ছোটপর্দার দর্শকপ্রিয় অভিনেত্রী সালহা খানম নাদিয়া। অভিনয় আর সৌন্দর্যের মিশেলে তিনি মুগ্ধ করে চলেছেন দর্শকদের। ২০০৮ সালে মডেলিং দিয়ে শুরু করেন ক্যারিয়ার। প্রথম দিকে টিভিসি করে পরিচিতি পান। এরপর ধীরে ধীরে নাটকের পর্দায় নিজের অবস্থান তৈরি করে নেন। বর্তমানে টিভি নাটকে প্রথম সারির অভিনেত্রীদের একজন হিসেবে বিবেচিত। নিয়মিত কাজ করছেন টিভি নাটক, স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ও মিউজিক ভিডিওতে। ধারাবাহিকে অনিয়মিত হলেও খন্ডনাটকে অভিনয় নিয়ে বেশ ব্যস্ত সময় পার করছেন তিনি। পাশাপাশি ব্যস্ত রয়েছেন বিজ্ঞাপনচিত্র, স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ও মিউজিক ভিডিও নিয়েও।
টিভি নাটকের এখনকার অবস্থান বেশ ভালো বলে মনে করেন নাদিয়া। অভিনয় এখন ততটা সহজ নয় বলেও মনে করেন এ অভিনেত্রী। আর এখন কোন নাটক হিট হচ্ছে, কোনটি ফ্লপ হচ্ছে তা দেখলেই বোঝা যায়। ফলে আগের মতো অবস্থা আর নেই বলে মনে করেন তিনি। নাদিয়া গণমাধ্যমকে বলেন, 'টিভি নাটক একটি শিল্প। একজন শিল্পী হিসেবে আমি চাই এ শিল্পটিকে প্রতিনিয়ত কন্ট্রিবিউট করতে। তবে একটি বিষয় মনে রাখা জরুরি, অনেক প্রতিবন্ধকতার মধ্য দিয়ে আমাদের কাজ করতে হয়। তারপরেও টিভি নাটকের আকাশচুম্বী দর্শক রয়েছে। সত্যি বলতে, ভালো নাটক তৈরি না হলে লোকে দেখত না। আমার মতে টিভি নাটকের অবস্থান অনেক ভালো। সেটা আঁচ করা যায় ঈদ কিংবা বিশেষ দিবস গুলোতেই।'
নাটক ছাড়াও স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ও মিউজিক ভিডিওতে কাজ করেছেন এ অভিনেত্রী। নাদিয়া মনে করেন, কাজের মাধ্যম যাই হোক, চেষ্টা থাকে দর্শকের সামনে ভালো কিছু নিয়ে হাজির হওয়া। নাদিয়া বলেন, বেশ কয়েকটি মিউজিক ভিডিওতে কাজের সুযোগ হয়েছে। মিউজিক ভিডিওতে দর্শক আমাকে ইতিবাচকভাবেই গ্রহণ করেছে। এর শুরুটা হয়েছে 'ইচ্ছে ডানা' শিরোনামে মিউজিক ভিডিও থেকেই। আমার আর জোভানের সে সময় এ মিউজিক ভিডিও সুপার হিট হয়েছিল। আর ইতিবাচক সাড়া পেলে এমনিতেই কাজে আগ্রহ বাড়ে।
গত ২৭ জুলাই শনিবার যাত্রা শুরু করেছে কলকাতার নতুন ওটিটি পস্ন্যাটফর্ম 'ফ্রাইডে'। উদ্বোধনের পরই পস্ন্যাটফর্মটিতে প্রকাশ হয়েছে অভিনেত্রী ও মডেল সালহা খানম নাদিয়ার সিরিজ 'ভালোবাসা'। এটি পরিচালনা করেছেন আবু হায়াত মাহমুদ। ওইদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ফ্রাইডের উদ্বোধন হয় এবং সঙ্গে সঙ্গেই আবু হায়াত মাহমুদের চার পর্বের সিরিজটি স্ট্রিমিং শুরু হয়। সিরিজটির চিত্রনাট্য লিখেছেন মুনতাহা বৃত্তা এবং এটি প্রযোজনা করেছে আলফা আই স্টুডিও লিমিটেড। চার পর্বের সিরিজটি প্রযোজনা করেছে আলফা আই স্টুডিও লিমিটেড। সিরিজটির গল্প সম্পর্কে পরিচালক আবু হায়াত মাহমুদ বলেন, 'এটি একটি সত্য ঘটনা থেকে অনুপ্রাণিত। মুম্বাই শহরে একটি পরিবারের দুই সদস্যের মৃতু্যকে কেন্দ্র করে এর কাহিনী এগিয়েছে। শুধু মৃতু্যই নয়, তিন প্রজন্মের মানুষের ভালোবাসার ভিন্নতা এই গল্পে তুলে ধরা হয়েছে।'
এ ব্যাপারে নাদিয়া বলেন, 'বাংলাদেশের 'ভালোবাসা' কনটেন্টসহ আরও অনেক কনটেন্ট দিয়ে ফ্রাইডে যাত্রা শুরু হলো। পস্ন্যাটফর্মটির উদ্বোধনী দিনেই আমার অভিনীত সিরিজ প্রকাশ হয়েছে। এটা খুবই খুশির খবর। বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকেই কনটেন্টটি উপভোগ করতে পারবেন দর্শক। নিজের অভিনীত সিরিজ ব্যাপক পরিসরে প্রকাশ হওয়ায় ভালো লাগছে।'
নাদিয়া আরও বলেন, 'বছরখানেক আগে সিরিজটিতে অভিনয় করেছিলাম। সিরিজটির চিত্রনাট্য অসাধারণ। এটি আমার ক্যারিয়ারের ভালো একটি কাজ। সিরিজটিতে আরও অভিনয় করেছেন তারকা অভিনেতা মোশাররফ করিম, জাকিয়া বারী মমসহ অনেকেই।
মুম্বাই নগরীতে একটি পরিবারের দু'জনের মৃতু্যকে কেন্দ্র করে সিরিজটির গল্প এগিয়েছে। শুধু মৃতু্যই নয়, গল্পে তিন প্রজন্মের মানুষের প্রতি মানুষের ভালোবাসা পার্থক্যও তুলে আনা হয়েছে সিরিজে এমনটিই জানিয়েছেন নির্মাতা।
সম্প্রতি বিয়ে করেছেন নাদিয়া। বরের নাম সালমান আরাফাত। তিনিও একজন নাট্যশিল্পী। এ সময় নাদিয়া, তার বর সালমান ও তাদের পরিবারের সবাইকে এক আনন্দঘন মুহূর্তে ক্যামেরাবন্দি হতে দেখা যায়। প্রথম ছবিতে বিয়ের মঞ্চে বরের মুখোমুখি বসে থাকতে দেখা যায় নাদিয়াকে। ক্যাপশনে অভিনেত্রী লেখেন, আলহামদুলিলস্নাহ! একইভাবে নাদিয়ার বরও দুজনের ছবিটি শেয়ার করে লিখেন, 'আলহামদুলিলস্নাহ।'
সামাজিক মাধ্যমে বিয়ের ছবি প্রকাশ করতেই খুশির জোয়ার বইতে শুরু করে তারকাসহ নাদিয়ার ভক্ত-অনুরাগীদের মনে। সেখানে অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিণকেও অভিনন্দন জানাতে দেখা যায়। এছাড়াও মডেল অন্তু করিম, অভিনেতা মুকিত জাকারিয়া, অভিনেত্রী শাহনাজ খুশি, মনিরা খান মিঠুসহ শোবিজ অঙ্গনের অনেককেই নাদিয়া ও সালমানকে শুভেচ্ছা জানাতে দেখা যায়। মন্তব্যের ঘরে পরিচালক চয়নিকা চৌধুরী লিখেছেন, 'অনেক শুভকামনা।'
সালহা খানম নাদিয়া নাটকের পাশাপাশি চলচ্চিত্রেও কাজ করেছেন। 'ড্রেসিং টেবিল', 'আইসক্রিম' ও 'রেডরাম'-এ দেখা গেছে তাকে। এ ছাড়া কলকাতায় কাজ করেছেন 'সুনেত্রা সুন্দরম' নামের একটি চলচ্চিত্রে। এটি পরিচালনা করছেন শিব রাম শর্মা। গল্প লিখেছেন অর্পিতা রায় চৌধুরী। নিরাপদ শৌচাগারের জন্য সামাজিক আন্দোলন নিয়েই ছবির গল্প। অভিনয়ের পাশাপাশি পারিবারিক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নাদিয়া। অভিনয়ের বাইরে যতটা সময় পান, সেখানেই দেন।