বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১

গরমে আনারস খাওয়ার যত উপকার

প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন
  ৩০ জুন ২০২৪, ১৭:০১
ছবি-সংগৃহিত

এই গরমে আনারসের জুস করে খেতে পারেন। কারণ আনারসের জুস স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ উপকারী। এটি ইমিউনিটি বা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। গরমের এই সময়টায় রাস্তার পাশে, হাটবাজারে, শহরের অলিগলিতে আনারস বেশ সহজলভ্য। এই রসালো ফলটি দেহের জন্যও খুব উপকারী। গ্রীষ্মে প্রতিদিনই বাড়ছে রোদের তীব্রতা, সেই সঙ্গে বাড়ছে রোগবালাই। গরম থেকে হঠাৎ করেই ছোট বড় সবারই হতে পারে জ্বর, সর্দি-কাশি, বুকে কফ জমার মতো সমস্যাগুলো। অবাক করার মতো হলেও সত্যি, এসব রোগ উপশমে আনারস খুব ভালো কাজ করে।

পুষ্টিগুণে ভরপুর ফল হচ্ছে আনারস। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ এবং সি, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ফসফরাস, থিয়ামিন, রাইবেফ্লাভিন, ভিটামিন বি-৬, ফোলেট, প্যান্টোথেনিক এসিড, ম্যাগনেশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট ও বিটা ক্যারোটিন আছে। যা জ্বর, সর্দি-কাশি, বুকে কফ জমা সারাতে ভালো কাজ করে।

এ ছাড়া হৃদরোগসহ বিভিন্ন ধরনের ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়তে আনারসের থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপকারী। আনারস হৃদরোগসহ বিভিন্ন ধরনের ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়তে আনারসের থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপকারী আনারসের খোসা ছাড়িয়ে ছোট ছোট করে কেটে ফ্রুট জুসারের সাহায্যে রস তৈরি করে নিন।

এবার একটি কাপের অর্ধেক পর্যন্ত আনারসের রস নিয়ে তাতে এক চামচ মধু মিশিয়ে নেবেন। এই মিশ্রণ নিয়মিত খেলে সহজেই কাশি থেকে মুক্তি মিলবে। আনারসের রসের সঙ্গে মধু, লবণ ও সামান্য গোলমরিচের গুঁড়া মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করে নিন। দিনে তিনবার খেলে, ২ থেকে ৩ দিনের মধ্যে উপকার পাবেন। সর্দি-কাশি, বুকে শ্লেষ্মা বা কফ জমা কমবে।

আনারস জুসের অন্যান্য পুষ্টিগুণ। পুষ্টির অভাব দূর করে আনারসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ এবং সি, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও ফসফরাস। এসব উপাদান দেহের পুষ্টির অভাব পূরণ করে। যারা ওজন কমাতে চান, তারা নিয়মিত আনারসের জুস খেতে পারেন। এতে প্রচুর ফাইবার ও কম ক্যালরি আছে। জুসের পাশাপাশি আনারস দিয়ে সালাদ তৈরি করেও খেতে পারেন। আনারসের জুসে আছে ক্যালসিয়াম ও ম্যাঙ্গানিজের বড় উৎস। এটি হাড় মজবুত করে। প্রতিদিন এক গস্ন্যাস করে আনারসের জুস পান করলে হাড়ের সমস্যাজনিত যে কোনো রোগ প্রতরোধ করা সম্ভব।

গরমের কারণে হওয়া জ্বরজারি, সর্দি-কাশি, বুকে কফ জমা থেকে রক্ষা করে আনারস গরমের কারণে হওয়া জ্বরজারি, সর্দি-কাশি, বুকে কফ জমা থেকে রক্ষা করে আনারস। দাঁতের মাড়ি শক্ত করতে এবং দাঁত শক্ত করতেও প্রতিদিন এক গস্নাস আনারসের জুস পান করতে পারেন।

মূলত আনারসে থাকা ক্যালসিয়াম দাঁতের সুরক্ষায় কাজ করে। দাঁতে জীবাণুর আক্রমণ কমাতে এবং দাঁত ঠিক রাখতে আনারসের জুস ভীষণ উপকারী। আনারসের জুস ম্যাকু্যলার ডিগ্রেডেশন হওয়া থেকে রক্ষা করে। এ রোগটি চোখের রেটিনা নষ্ট করে দিতে পারে এবং ধীরে ধীরে অন্ধত্বের দিকে ঠেলে দেয়। আনারসে আছে বেটা ক্যারোটিন। প্রতিদিন আনারসের জুস খেলে এ রোগ হওয়ার সম্ভাবনা ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়।

বদহজম বা হজমজনিত যে কোনো সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে আনারসের জুস পান করতে পারেন। বদহজম বা হজমজনিত যে কোনো সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ইফতারে আনারসের জুস পান করতে পারেন।আনারসের জুস হজমশক্তি বৃদ্ধি করতে বেশ কার্যকরী। আনারসে আছে ব্রোমেলিন- যা হজমশক্তিকে উন্নত করতে সাহায্য করে।

বদহজম বা হজমজনিত যে কোনো সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ইফতারে আনারসের জুস পান করতে পারেন। দেহে রক্ত জমাট বাঁধতে দেয় না আনারসের জুস। ফলে হৃৎপিন্ড শরীরে অক্সিজেনযুক্ত রক্ত সরবরাহ করতে পারে খুব সহজে। আনারস রক্ত পরিষ্কার করে হৃৎপিন্ডকে কাজ করতে সাহায্য করে।

আনারস রসালো ও তৃপ্তিকর সুস্বাদু ফল। ফলটিতে আঁশ ও ক্যালোরি ছাড়াও প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস এবং পটাশিয়াম থাকে। কলস্টেরল ও চর্বিমুক্ত বলে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এর জুড়ি নেই। আনারস মিষ্টি, রসালো ও তৃপ্তিকর সুস্বাদু ফল যা মানব দেহের জন্য অনেক উপকারি।

পুষ্টিগুণে ভরপুর ফলের নাম আনারস। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ এবং সি, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও ফসফরাস রয়েছে। আমাদের হজমশক্তি বৃদ্ধি করতেও আনারসের জুড়ি নেই। আনারসে ব্রোমেলিন নামক এনজাইম থাকে- যা হজমশক্তিকে উন্নত করতে সাহায্য করে। তাই বদহজম বা হজমজনিত যে কোনো সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে আনারস খাওয়া যেতে পারে। ভাইরাসজনিত ঠান্ডা ও কাশি প্রতিরোধ করে।

আনারসে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার বা আঁশ থাকে। এছাড়া এতে কোনো ফ্যাট না থাকায় পরিমিত পরিমাণে আনারস খেলে বা আনারসের জুস পান করলে তা শরীরের ওজন কমাতে সহায়ক হতে পারে। আনারস তাই আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণের পথ্য হতে পারে। দেহে রক্ত জমাট বাঁধতে বাধা দেয় এই ফল। ফলে শিরা-ধমনির মধ্য দিয়ে সারা শরীরে সঠিকভাবে রক্ত প্রবাহিত হতে পারে।

আনারসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি- যা আমাদের শক্তির জোগান দেয়। এতে থাকা প্রোটিন ত্বকের মৃত কোষ দূর করে, ত্বককে কুঁচকে যাওয়া থেকে বাঁচায়। এছাড়া দেহের তৈলাক্ত ত্বক, ব্রণসহ সব রূপলাবণ্যে আনারসের যথেষ্ট কদর রয়েছে।

ক্রিমিনাশক হিসেবে আনারসের রস ভালো কাজ করে। নিয়মিত আনারসের রস খেলে কয়েকদিনের মধ্যেই কৃমির উৎপাত বন্ধ হয়ে যায়। কৃমি দূর করতে সকালবেলায় ঘুম থেকে জেগে খালি পেটে আনারস খাওয়া উচিত। আনারস একটি এসিডিক ফল। তাই খালি পেটে ফলটি খেলে পেটে প্রচন্ড ব্যথার হতে পারে।

আনারস আর দুধ এক সঙ্গে খাওয়া যায় না, এটি একটি কুসংস্কার। এখন পর্যন্ত আনারস এবং দুধের মাঝে এমন কোনো রাসায়নিক বিষ ক্রিয়া খুঁজে পাওয়া যায়নি- যার ফলে, এদের এক সঙ্গে খেলে সেটা মানুষের জীবনহানি করবে।

রক্ত তরল করার জন্য যে ওষুধ বানানো হয় তাতে আনারস ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই ফল দেহে রক্ত জমাট বাঁধার প্রক্রিয়াতে বাধা প্রদান করে থাকে। তাই যাদের আনারস খেলে এ সব সমস্যায় ভুগেন তারা অবশ্যই আনারস থেকে দূরে থাকবেন। পুষ্টিসাধনসহ দেহকে সুস্থ রাখতে আনারস একটি অতুলনীয় ও কার্যকরী ফল। এটি দামেও সস্তা এবং সহজলভ্য।

এ ছাড়া এর বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় যে কোনো একটি ফল থাকলে মন্দ হয় না। তাই চাইলেই প্রতিদিনের খাবারে আনারস রাখা যেতেই পারে। স্বাদে অতুলনীয় রসে ভরা আনারস প্রায় সব মানুষেরই পছন্দের একটি ফল। আনারস খেলে যেমন মুখের রুচি বাড়ে তেমনি এই ফলের রয়েছে নানা পুষ্টিগুণ।

যাযাদি/ এম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
X
Nagad

উপরে