শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

নানা সমস্যায় জর্জরিত আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

জাহাঙ্গীর আলম, আনোয়ারা (চট্টগ্রাম
  ১৮ নভেম্বর ২০২০, ১৭:৪৩
আপডেট  : ১৮ নভেম্বর ২০২০, ১৮:২৮

জন্ম থেকে শূণ্য গাইনী ও শিশু বিভাগ, সার্জারী, মেডিসিন, অর্থো, ই.এন.টি. এ্যানেসথেসিয়া, চক্ষু’র মতো গুরুত্ব পূর্ণ পদে শূণ্যতা দীর্ঘদিনের, তিন চিকিৎসক প্রেষণে, এক জন দিল ইস্তাফা, আরেকজন ওএসডি, অবসর প্রাপ্ত চিকিৎসক দিয়েই ১ বছর ধরে চলছে ইমার্জেন্সি বিভাগ এ ভাবে নিজেই রোগে জর্জরিত হয়ে চলছে চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা সেবা। এক্স-রে যন্ত্র,ডেন্টাল ও ল্যাব অচল অবস্থায়ই নষ্ট হয়েছে অনেক আগেই। যাত্রা শুরুর পর কখনো হয়নি জটিল অস্ত্রোপচার ও প্রসূতিদের সিজারিয়ান অপারেশন। ২৪ টি চিকিৎসকের পদ থাকলেও কাগজে-কলমে ১১ কর্মরত আছেন। ৫০ শয্যার হাসপাতালে প্রতিদিন ১৫০ রোগী চিকিৎসার জন্য আসে। চিকিৎসা পেতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় তাদের। প্রয়োজনীয় জনবল সংকটে উপজেলার প্রায় চার লাখ লোকের স্বাস্থ্যসেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানাযায়, আনোয়ারায় ৫০ শয্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে চিকিৎসকের পদ রয়েছে ২৪ টি। এখানে বর্তমানে কর্মরত রয়েছে ১১ জন চিকিৎসক। বাকি ৮ টি পদ শূণ্য, ৩টিতে প্রেষণে, ১ জন ও.এস.ডি, ১ জন চাকরী থেকে ইস্তাফায় গেছে। যারা আছেন তাদের মধ্যে অনেকেই ব্যক্তিগত কারন দেখিয়ে ছুটিতে থাকেন। বাকি চিকিৎসকরা পর্যায়ক্রমে রাতে ও দিনে দায়ীত্ব পালন করছেন। ফলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে চিকিৎসক সংকট রয়েছে দীর্ঘদিন যাবৎ, চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। প্রতি দিন বর্হিবিভাগে ১৫০-২০০ রোগী আসে চিকিৎসানিতে। চিকিৎসক সংকটের কারণে প্রতিনিয়ত ভোগান্তিতে পড়ছে রোগীরা। জনবল সংকটের কারণে উপজেলার প্রায় চার লাখ লোকের স্বাস্থ্যসেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা।

স্থানীয় বাসিন্দা এসএম.মহিউদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, কিছু বড়ি দেওয়া ছাড়া তেমন কোন চিকিৎসা নেই এ হাসপাতালে। রোগীদের এক্স-রে করাতে হয় বাইরে থেকে। দুর্ঘটনায় আহত রোগী আনা হলে পাঠিয়ে দেওয়া হয় নগরীর চমেক হাসপাতালে। এ ছাড়া প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক না থাকায় রোগীদের দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে চিকিৎসা নিতে হয়।

জানাযায়, বিদ্যুতের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হাসপাতালের জেনারেটরটি নষ্ট অনেক দিন ধরে, এক্সরে মেশিনটি কখন ব্যবহার করেছে জানা নেই, গাইনী ড়াক্তার ও এ্যানেসথেসিষ্ট ড়াক্তার না থাকায় গর্ববতী মায়েদের সিজারিয়ান অপারেশন কার্যক্রম সম্প‚র্ণ বন্ধ রয়েছে। রোগীদের অতি প্রয়োজনীয় এক্স-রে ও সাধারণ পরীক্ষাগুলো বাইরে থেকেই অধিক মূল্যে করতে হচ্ছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখাযায়, বর্হিবিভাগে টিকিট কেটে রোগীরা তিনটি কক্ষের সামনে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়েআছে, চিকিৎসক ভিতর থেকে ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছেন। অপারেশন থিয়েটার (ওটি) থাকলেও তা অযত্নে পড়ে আছে। সেটা জরুরী প্রসূতি রোগীদের কোনো কাজে আসছে না। রোগীর এক্সেরে কিংবা অন্য কিছু করতে হলে বাইরের ডাইয়াগনেষ্টিক সেন্টারে ছুটছে রোগীর স্বজনরা। চিকিৎসা সেবা না পেয়ে রোগীরা অন্যত্র চলে যাচ্ছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবু জাহেদ মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন ডাক্তার সংকটের কথা স্বীকার করে জানান, এই বিষয়ে উর্ধতন কৃর্তপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে । ডাক্তার সংকট সমাধান হলে সমস্যা হবেনা বলে তিনি জানান।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে