শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

'আমার জীবনটাই একটা চলচ্চিত্র'

জাহাঙ্গীর বিপস্নব
  ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০
ম্যাডোনা

কেউ বলেন 'ননি', কেউ 'ম্যাডি', কেউবা আবার ডাকেন 'মো' নামে। কত নাম তার! আবার গোটা দুনিয়া তাকে বলে, 'কুইন অব পপ'। হঁ্যা, বলা হচ্ছে ম্যাডোনার কথা। পুরো নাম ম্যাডোনা লুইস সিক্কোনি। গত বছরে 'বালাই ষাট'-এ পা দিয়েছেন তিনি। কিন্তু তাকে দেখে কে বলবে ৬০ বছর পার হয়েছে তার! বরং বালাই নয়, ষাটেও তাকে 'ষোড়শী' উপাধি দিয়েছেন তার ভক্ত-অনুরাগীরা। আবেদনময়ী শারীরিক কাঠামো, আকর্ষণীয় এবং ফ্যাশন সচেতন ম্যাডোনা যেন দিন দিন আরও বেশি প্রাণবন্ত ও প্রাণোচ্ছল হয়ে উঠছেন। মঞ্চেও তিনি আগের মতোই উন্মাদনা ছড়াচ্ছেন প্রতিনিয়ত। যদিও করোনার কারণে সম্প্রতি তাকে বাতিল করতে হয়েছে। তবে বয়সকে তুচ্ছ প্রমাণ করে এখনো সুরের ইন্দ্রজালে হরণ করে নিচ্ছেন কোটি কোটি তরুণ-তরুণীর মন।

পাশাপাশি চমকপ্রদ উপস্থিতি, বিতর্কিত মন্তব্য, খোলামেলা পোশাক আর নানান ঘটনা-রটনায় সবসময়ই আলোচনা-সমালোচনার শীর্ষে থাকেন তিনি। এই তো কিছুদিন আগেও 'ইন্টারভিউ' নামের একটি জনপ্রিয় ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে টপলেস পোজ দিয়ে শিরোনামে এসেছিলেন ম্যাডোনা। শরীরও যেন তার মনের সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছে। ক্লান্তি বা বিশ্রামের কোনো জায়গাই নেই সেখানে। শুধু ছবি পরিচালনা কিংবা বিভিন্ন ধরনের সেবামূলক কাজেই নয়; চার সন্তানকে লালন-পালন করেও সংগীত দুনিয়ায় নিজের জায়গাটা ধরে রাখতে পেরেছেন ম্যাডোনা। আজও পপসংগীতের যে কোনো জরিপে পয়লা নম্বরে পাওয়া যাচ্ছে তাকে। তার লাইভ কনসার্ট মানেই, দর্শকপূর্ণ স্টেডিয়াম কিংবা হল।

এত কিছুর পরও থেমে নেই তার নতুন অ্যালবামের কাজ। পুরোদমে চলছে তার নতুন মিশন। ২০১৯ সালের শুরুর দিকেই আসে তার নয়া অ্যালবাম। এই অ্যালবামের মাধ্যমে প্রায় চার বছর পর কোনো একক অ্যালবাম বাজারে আসে তার। দীর্ঘ বিরতির পর নতুন অ্যালবাম দিয়ে ভক্তদের ভিন্ন স্বাদ দেয়ার আশ্বাস দিয়ে ম্যাডোনা বলেছেন, গান শুনে আমার ভক্তদের কখনো মনেই হবে না- এটা ম্যাডোনার গান। নিজস্ব স্বকীয়তা থেকে বের হয়ে সফট এবং মেলোডি ধারার গান থাকছে তার এই অ্যালবামে। এ ছাড়া আরও কিছু চমক রয়েছে- যা তিনি আপাতত বলতে চাচ্ছেন না। এর আগে ম্যাডোনার সর্বশেষ একক অ্যালবাম 'রেবেল হার্ট' প্রকাশ পায় ২০১৫ সালে। এই অ্যালবামটির গানগুলোও হইচই ফেলে দেয় শ্রোতামহলে। এই অ্যালবামের পর ব্যক্তিজীবন নিয়ে কিছুটা ঝামেলায় পড়েন তিনি।

থাক ওসব গান বাজনার কথা-বার্তা। তিনি যে অভিনয় কিংবা মডেলিংয়ের সঙ্গেও জড়িত- একথা হয়তো ম্যাডোনা ভক্তদের অজনা নয়। এমনকি পরিচালক ম্যাডোনার কথাও নিশ্চয়ই জানা আছে অনেকের। ঠিক যেন সিনেমার মতোই তার জীবন। সিনেমার কথা মনে আসতেই মনে এলো আরও একটি নতুন প্রসঙ্গ। হঁ্যা, বলা হচ্ছে, এবার নিজের জীবন নিয়েই সিনেমা বানানোর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। নিজের নির্দেশনায় নিজের বায়োপিক। নিজের বায়োপিকেই অভিনয়। নিজের বায়োপিকের স্ক্রিন পেস্নতে সহলেখক- এই হলো আমেরিকান পপ সিঙ্গার ম্যাডোনার আসন্ন বায়োপিকের পরিকল্পনা।

৬১ বছর বয়সেও যেন চ্যালেঞ্জের নাম ম্যাডোনা। যিনি একদা লাইক আ ভার্জিন, ট্রু নামের আকাশ ছোঁয়া সব অ্যালবামের জন্ম দিয়েছেন; তার পক্ষে অবশ্য এ সব নতুন কিছু নয়, আশ্চর্যেরও কিছু নয়।

তিনি বরাবরই এরকম ঝুঁকি নিতে ভালোবাসেন, নেন এবং সাফল্যের শিখর স্পর্শ করেন। অন্য একটি সংস্থা অবশ্য অনেক আগেই ভেবে রেখেছিল ম্যাডোনার জীবন-ফিল্মটি তারাই বানাবে। কিন্তু পপ-রানি বলেছিলেন,'ওনলি আই ক্যান টেল মাই স্টোরি।' অন্যরা তার জীবন নিয়ে ছবি বানাবার কে, সেলুলয়েডে কী বলবেন ম্যাডোনা? নিজের জীবনের কথা, প্রতিষ্ঠার কথা, প্রতিষ্ঠা পাওয়ার লড়াইয়ের কথা, সেই-লড়াই জেতার কথা, অশ্রম্ন ও যন্ত্রণার কথা এবং অবশ্যই পাদপ্রদীপের অন্ধকারের কথা। যা কোনোভাবেই কারও পক্ষে তার মতো করে জানার কথা নয়, বলতে পারারও কথা নয়। প্রায় চার দশকের সংগীত জীবনের নানা বাঁকে নানা রঙ ম্যাডোনার। যেখানে সংগীতের সুরের সঙ্গে নৃত্যের অপরূপ তালভঙ্গিও তাকে ক্রমে একটা কাল্ট-এ পরিণত করেছে। প্রজন্মের পর প্রজন্মকে মুগ্ধ করেছেন। নিজের জন্য নতুন নতুন ক্ষেত্র আবিষ্কার করে নিয়েছেন আশ্চর্য শৈলীতে। এই বায়োপিক সম্বন্ধে বলেছেনও, মিউজিক এবং আর্ট-ই ম্যাডোনাকে এগিয়ে যেতে এবং বেঁচে থাকতে সাহায্য করেছে। এই বেঁচে থাকার জার্নিতেই ম্যাডোনা কখনো ছবির নির্দেশনাও দিয়েছেন, ছবিতে অভিনয়ও করেছেন। ফলে এই বায়োপিকে ম্যাডোনার নিজের স্ক্রিন লেখা, নির্দেশনা দেওয়া বা অভিনয় করার প্রসঙ্গ একেবারেই নতুন নয়।

১৯৭৮ সালে নিউইয়র্কে যান ম্যাডোনা। নিতে থাকেন কোরিওগ্রাফির তালিম। এরপর গড়েন একের পর এক ইতিহাস। ২টি গোল্ডেন গেস্নাবসহ পেয়েছেন মোট ২৭টি পুরস্কার। মনোনয়ন পেয়েছেন অগণিত।

১৯৫৮ সালের ১৬ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানের বে-সিটিতে জন্ম ম্যাডোনার। বাবা ইতালিয়ান ও মা ফ্রেঞ্চ-কানাডীয়। মা ম্যাডোনা লুইসের অকাল মৃতু্য বদলে দিয়েছিল ম্যাডোনার জীবন। মাকে হারানো পর তিনি স্বাবলম্বী হয়ে উঠতে আপ্রাণ চেষ্টা করেন। মাত্র ২০ বছর বয়সে নিউইয়র্কে সংগীত ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন তিনি। ২১ বছর বয়সে গড়ে তুলেন ব্রেকফাস্ট ক্লাব। এরপর ব্রেকফাস্ট ক্লাব ছেড়ে এমি ক্লাবে যোগ দেন। ক্যারিয়ারের শুরুতে ম্যাডোনা তার কালো চুলকে লালচে করে নিয়েছিলেন। ধারণা করা হয়, বিখ্যাত অভিনেত্রী মেরিলিন মনরোর দেখাদেখি এ কাজ করেছিলেন তিনি। তবে তখনো তিনি জনপ্রিয় হয়ে ওঠেননি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<113006 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1