দর্শক হৃদয় জয় করেছেন মিমি চক্রবতী

প্রকাশ | ২৭ জুন ২০২৪, ০০:০০

মাসুম বিলস্নাহ রাকিব
ওপার বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী। সাবলীল অভিনয়ের মাধ্যমে নিজেকে টালিউডের প্রথম সারির নায়িকা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। অভিনয়ের পাশাপাশি রাজনীতিতেও বেশ সরব দর্শকপ্রিয় অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী। তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে সংসদ সদস্যও হয়েছেন তিনি। বর্তমানে 'তুফান' চলচ্চিত্রে শাকিব খানের বিপরীতে অভিনয় করে দুই বাংলাতেই আলোচনায় রয়েছেন। ঈদে মুক্তি পাওয়ার প্রথমদিন থেকেই দেশের প্রেক্ষাগৃহগুলোতে ঝড় তুলেছে সিনেমাটি। সারাদেশে ছবিটি নিয়ে দর্শকসাড়া তুঙ্গে। ঢাকাসহ সারাদেশের ১২০টির বেশি প্রেক্ষাগৃহে চলছে চলচ্চিত্রটি। মুক্তির দিন থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত ছবিটি গড়ছে একের পর এক রেকর্ড। দর্শক চাহিদা বাড়ার সঙ্গে হল মালিকরা পালস্না দিয়ে বাড়িয়েছেন প্রদর্শনী। সিনেমার প্রচারণার জন্য কলকাতা থেকে বাংলাদেশে এসেছিলেন মিমি চক্রবর্তী। রাজধানীর একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে অংশও নেন তিনি। যেহেতু তিনি কলকাতা থেকে এসেছেন স্বাভাবিভাবেই তিনি বাংলাদেশের অতিথি। কিন্তু বিষয়টি অন্যভাবে নিলেন মিমি। ভরা মজলিসেই বলে দিলেন, 'বাংলাদেশের আসার পর সবাই অতিথি বলছে। কিন্তু আমি তো তেমন মনে করি না। আমার ভাষা বাংলা, আপনিও বাংলায় কথা বলেন। আমি বিশ্বাস করি, আমরা সবাই বাঙালি। আমাকে বাংলাদেশের অতিথি বলবেন না। আমি আপনাদের মেয়ে, আপনাদের বন্ধু, আপনাদেরই বোন। আমার পাশে থাকবেন হৃদয়ে জায়গা দেবেন, যাতে আগামীতে আপনাদের আরও ভালো ছবি উপহার দিতে পারি।' এ সময় শাকিবের প্রশংসা করে মিমি বলেন, আমরা যখন শুট করছিলাম সে সময় অনেক গরম ছিল। শাকিব তখন সুট পরেছিলো। এ সময় গরমের মাঝে একবারও আমি ওর মুখ থেকে 'উফ' বলতে শুনিনি। একজন ভালো কো-স্টারের সঙ্গে কাজ করতে ভালো লাগে। কাজের ক্ষেত্রে শাকিবের ডেডিকেশন আছে বলে আজকে সে আপনাদের সবার প্রিয়। মিমি বলেন, তুফান আমার প্রথম বাংলাদেশি ছবি। আমি এ ছবিটা নিয়ে খুব আগ্রহী। এদিকে 'তুফান' দেখতে পশ্চিম বাংলার দর্শকরা সামাজিক মাধ্যমে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তাই নির্মাতারা দ্রম্নতই ছবিটি কলকাতার প্রেক্ষাগৃহে চালানোর পরিকল্পনা করছে বলে শোনা যাচ্ছে,। ভারতীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, 'তুফান' ভারতের প্রেক্ষাগৃহে আগামী ২৮ জুন মুক্তি পেতে পারে। তবে এ প্রসঙ্গে এখনো প্রযোজনা সংস্থার তরফে কোনো স্পষ্ট ঘোষণা আসেনি। একজন গ্যাংস্টারের গল্পে তৈরি হয়েছে তুফান সিনেমা। যেখানে উঠে আসবে নব্বই দশকের চিত্র। সে সময়ের এক নামকরা গ্যাংস্টারের কাহিনী নিয়েই এগিয়ে যাবে তুফানের গল্প। রায়হান রাফী ও শাকিব খান জুটি ঢালিউডকে নতুন কিছু উপহার দিতে চলেছেন। অভিনয়ের জন্য রাজনীতিকে বিদায় জানিয়েছেন মিমি। গতবার লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন মিমি চক্রবর্তী। শুধু প্রার্থী নয়, জয়ীও হয়েছিলেন। তবে পাঁচ বছরের মধ্যেই তিনি রাজনীতি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন। এমনকি এ বছর তিনি লোকসভা নির্বাচনে লড়েনি। তার জায়গায় এবার যাদবপুর কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হয়েছেন সায়নী ঘোষ। এখন তার ধ্যান, জ্ঞান সবকিছুই অভিনয়। ক্যারিয়ারে আবারও ভালো করে মন দিতে চান। একটি সাক্ষাৎকারে রাজনীতি ছাড়ার প্রসঙ্গে মিমি বলেন, 'পিস অব মাইন্ড ফিরে পেয়েছি।' কিন্তু কেন এমনটা মনে করেন মিমি সেটা খোলাসা করলেন না। এ অভিনেত্রীর গানের প্রতিও রয়েছে তার অসম্ভব ঝোঁক। গানকে ভীষণ ভালোবাসেন মিমি; শত ব্যস্ততার মধ্যে হলেও একটু সময় বের করেন গান করার। ভারতীয় গণমাধ্যমে নিজের গানের প্রতি তার ভালোবাসা ব্যক্ত করেছেন তিনি। মিমি মনে করেন, তার জীবনে গান বিষয়টি না থাকলে অচল হয়ে পড়ত তার জীবন। এমনকি বেঁচে থাকতেও তার কষ্ট হতো, হারাতেন নিজের অস্তিত্ব। তবে মিমি যে পেশাদার গায়িকা এমন তো না। অভিনয় জীবনেই তার ব্যস্ততা বেশি। এর মাঝেও কীভাবে গান নিয়ে তার সময় কাটে, সে বিষয়টিও ভক্তদের কাছে ভাগ করে নিয়েছেন অভিনেত্রী। মিমির কথায়, 'গান ছাড়া হয়তো আমার অস্তিত্বই থাকত না। বলা ভালো, জীবনযুদ্ধে টিকে থাকতে পারতাম না। পেশার তাগিদে বা খ্যাতির জন্য গান করি না আমি। কেবল নিজের জন্যই গান গাই। যে অনুরাগীদের আমার গান ভালো লাগে, তারাই শোনেন। আমি কখনো গান শিখিনি। কিন্তু গানের সঙ্গে এতটাই ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছি যে, গান ছাড়া জীবনে কল্পনাও করতে পারি না।' অভিনেত্রী বলেন, 'মন খারাপের রাতে আমি আর মা পুরনো দিনের গান গাই। আধুনিক গানের তুলনায় লতা-কিশোরের গানের দিকে আমার ঝোঁক বেশি। আমি কয়েকটি মিউজিক ভিডিওতে গান করেছি, রবীন্দ্রনাথের প্রেমের গান। আমার মনে হয় একবার 'গীতবিতান'-এর প্রেম পর্যায়ের গানের সঙ্গে একাত্ম হয়ে গেলে তার থেকে রোমান্টিক আর কী হতে পারে! প্রেম, ভালোবাসা বা বিরহের গান, সব হয়তো জানি না, যতটুকু পারি করি আর কি।' উলেস্নখ্য, এর আগে চলতি বছরের শুরুতে বাংলাদেশে 'ভালস্নাগছে না' শিরোনামে গান গেয়ে আলোচনায় এসেছিলেন মিমি চক্রবর্তী। টিএম রেকর্ডসের উদ্যোগে সংগীত পরিচালক কৌশিক হোসেন তাপসের কথা, সুর ও সংগীতায়োজনে গানটি প্রকাশিত হয়েছিল ইউটিউবে।