায়যায়দিনকে বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার কেবিন ভাড়া মওকুফের জন্য আবেদন পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) শাখায় জমা দেওয়ার পর সেটা শনিবার দুপুরে ফেরত দিয়েছে। পরে ভিসি অফিস গেলে সেখান থেকে বলা হয়েছে, রোববার সকালে ভিসি স্যারের সুপারিশ নিয়ে পরিচালক হাসপাতালের কাছে জমা নিতে। এখনো কোনো সমাধান পাইনি।’   
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান যায়যায়দিনকে বলেন, ‘দীর্ঘদিনের কেবিন ভাড়া বকেয়া। অনেক টাকা পরিশোধ করা হচ্ছে না। দিন দিন বকেয়া আরও বাড়ছে। সেটা সমাধান করতে কাজ করছে হাসপতাল কর্তৃপক্ষ। তারা এটি কীভাবে সমাধান করবে বা করছে, সেটা আমাকে এখনো জানায়নি। আমি এর বেশি কিছু বলতে পারব না।’      

নুহা-নাবার বাবা আলমগীর হোসেন বলেন, ‘সরকার পরিবর্তনের পর থেকেই বাচ্চা দুটির চিকিৎসা নিয়ে সমস্যা হচ্ছে। এখন হাসপাতাল থেকে ছুটি দিয়ে দিচ্ছে। অথচ বাচ্চা দুটি এখনো সুস্থ হয়নি। ‘আমাদের ছুটি দিক, অসুবিধা নেই। কিন্তু পরে যেন হাসপাতালে ভর্তি করাতে পারি ও অপারেশনটা যেন সঠিক সময় হয়।’

তিনি বলেন, ‘শিশুর প্রস্রাব ও পায়খানার রাস্তায় যে অপারেশন হয়েছে, সেখানে এখনো শুকায়নি, ঘা আছে। কী করব বুঝতে পারছি না। কুড়িগ্রামের গ্রামের বাড়িতে থাকি না আড়াই বছর। সেখানকার পরিবেশে বাচ্চাগুলোকে কী সুস্থ রাখা যাবে। সেই ভয় পাচ্ছি।’

বিএসএমএমইউ ও নুহা-নাবার পরিবার সূত্রে জানা যায়, জোড়া লাগানো শিশু নুহা-নাবাকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আলাদা করাসহ সামগ্রিক চিকিৎসায় হাসপাতালের ব্যয় হয়েছে ৪০ লাখ ১৭ হাজার ৪৫৮ টাকা। আর শিশু দুটির পরিবারের ব্যক্তিগতভাবে ব্যয় হয়েছে ১০ লাখ টাকা। সব মিলে গত আড়াই বছরে শিশু দুটির চিকিৎসায় ব্যয় হয়েছে অর্ধকোটি টাকার বেশি। 

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন, ২০২২ সালের ৪ ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের ৭ নভেম্বর পর্যন্ত এই ৭০৫ দিনে কেবিন ভাড়া দৈনিক তিন হাজার ১০০ টাকা হিসাবে ২১ লাখ ৮৫ হাজার ৫০০ টাকা। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরো সার্জারি বিভাগ জোড়া শিশু নুহা-নাবার অস্ত্রোপচারে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অগ্রিম নিয়েছে ১০ লাখ টাকা। এ বছরের ৯ জানুয়ারি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেনের নামে এই টাকা নেওয়া হয়। কিন্তু এখনো সেই টাকা হিসাবে সমন্বয় করা হয়নি। এ ছাড়া ছয় লাখ ৩১ হাজার ৯৫৮ টাকা ব্যয় হয়েছে হাসপাতালের ফার্মেসি থেকে শিশু দুটির ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম বাবদ। আরও দুই লাখ টাকা খরচ হয়েছে হাসপাতাল পরিচালক কার্যালয় থেকে। এর মধ্যে ৫০ হাজার টাকা সমন্বয় করা হয়েছে। বাকি আছে দেড় লাখ টাকা। 

নুহা-নাবার বাবা আলমগীর হোসেন বলেন, ‘ভর্তির পর আমরা প্রথম আট মাস হাসপাতালের মহিলা ওয়ার্ডে ছিলাম। তখন আমাদের পাঁচ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। পরে কেবিনে ছিলাম ২৩ মাস। এ সময় খরচ হয়েছে আরও পাঁচ লাখ টাকা। সব মিলে ১০ লাখ টাকার বেশি খরচ হয়েছে। এর মধ্যে আমি, আমার মা ও ছেলে। আমাদের তিনজনের তিনবেলা খাবার বাইরে থেকে কিনতে হতো। রোগীর পথ্য লাগত। শিশু দুটিকে হাসপাতাল থেকে যে দুধ দিত, তা দিয়ে হতো না। অতিরিক্ত দুধ কিনতে হতো।’ 

২০২২ সালের ১ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ নুহা-নাবার অস্ত্রোপচার ও চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের বৈঠক জানান, যাবতীয় খরচ তখনকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বহন করবেন। সে অনুযায়ী বিনামূল্যে চিকিৎসার উদ্যোগ নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

গত বছর ১৯ ফেব্রুয়ারি বিএসএমএমইউর চিকিৎসকরা জটিল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আলাদা করেন জোড়া লাগানো শিশু নুহা ও নাবাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জারি অনুষদের ডিন ও নিউরো সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেনের নেতৃত্বে সকাল ৯টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ১৫ ঘণ্টার অস্ত্রোপচারে অংশ নেন ৩৯ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ মেডিকেল টিমের শতাধিক সদস্য। সেই থেকে বাবা-মার সঙ্গে হাসপাতালের কেবিন ব্লকে ৬১৮ নম্বর কক্ষে রয়েছে শিশু দুটি। 

জন্মের ১৪ দিনের মাথায় ২০২২ সালের ৪ এপ্রিল নুহা ও নাবাকে এই হাসপাতালে নিয়ে আসেন তার বাবা-মা। বাবা আলমগীর হোসেন রানা একজন পরিতৃণ শ্রমিক। মা নাসরিন আক্তার গৃহবধূ। বাড়ি কুড়িগ্রাম সদরে। এটা তাদের দ্বিতীয় সন্তান। প্রথম সন্তান একটা ছেলে। বয়স ১০ বছর। তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। ওর আট বছর বয়সে নুহা-নাবার জন্ম হয়। দুই বছর ধরে সেই ছেলেও সবার সঙ্গে হাসপাতালেই আছে।


যাযাদি/ এস


যাযাদি রিপোর্ট

৩১ মাস পর আজ ছাড়পত্র পাচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আলাদা হওয়া জোড়া শিশু নুহা-নাবা। এই দুই শিশুর আরও একটি করে অপারেশন বাকি আছে। এই অপারেশন করবে শিশু সার্জারি বিভাগ। ৩১ মাস সাত দিন হাসপাতাল থেকে আলাদা হয়ে দুটি শিশু বাড়ি ফিরবে। 

শিশু দুটির পরিবার বলছে, নুহা-নাবার চিকিৎসা খরচ মেটানোর কথা ছিল সাবেক প্রধানমন্ত্রীর। তার পদত্যাগের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসন এসে একটি অপারেশন বাকি রেখে ছুটি দিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় আগের প্রশাসন যেখানে বিনামূল্যে চিকিৎসার দিচ্ছিল, সেখানে নতুন প্রশাসন কেবিনের ভাড়া ভাড়া বাবদ ২১ লাখ ৮৫ হাজার ৫০০ টাকা পরিশোধের জন্য চাপ দিচ্ছেন। 

সরেজমিন শনিবার দুপুরে হাসপাতালের কেবিন ব্লকে ৬১৮ নম্বর কক্ষে নুহা-নাবার বাবা ও মায়ের সঙ্গে কথা বলে এমন সব তথ্য পাওয়া গেছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) শিশু সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. এ কে এম জাহিদ হোসেন যায়যায়দিনকে বলেন, ‘শিশু দুটির চিকিৎসা মোটামুটি শেষ পর্যায়ে। এখনো একটি অপারেশন বাকি আছে। সেটা পরে করতে হবে। ওই অপারেশন করতে সময় লাগবে। অনেক দিন ধরে হাসপাতালে আছে। নিউরো সার্জারি বিভাগ থেকে ছুটি হয়ে গেছে। আমাদের বিভাগ থেকে রোববার ছুটি দিব। তাহলে তারা বাড়ি চলে যেতে পারবে।’

নুহা-নাবার বাবা আলমগীর হোসেন যায়যায়দিনকে বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার কেবিন ভাড়া মওকুফের জন্য আবেদন পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) শাখায় জমা দেওয়ার পর সেটা শনিবার দুপুরে ফেরত দিয়েছে। পরে ভিসি অফিস গেলে সেখান থেকে বলা হয়েছে, রোববার সকালে ভিসি স্যারের সুপারিশ নিয়ে পরিচালক হাসপাতালের কাছে জমা নিতে। এখনো কোনো সমাধান পাইনি।’   
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান যায়যায়দিনকে বলেন, ‘দীর্ঘদিনের কেবিন ভাড়া বকেয়া। অনেক টাকা পরিশোধ করা হচ্ছে না। দিন দিন বকেয়া আরও বাড়ছে। সেটা সমাধান করতে কাজ করছে হাসপতাল কর্তৃপক্ষ। তারা এটি কীভাবে সমাধান করবে বা করছে, সেটা আমাকে এখনো জানায়নি। আমি এর বেশি কিছু বলতে পারব না।’      

নুহা-নাবার বাবা আলমগীর হোসেন বলেন, ‘সরকার পরিবর্তনের পর থেকেই বাচ্চা দুটির চিকিৎসা নিয়ে সমস্যা হচ্ছে। এখন হাসপাতাল থেকে ছুটি দিয়ে দিচ্ছে। অথচ বাচ্চা দুটি এখনো সুস্থ হয়নি। ‘আমাদের ছুটি দিক, অসুবিধা নেই। কিন্তু পরে যেন হাসপাতালে ভর্তি করাতে পারি ও অপারেশনটা যেন সঠিক সময় হয়।’

তিনি বলেন, ‘শিশুর প্রস্রাব ও পায়খানার রাস্তায় যে অপারেশন হয়েছে, সেখানে এখনো শুকায়নি, ঘা আছে। কী করব বুঝতে পারছি না। কুড়িগ্রামের গ্রামের বাড়িতে থাকি না আড়াই বছর। সেখানকার পরিবেশে বাচ্চাগুলোকে কী সুস্থ রাখা যাবে। সেই ভয় পাচ্ছি।’

বিএসএমএমইউ ও নুহা-নাবার পরিবার সূত্রে জানা যায়, জোড়া লাগানো শিশু নুহা-নাবাকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আলাদা করাসহ সামগ্রিক চিকিৎসায় হাসপাতালের ব্যয় হয়েছে ৪০ লাখ ১৭ হাজার ৪৫৮ টাকা। আর শিশু দুটির পরিবারের ব্যক্তিগতভাবে ব্যয় হয়েছে ১০ লাখ টাকা। সব মিলে গত আড়াই বছরে শিশু দুটির চিকিৎসায় ব্যয় হয়েছে অর্ধকোটি টাকার বেশি। 

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন, ২০২২ সালের ৪ ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের ৭ নভেম্বর পর্যন্ত এই ৭০৫ দিনে কেবিন ভাড়া দৈনিক তিন হাজার ১০০ টাকা হিসাবে ২১ লাখ ৮৫ হাজার ৫০০ টাকা। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরো সার্জারি বিভাগ জোড়া শিশু নুহা-নাবার অস্ত্রোপচারে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অগ্রিম নিয়েছে ১০ লাখ টাকা। এ বছরের ৯ জানুয়ারি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেনের নামে এই টাকা নেওয়া হয়। কিন্তু এখনো সেই টাকা হিসাবে সমন্বয় করা হয়নি। এ ছাড়া ছয় লাখ ৩১ হাজার ৯৫৮ টাকা ব্যয় হয়েছে হাসপাতালের ফার্মেসি থেকে শিশু দুটির ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম বাবদ। আরও দুই লাখ টাকা খরচ হয়েছে হাসপাতাল পরিচালক কার্যালয় থেকে। এর মধ্যে ৫০ হাজার টাকা সমন্বয় করা হয়েছে। বাকি আছে দেড় লাখ টাকা। 

নুহা-নাবার বাবা আলমগীর হোসেন বলেন, ‘ভর্তির পর আমরা প্রথম আট মাস হাসপাতালের মহিলা ওয়ার্ডে ছিলাম। তখন আমাদের পাঁচ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। পরে কেবিনে ছিলাম ২৩ মাস। এ সময় খরচ হয়েছে আরও পাঁচ লাখ টাকা। সব মিলে ১০ লাখ টাকার বেশি খরচ হয়েছে। এর মধ্যে আমি, আমার মা ও ছেলে। আমাদের তিনজনের তিনবেলা খাবার বাইরে থেকে কিনতে হতো। রোগীর পথ্য লাগত। শিশু দুটিকে হাসপাতাল থেকে যে দুধ দিত, তা দিয়ে হতো না। অতিরিক্ত দুধ কিনতে হতো।’ 

২০২২ সালের ১ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ নুহা-নাবার অস্ত্রোপচার ও চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের বৈঠক জানান, যাবতীয় খরচ তখনকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বহন করবেন। সে অনুযায়ী বিনামূল্যে চিকিৎসার উদ্যোগ নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

গত বছর ১৯ ফেব্রুয়ারি বিএসএমএমইউর চিকিৎসকরা জটিল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আলাদা করেন জোড়া লাগানো শিশু নুহা ও নাবাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জারি অনুষদের ডিন ও নিউরো সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেনের নেতৃত্বে সকাল ৯টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ১৫ ঘণ্টার অস্ত্রোপচারে অংশ নেন ৩৯ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ মেডিকেল টিমের শতাধিক সদস্য। সেই থেকে বাবা-মার সঙ্গে হাসপাতালের কেবিন ব্লকে ৬১৮ নম্বর কক্ষে রয়েছে শিশু দুটি। 

জন্মের ১৪ দিনের মাথায় ২০২২ সালের ৪ এপ্রিল নুহা ও নাবাকে এই হাসপাতালে নিয়ে আসেন তার বাবা-মা। বাবা আলমগীর হোসেন রানা একজন পরিতৃণ শ্রমিক। মা নাসরিন আক্তার গৃহবধূ। বাড়ি কুড়িগ্রাম সদরে। এটা তাদের দ্বিতীয় সন্তান। প্রথম সন্তান একটা ছেলে। বয়স ১০ বছর। তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। ওর আট বছর বয়সে নুহা-নাবার জন্ম হয়। দুই বছর ধরে সেই ছেলেও সবার সঙ্গে হাসপাতালেই আছে।


যাযাদি/ এস