ভাঙতে-গড়তে ভালোবাসেন কৃতি শ্যানন
প্রকাশ | ০৪ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
তারার মেলা ডেস্ক
বলিউডের প্রথম সারির নায়িকাদের মধ্যে অন্যতম ফিট অভিনেত্রী কৃতি শ্যানন। চরিত্রের প্রয়োজনে নিজেকে সেই অনুযায়ী গড়ে তুলতে কৃতি কম পরিশ্রম করেন না। 'বচ্চন পান্ডে' সিনেমায় অভিনয় করে কৃতি শ্যানন যথেষ্ট প্রশংসিত হয় দর্শক মহলে। এই ছবিতে উঠতি পরিচালক মায়রার ভূমিকায় দেখতে পাওয়া যায় অভিনেত্রীকে। চরিত্রে মানানসই হয়ে ওঠার জন্য খাওয়াদাওয়া মেনে চলা থেকে শরীরচর্চা- কম পরিশ্রম করেননি তিনি। এর আগেও 'মিমি' ছবিতে অন্তঃসত্ত্বা মহিলার চরিত্রে নিজেকে তৈরি করতে গিয়ে 'হট অ্যান্ড স্স্নিম' কৃতি হয়ে উঠেছিলেন স্থূলকায় মহিলা। সেই ছবির বেশ কিছু দৃশ্যের জন্য কৃতিকে ওজন বাড়াতে হয়েছিল প্রায় ১৫ কেজি। শু্যটিং পর্ব মিটে যাওয়ায় আবার নিজের চেষ্টাতেই স্বরূপে ফিরে এসেছিলেন অভিনেত্রী।
শুধু পর্দায় নয়, বাস্তব জীবনেও নিজেকে ভাঙতে-গড়তে ভালোবাসেন তিনি। তার জন্য শারীরিকভাবে নমনীয় থাকাটা প্রয়োজন। কৃতির ফিটনেস রুটিনও সেই কথা বলছে। শত ব্যস্ততাতেও শরীরচর্চায় ফাঁকি দেন না কৃতি। যেখানেই থাকুন, যত কাজই থাকুক নিয়ম করে ফিট থাকার অনুশীলন তিনি চালিয়ে যান। কখনো নির্জন পাহাড়ের কোলে ধ্যানমগ্না হয়ে আবার কখনো আঁটসাঁট জিম পোশাকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত অভিনেত্রীর ইনস্টাগ্রামের পাতায় খুঁজলে তার ছবি চোখে পড়বে।
শুধু কি শরীরচর্চা? সারা দিনে কী খান তার চেয়েও, কৃতি কী খান না সেই তালিকাটা বেশি দীর্ঘ। তবে যা-ই খান তাতে প্রোটিন, ফাইবার এবং কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ সমান থাকাটা বাধ্যতামূলক। সেই সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের শাকসব্জি, মরসুমি ফল তো রয়েছেই। তরল খাবার খেতে বেশি পছন্দ করেন। তাই সারা দিনের বেশিরভাগ সময়েই তিনি তরল খাবার খেয়ে থাকেন। ভাত, রুটি যে তার একেবারে না-পছন্দ, এমন নয়। সেসবও তিনি খান। তবে একেবারেই স্বল্প পরিমাণে। তবে এ সবের পেছনে অভিনেত্রীর একটাই মন্ত্র ফিট থাকা।
গত দুই-তিন বছরের বেশি সময় ধরে তারকাখ্যাতির ন্যায় ঝলমলে জীবনযাপন করছেন। সেই ফুরফুরে মেজাজ চলতি বছরেও দেখা গেছে তার চোখমুখে। কিন্তু বছরের মাঝখানে এসে হঠাৎ করেই মুড অফ হয়ে যায় কৃতির। কারণ বহুল প্রত্যাশিত 'আদি পুরুষ' সিনেমাটি রীতিমতো সুপার ফ্লপের তালিকায় পড়ে যায়। এতে দক্ষিণী তারকা প্রভাসের বিপরীতে সীতা চরিত্রে অভিনয় করা কৃতি মানসিক ভাবেও অনেকটা ভেঙে পড়েন। তবে বছরের শেষে আবার নতুন প্রত্যাশায় জ্বলে ওঠার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।
দীর্ঘদিন পর আবার টাইগার শ্রফের বিপরীতে দেখা মিলবে কৃতির। ২০৭০ সালের প্রেক্ষাপটে বিকাশ বহেল নির্মাণ করেছেন 'গণপথ'। অ্যাকশন ও সায়েন্স ফিকশনের মিশেলে তৈরি এ সিনেমায় উঠে আসবে ভবিষ্যৎ দুনিয়ার ধনী-গরিবের লড়াইয়ের গল্প। এতে গণপথ ওরফে গুড্ডুর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন টাইগার শ্রফ। তার প্রেমিকার চরিত্রে রয়েছেন কৃতি শ্যানন। এ সিনেমা দিয়ে ৯ বছর পর ফিরছে টাইগার-কৃতি জুটি।
গণপথের ট্রেইলারের শুরুতেই উঠে এলো এমন এক জগৎ- যেখানে রয়েছে দুঃখ, যন্ত্রণা, ভ্রষ্টাচার আর হতাশা। তাদের মসিহর জন্ম হলেই বদলে যাবে ভাগ্য, ভেঙে যাবে ধনী-গরিবের ভেদাভেদ। এরপর দেখা গেল একের পর এক শত্রম্নদের নিধনে মগ্ন টাইগার। দুর্র্ধষ অ্যাকশনে মোড়া ২ মিনিট ২৭ সেকেন্ডের ট্রেইলারে ছিল কৃতি শ্যাননের উজ্জ্বল উপস্থিতি। নানচাকু এক্সপার্ট কৃতির প্রেমে পাগল গুড্ডুর জীবনে আচমকাই ঘটবে দুর্ঘটনা। গুন্ডাদের হাতে মার খেয়ে সর্বস্ব হারিয়ে প্রতিশোধের লড়াইয়ে নামবে সে। চমক হিসেবে দেখা গেছে বলিউড শাহেনশাহ অমিতাভ বচ্চনকে। পাগড়ি দিয়ে এক চোখ ঢাকা তার। আঁচ করা গেল, টাইগারের মেন্টরের ভূমিকায় দেখা যাবে তাকে। ট্রেইলার প্রকাশের পর থেকে নতুন চিন্তার এই সিনেমার প্রশংসার পাশাপাশি হচ্ছে সমালোচনা। অনেকে অ্যাকশন ও সায়েন্সের মিশ্রণের প্রশংসা করলেও কেউ কেউ ভিএফএক্স নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। বক্স অফিসে সিনেমাটি খুব একটা সাড়া ফেলতে পারবে না বলেও মন্তব্য করেছেন অনেকে।
নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে কৃতি শ্যানন বলেন, 'এই সময় আমি নিজের ক্যারিয়ারের সুন্দর সময়ের মধ্যে দিয়ে চলেছি। আদিপুরুষ-এর পর 'গণপত-এর মতো অ্যাকশন থ্রিলারে কাজ করলাম। আবার রোহিত ধাওয়ানের ছবিতে আমি একজন শহুরে মেয়ের চরিত্রে কাজ করছি। সব মিলিয়ে এই সময়টা বেশ ভালোই কাটছে। এটা আশীর্বাদ বলেই আমি মনে করি। ভালোবাসা, কঠোর পরিশ্রম আর নিজের প্রতি বিশ্বাসের কারণেই আজ আমি এই জায়গায়। আজ আমি যেখানে দাঁড়িয়ে আছি তাতে আমি খুশি। তবু আমার মনে হয়, আমার দক্ষতার সবটুকু আমি এখনো এই অভিনয় দুনিয়াকে দিতে পারিনি। আরও অনেক কিছু করতে চাই। আমার মনে হয়, যখন ভালো কাজ করছি, মানুষ ভরসা করছেন, সেটাকে পাথেয় করেই এগিয়ে যাওয়া উচিত।'