শুরু করা যাক হালের অন্যতম দর্শকনন্দিত অভিনেতা ও সংগীতশিল্পী তাহসান খানকে দিয়েই। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের ফলে বুধবার থেকে ঈদ নাটকের শুটিং বন্ধ করে দিয়েছেন তিনি। আগামী দুই থেকে তিন সপ্তাহ কোনো ধরনের শুটিংয়ে অংশ নেবেন না বলে জানান এ তারকা। এই অবসর সময়টুকু কাটাবেন নিজ বাসায়। সময় দেবেন পরিবারের লোকজনকে। জানা গেছে, কদিন ধরেই সবার কাছে থেকে দূরে দূরে থাকছেন তিনি। কারও সঙ্গে করমর্দনও করছেন না তাহসান। করোনাভাইরাস আগামী দিনে কী প্রভাব ফেলে, সেটার ওপর নির্ভর করেই এগোতে চান এই তারকা। তা ছাড়া ব্যক্তিগত কিছু কাজ আছে- যা এতদিন ধরে করবেন করবেন বলেও করা হয়নি, সেসব সারবেন।
এ বিষয় তাহসান বলেন, 'এই মুহূর্তে সবাই একসঙ্গে বাইরে বের হলে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাবে। কাজ ছাড়া যতটা সম্ভব বাইরে বের না হওয়াই ভালো। যদিও অনেকের প্রয়োজনীয় কাজ থাকে, সবাই বাইরে বের হওয়া থেকে বিরত থাকতে পারবেন না। তবে চেষ্টা করতে হবে। যতটুকু পারা যায় সতর্ক থাকতে হবে। সবাইকে যার যার জায়গা থেকে সতর্ক হতে হবে। প্রয়োজনে কিছুদিন ঘরে থাকতে হবে। আমি আমার জায়গা থেকে নাটকের শুটিং করছি না। আমার মনে হয়েছে এই মুহূর্তে পরিস্থিতি বিবেচনা করে সবারই কিছুদিন ঘর থেকে বাইরে বের না হওয়া উচিত।'
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী সাদিকা পারভীন পপিও করোনাভাইরাসের জন্য আপতত কোনো চলচ্চিত্রের শিডিউল দিচ্ছেন না। অবস্থার উন্নতি হলে কাজে ফিরবেন। ফলে হাতে পেয়েছেন বেশ কিছুদিন। আর অবসর এই সময়টুকু পরিবার পরিজনদের সঙ্গে কাটাতে গত শুক্রবার গেছেন খুলনায়, নিজ বাড়িতে। এ বিষয় পপি বলেন, 'করোনার কারণে আপাতত শুটিং বন্ধু রেখেছেন। তাই গ্রামের বাড়ি এসেছেন। এখানে পরিবারের সদস্য ও ছেলেবেলার কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে জমিয়ে আড্ডা মারছি। যদিও আমরা প্রত্যেকেই করোনাভাইরাস প্রতিরোধ করতে নিয়ম অনুযায়ী সর্তকতা গ্রহণ করেছি।'
করোনা আতঙ্কে ছোট পর্দার প্রিয়মুখ সাফা কবিরেরও বেশ কিছু শুটিং ও শো স্থগিত হয়েছে। এ বিষয় সাফা বলেন, 'বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের কারণে সবার মতো আমিও সতর্কতা অবলম্বন করেছি। এর মধ্যে আমার বেশ কয়েকটি শো স্থগিত করেছি। ভারতীয় একটি বিজ্ঞাপনের শুটিং ছিল, আপতত সেখানেও অংশগ্রহণ করছি না। ফলে হাতে কিছু সময় পেয়েছি। এই সময়টাতে বাসা থেকে বের হচ্ছি না। আমার সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, আমার বেশিরভাগ আত্মীয়রা, একই বিল্ডিংয়ে থাকে। ফলে এই অবসর সময়ে সবার সঙ্গে আড্ডা দেওয়া হয়।'
বড় পর্দার প্রিয়মুখ চিত্রনায়িকা পূর্ণিমা। দুটি চলচ্চিত্রের কাজ নিয়ে ব্যস্ততা থাকলেও করোনাভাইরাসের কারণে সেসব আপতত বন্ধ রাখা হয়েছে। এ বিষয় পূর্ণিমা বলেন, 'গাঙচিল' সিনেমার জন্য এই মাসে কিছু ডেট দেওয়া ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাস আতঙ্কে সেগুলোও বাতিল হয়েছে। সম্ভবত আগামী মাস থেকে আবার সেটার কাজ করব।' করোনাভাইরাসের কারণে চলচ্চিত্রের শুটিং বন্ধ থাকায় তিনি বেশ কয়েকটি বিজ্ঞাপন চিত্রে কাজ করেছেন। তবে বিজ্ঞাপনগুলোর শুটিং সেটে সুরক্ষা ব্যবস্থা ছিল।'
আলোচিত খলনায়ক তাসকিন রহমান। তিনিও করোনা আতঙ্কে আপাতত চলচ্চিত্রের শুটিং বন্ধ রেখেছেন। এ বিষয়ে তাসকিন বলেন, ' আপাতত কোনো শুটিংয়ে অংশ নিচ্ছি না। বাসাতেই থাকার চেষ্টা করছি। তবে অনেক সময় চাইলেও ঘরে বসে থাকা যায় না। ফলে বাধ্য হয়ে বের হতে হচ্ছে। চলচ্চিত্রের শুটিং না থাকায় এ কয়েকটি ইন্ডোর ফটোশুটে অংশ নিয়েছি। বাদবাকি সময় আমার স্ত্রীর সঙ্গে কাটাচ্ছি। অবস্থা স্বাভাবিক হলে আবারও চলচ্চিত্রে শুটিংয়ে ফিরব। বর্তমান পরিস্থিতির মোকাবিলায় আমাদের সবাইকে সতর্কতা অবলম্বন করতেই হবে। এ ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।'
এদিকে কাকাবাবু সিরিজের নতুন ছবি নির্মাণের জন্য বর্তমানে আফ্রিকায় কলকাতার চলচ্চিত্র পরিচালক সৃজিত মুখার্জি। তবে সুনসান নীরব জনমানবহীন এবং করোনামুক্ত সেই জঙ্গলে সঙ্গিনী মিথিলাকে মিস করছেন তিনি। এ বিষয় সৃজিত বলেন, 'হঁ্যা, মিথিলাকে মিস করছি খুব। করোনার জন্য ও আসতে পারছে না। এটা বাজে ব্যাপার। একসঙ্গে সময় কাটাব ভেবেছিলাম। ও ভিসা পাবে না এখন সামনের কয়েকদিন। কী আর করব।'
তিনি আরও বলেন, 'আমরা যে জঙ্গলে শুটিং করছি সেখানে বন্যপ্রাণী ও আমাদের ইউনিট ছাড়া আর কিছুই নেই। তাই আফ্রিকা শুধু করোনা নয়, প্যানিক মুক্তও। দারুণ কাজ হচ্ছে আমাদের।'