২০২১ সালের চলচ্চিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেতাসহ একাধিক জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়ে মীর সাব্বির ঘোষণা দিয়েছিলেন প্রতি বছর অন্তত একটা চলচ্চিত্র নির্মাণ করার। আর সেটা নতুন বছরেই নির্মাণ করবেন বলে জানিয়েছিলেন। ২০২১ সালে তার কাহিনি, সংলাপ, চিত্রনাট্য ও পরিচালনায় নির্মিত হয়েছিল সে বছরের আলোচিত সিনেমা 'রাত জাগা ফুল'। এই সিনেমাতে অভিনয়ের জন্যই মীর সাব্বির সেরা অভিনেতার পুরস্কারে ভূষিত হয়েছিলেন।
তখন তিনি বলেছিলেন, আগামী বছর তিনি নতুন সিনেমার কাজ শুরু করতে যাচ্ছেন। বলেছিলেন, 'আমার নতুন সিনেমার গল্প প্রস্তুত। একটু সময় নিয়ে কাজ ধীরে ধীরে গুছিয়ে নিয়ে আসছি। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে ইনশাআলস্নাহ নতুন বছরেই আমার নতুন সিনেমা অর্থাৎ আমার পরিচালিত দ্বিতীয় সিনেমার কাজ শুরু করব। আবার সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে এই সিনেমাতেও আমি অভিনয়ও করতে পারি। আমি পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েই পরের সিনেমা নির্মাণ করতে যাচ্ছি। আগের সিনেমার ভুলত্রম্নটি মাথায় রেখে পরবর্তী সিনেমার প্রি-পোডাকশনের কাজ চলছে। কারণ, দ্বিতীয় সিনেমায় কোনোরকম ছাড় দিতে চাই না আমি। সিনেমায় কে কোন চরিত্রে অভিনয় করবেন সবই আমার মাথায় আছে। সময় হলেই সবাইকে চূড়ান্ত করে সবকিছু জানান দেব ইনশাআলস্নাহ।'
সেই ঘোষণার এক বছর পার হয়ে গেল কিন্তু তার সেই ঘোষণার বাস্তবায়নের কোনো খবর নেই। এদিকে তার ভক্তরা অপেক্ষায় আছেন কবে আবার তার সেই 'রাত জাগা ফুল' এর মতো আরেকটি অনবদ্য সিনেমা উপহার দেবেন সেই আশায়।
বর্তমানে নিজের অভিনয় নিয়েই ব্যস্ত আছেন মীর সাব্বির। বেশ কিছু নাটকে তাকে দেখা যাবে। শুটিং শেষ করেছেন ঈদের জন্য কিছু নাটকের। আরও কিছু নাটকে অভিনয়ের আলাপ চলছে।
১৯৯৯ সালে 'পুত্র' নামে একটি নাটকের মাধ্যমে টেলিভিশন অভিনয়ের কর্মজীবন শুরু করেছিলেন মীর সাব্বির। এরপর তার ২৪ বছরের ক্যারিয়ারে মঞ্চনাটক, টেলিভিশন নাটক, ধারাবাহিক, টেলিফিল্ম, বিজ্ঞাপনচিত্র, চলচ্চিত্র, ওয়েব সিরিজ, উপস্থাপনার মতো নানা মাধ্যমে কাজ করেছেন। অভিনয়ের পাশাপাশি করেছেন পরিচালনাও। তার পরিচালনার মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা পায় ধারাবাহিক নাটক 'নোয়াশাল'।
এরপর আসেন বড়পর্দার জন্য চলচ্চিত্র পরিচালনায়। সরকারি অনুদানে নির্মিত সিনেমাটির কাহিনী, সংলাপ, চিত্রনাট্য, গীত রচনা এবং নির্মাণ করেছেন মীর সাব্বির। 'রাতজাগা ফুল' নামের এই প্রথম সিনেমাতেই চমকে দেন তিনি সবাইকে। একযোগে ৩০টিরও বেশি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছিল সিনেমাটি। নতুন চিত্র পরিচালক হিসেবে অন্যদের যেখানে ৪/৫টি প্রেক্ষাগৃহ পাওয়াও কঠিন হয়ে যায়, সেখানে মীর সাব্বিরের এটা কম কৃতিত্বের বিষয় নয়। প্রেক্ষাগৃহের মালিকরাই তাদের অভিজ্ঞতা থেকে বুঝেছিলেন এটা দর্শক খাবে।
সরকারি অনুদানের সিনেমাগুলো নিয়ে এমনিতেই প্রেক্ষাগৃহের মালিকদের আগ্রহ থাকে না। দর্শকদেরও আগ্রহ থাকে না। তবে নাটকে মীর সাব্বিরের জনপ্রিয়তার কাছে এর সবই হার মানে। মুক্তির প্রথম দিনেই প্রেক্ষাগৃহগুলোতে ছিল দর্শকের আশানুরূপ উপস্থিতি।
ছবিটিতে অনবদ্য অভিনয়ের জন্য সিয়াম আহমেদের সঙ্গে যৌথভাবে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন সাব্বির। ইতোপূর্বে অন্যের পরিচালনায় বেশ কিছু সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন। এখনই সিনেমা নির্মাণে হাত না দিলেও যথারীতি তিনি
নাটক নির্মাণ করে যাচ্ছেন। এসব নাটকের মধ্যে বানিয়েছেন 'আলাদিন' 'তোতলা জামাই', 'বয়রা দুলাভাই' 'বিটার সুইট' প্রভৃতি। অভিনয় করেছেন হানিফ সংকেতের পরিচালনায় একটি নাটকে।