বলিউডের মেধাবী অভিনেত্রী কারিনা কাপুর খান। ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই সুনাম কুড়িয়ে আসছেন বেবোখ্যাত এই অভিনেত্রী। দেখতে দেখতে ক্যারিয়ারের ২৫ বছরে পা রাখলেন তিনি। এই ২৫ বছরে বলিউডে নিজের জায়গা বেশ পোক্ত করেছেন। এরই মধ্যে তার বহু সিনেমা ব্যবসাসফল হয়েছে। পেয়েছেন সমালোচকদের প্রশংসা। ব্যক্তিগত জীবনেও একজন সফল গৃহিণী ও মা তিনি। সম্প্রতি কারিনা কাপুর খান জানালেন, বলিউডের অন্যতম বড় বাজেটের সিনেমায় যুক্ত হচ্ছেন তিনি। ভারতীয় বিনোদন গণমাধ্যম পিংকভিলার প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত কয়েক মাসে বেশ কিছু বড় বাজেটের প্যান ইন্ডিয়ান সিনেমার প্রস্তাব পেয়েছেন কারিনা কাপুর। সিনেমাটি হতে যাচ্ছে বলিউডের এ পর্যন্ত হওয়া বড় বাজেটের সিনেমার মধ্যে একটি। সিনেমা সম্পর্কে জানাতে গিয়ে একটি সূত্র বলেছে, এ রকম চরিত্র আগে কখনো তিনি করেননি। এর নির্মাতা ভারতীয় সিনেমার একজন নামকরা পরিচালক। পরিচালকের কারণে এবং গল্প ও চরিত্র পছন্দ হওয়ায় কারিনা কাপুর এ সিনেমার জন্য রাজি হয়েছেন।
কারিনা কাপুরের আসন্ন এ সিনেমা নিয়ে বেশি তথ্য প্রকাশ করা হচ্ছে না। তবে পিংকভিলা বলছে, 'নির্মাতার কাছে সিনেমাটির সিনেমাটিক ওয়ার্ল্ডের কথা শুনেই কারিনা কাপুর মোহিত হয়েছেন। তিনি সাধারণত কোনো সিনেমায় রাজি হওয়ার আগে দীর্ঘ সময় নেন। অনেক কিছু বিবেচনা করেন। কিন্তু এবার তিনি নির্মাতার পরিকল্পনা শুনেই সিনেমাটিতে অভিনয় করতে রাজি হয়েছেন। নির্মাতার ভিশনের পাশাপাশি চরিত্রটিও তার জন্য বিশেষ।'
কারিনা কাপুরের বলিউড অভিষেক হয় ২০০০ সালে। তিনি অভিনয় করেছিলেন জেপি দত্ত পরিচালিত 'রিফিউজি'তে। এ সিনেমার পর তাকে ফিরে তাকাতে হয়নি। ক্যারিয়ারে নানা উত্থান-পতন এসেছে; কিন্তু তিনি এগিয়ে গেছেন নিজের মতো। রোমান্টিক সিনেমার পাশাপাশি অভিনয় করেছেন কমেডি ও ফ্যামিলি ড্রামায়।
এই অভিনেত্রী গত বছরগুলোয়ও তার অভিনয় প্রতিভা প্রকাশ করেছেন। গস্ন্যামারাস নায়িকা থেকে তিনি হয়ে উঠেছেন পুরোদস্তুর একজন অভিনেত্রী। বড় পর্দার সিনেমার পাশাপাশি অভিনয় করেছেন ওটিটির জন্যও। গত বছর ওটিটিতে মুক্তি পাওয়া সুজয় ঘোষ পরিচালিত 'জানে জান' সিনেমায় অভিনয় করেন। ওয়েব ফিল্মটি নির্মিত হয়েছে কেইগো হিগাশিনোর বই 'দ্য ডিভোশন অব সাসপেক্ট এক্স' থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে। কারিনার সঙ্গে ছিলেন বিজয় বর্মা ও জয়দীপ আহলাওয়াত। আগামী নভেম্বরে মুক্তি পাচ্ছে কারিনা অভিনীত রোহিত শেঠি পরিচালিত 'সিংহাম অ্যাগেইন' সিনেমাটি। এ ছাড়া কারিনার হাতে আছে মেঘনা গুলজারের 'দরিয়া'। এ সিনেমায় তিনি একজন পুলিশ অফিসারের চরিত্রে অভিনয় করবেন বলে জানা গেছে। এর মধ্যে ১৩ সেপ্টেম্বর মুক্তি পেয়েছিল হানসল মেহতা পরিচালিত 'দ্য বাকিংহাম মার্ডারস'।
এ অভিনেত্রী সব সময় সোজাসাপ্টা কথা বলতে পছন্দ করেন। বলা চলে একটু ঠোঁটকাটা স্বভাবের তিনি। ইন্ডাস্ট্রিতে অনেক নির্মাতার সঙ্গেই তারকাদের ঝামেলা রয়েছে। কেউ হয়তো সেটা প্রকাশ করেন, কেউ বা এড়িয়ে যান। তবে কারিনা এ ক্ষেত্রে একদমই ভিন্ন। ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই সঞ্জয় লীলা বানসালির ওপর ক্ষুব্ধ কারিনা। এর অবশ্য যথেষ্ট কারণও রয়েছে। অভিনয় জীবনের শুরুর দিকেই বলেছিলেন, সঞ্জয় লীলার কোনো নীতি-আদর্শ নেই। তিনি বিভ্রান্ত লোক। কিন্তু প্রথম সারির নির্মাতাকে নিয়ে এমন মন্তব্য কেন করেছিলেন কারিনা?
আনন্দবাজারের প্রতিবেদন সূত্র অনুযায়ী, এক সাক্ষাৎকারে পরিচালকের অপেশাদারিত্বের কথা উলেস্নখ করে কারিনা বলেন, সঞ্জয় লীলা একজন বিভ্রান্ত পরিচালক। তার কথার কোনো দাম নেই। এমনকি সঞ্জয় লীলার জীবনে কোনো নীতি ও আদর্শ নেই।
জানা গেছে, কারিনার সৌন্দর্যে প্রথম থেকেই মুগ্ধ ছিলেন সঞ্জয় লীলা। 'হম দিল দে চুকে সানম' সিনেমার জন্য নির্মাতার প্রথম পছন্দ ছিলেন কারিনাই। তবে সে সময় অভিনয় জগতে পা রাখতে চাননি অভিনেত্রী। তাই নায়িকার চরিত্রে কারিনার পরিবর্তে ঐশ্বরিয়াকে বেছে নিয়েছিলেন সঞ্জয় লীলা। এরপর কারিনাকে 'দেবদাস' সিনেমার প্রস্তাব দেন এই নির্মাতা। প্রথমে রাজি হননি কারিনা। অভিনেত্রীর মনে হয়েছিল, 'পারু' চরিত্রটির জন্য মানানসই নন তিনি। তবে পরে সিদ্ধান্তে বদল পরিবর্তন করে চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন কারিনা। কিন্তু তারপর যে ঘটনাটি ঘটে তা কল্পনাও করেননি এই অভিনেত্রী।
'দেবদাস'র জন্য ফটোশুটের পর কারিনা জানতে পারেন, সিনেমাটি থেকে তাকে বাদ দিয়েছেন সঞ্জয় লীলা। তার পরিবর্তে ঐশ্বরিয়াকে চূড়ান্ত করেছেন 'পারু' চরিত্রের জন্য। এ ঘটনার পরই রাগে ফেটে পড়েন অভিনেত্রী। কারিনা বলেন, আগামী দিনে যদি রাজ কাপুর ও গুরু দত্তের নামের পাশে নাম আসে তাও আমি তার সঙ্গে কোনো সিনেমা করব না। এমনকি আমার হাতে যদি কোনো কাজ নাও থাকে, আমি যদি ফ্লপ নায়িকা হই তাও করব না।
বলিউডে অনেক নায়িকা নিজের চেহারায় বাড়তি আকর্ষণ আনার জন্য পস্নাস্টিক সার্জারি করিয়েছেন। তেমনি কারিনা কাপুরও পস্নাস্টিক সার্জারি করিয়েছেন বলে ধারণা অনেকের। না হলে এই বয়সেও এত আকর্ষণীয় রূপে ধরা দেন কীভাবে! এমন প্রশ্নে যখন বিভোর নেটিজেনরা তখনই বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন অভিনেত্রী।
কারিনা কাপুর বলেন, 'রূপের কোনো বয়স হয় না। প্রত্যেক বয়সেই আলাদা আলাদা রূপের সৌন্দর্য ও মাধুর্য থাকে। আসলে আমি নিজেও পস্নাস্টিক সার্জারি করানোর পক্ষপাতী নই। সাইফও পছন্দ করে না। বরং আমি এখন যেমন, সাইফ এরূপেই আমাকে আবেদনময়ী হিসেবে দেখে। আমিও সাইফকে এভাবেই দেখতে চাই।'