শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সেই ঈদ এই ঈদ

মাসুদুর রহমান
  ৩০ জুলাই ২০২০, ০০:০০
আনিসুর রহমান মিলন

'ছোটবেলার ঈদের আনন্দটাই ছিল অন্যরকম। কদিন আগে থেকেই শুরু হতো সেই আনন্দ। ছোটবেলার সেসব দিনগুলো খুব মিস করি। আগের সেই স্মৃতি স্মরণ করে এখন বিষণ্ন্ন বোধ করি। কোথায় হারিয়ে গেছে অতীতের সেই ঈদের স্মৃতি। কোথায় গেল সেই সব ঈদের দিন'- ছোটবেলার ঈদের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে এভাবেই বিষণ্নতার সুরে কথা বলেন অভিনেতা আনিসুর রহমান মিলন। শোবিজের ব্যস্ততম শিল্পীদের একজন তিনি। এক কাজ শেষ হয় তো শুরু হয় তার অন্য আরেকটি। মঙ্গলবার দুপুরে যখন কথা হয় তার সঙ্গে তখনো তিনি ছিলেন শুটিং সেটে।

শুটিংয়ের ফাঁকে মিলন বলেন, 'ছোটবেলার ঈদগুলোতে অনেক আনন্দ করতাম। ঈদের ছুটিতে পড়ালেখার চাপ থাকত না। ওই কটাদিন নিজের মতো করে চলা যেত। অপেক্ষায় থাকতাম নতুন পোশাকের। পোশাক কেনার পর লুকিয়ে রাখতাম, ঈদের দিন ছাড়া বের করতাম না। ছোটবেলায় ঈদে গিফট পেতাম এখন গিফট দিই। আগে ঈদ উপহার পেতে ভালো লাগত এখন দিতে ভালো লাগে।'

ছোটবেলার কোরবানি ঈদ নিয়ে মিলন বলেন, 'কোরবানির ঈদের সময় পশুর হাটে যাওয়ার জন্য বাবার কাছে খুব বায়না ধরতাম। কিন্তু তিনি কখনোই নিয়ে যাননি। কারণ গরু কিনে বাসায় আসতে রাত ১টা বাজতো। গরু নিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গেই ঘুম থেকে উঠে দেখতে যেতাম। আমি ঈদের দিন পর্যন্ত গরুটাকে খাওয়াতাম। ওর যত্ন করাই ঈদের আনন্দ মনে হতো। এখন এসব স্মৃতি খুবই মনে পড়ে।'

দুটি নাটক পরিচালনার পাশাপাশি মিলন অভিনয় করেছেন বেশ কিছু নাটকে। এবারের ঈদে তার প্রায় ১৫টি নাটক প্রচার হবে বলে জানান তিনি। সেই সঙ্গে জানালেন এবারের ঈদের ছুটিতে ঢাকাতেই থাকছেন। তবে এবারের ঈদ নিয়ে কোনো পরিকল্পনা নেই তার। আর করবেনই বা কি করে! একে তো করোনা পরিস্থিতি অন্যদিকে কাছে নেই স্ত্রী-সন্তান। মিলন বলেন, 'আমরা সবাই এক দুর্যোগের মধ্যে আছি। করোনার কারণে গেল রোজার ঈদটা আমাদের ভালো যায়নি। কোরবানির ঈদটাও ভালো যাবে না। লকডাউন না থাকলেও পরিবেশ আগের মতো তৈরি হয়নি। অন্যান্য বছরে ঈদে যেমন ঘোরাফেরা কিংবা আত্মীয়স্বজনদের বাসায় যাওয়ার বিষয়টি থাকত এখন সেটা প্রায় অসম্ভব। এদিকে আমার স্ত্রী-সন্তান আমেরিকায়। ওখানে আমি যেতে পারছি না, ওরাও আসতে পারছে না। স্ত্রী-সন্তান রেখেই ঈদ করতে হচ্ছে। তাই ঈদ নিয়ে কোনো পরিকল্পনা নেই। পরিবারের অন্যদের সঙ্গে বাসাতেই সময় কাটব।'

ঈদুল আজহায় সব আনন্দ ও আয়োজন থাকে কোরবানিকে ঘিরে। পশুর হাটে যাওয়া, সৃষ্টিকর্তার উদ্দেশ্যে কোরবানি করা, মাংস বিলান সব কিছুই। সামর্থ্যবান মুসলমান ব্যক্তিরা কোরবানি করেন এই দিনে। অন্যদের মতো অভিনেতা মিলনও বরাবর কোরবানি দিয়ে থাকেন। তবে এবারে কোরবানি দেওয়া নিয়ে তিনি এখনো কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেননি। মিলন বলেন, 'এবার কোরবানি নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি। এই পরিস্থিতিতে ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না কি করব। করোনার কারণে অনেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছেন। তবে বিষয়টি যেহেতু ধর্মীয় তাই কোরবানি না দিলে অন্যভাবে এটা আমি কাভার করব।'

প্রতি বছরই কোরবানি দিয়ে থাকেন মিলন। হাটে যাওয়ার সুযোগ না হলেও অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। তিনি বলেন, 'অনেক বছর হলো কোরবানির হাটে গরু কিনতে যাই না। সময়ও হয় না। একবার আগারগাঁও তালতলায় গরুর হাটে গিয়েছিলাম। সেখানে যাওয়ার পর মানুষ আমাকে চিনে ফেলেন। সবাই এসে আমাকে ঘিরে ধরেন। ধীরে ধীরে ভিড় বাড়তে থাকে। আমি প্রচন্ড ভিড়ে আটকা পড়ে যাই। পরে আমার ছোটভাই আমাকে সেখান থেকে নিয়ে গিয়ে দূরে গাড়িতে বসিয়ে রাখেন। তার কিছুক্ষণ পরে আমাদের লোকরা গরু কিনে আনেন।' পশুর হাটে না গেলেও প্রতিবছর কোরবানি করে মুসলমান হিসেবে তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করেন বলে জানান এই অভিনেতা। তিনি বলেন, 'পশু কোরবানি করা আমাদের ইসলামের দৃষ্টিতে বলা হয়েছে। এটা ওয়াজিব। সামর্থ্যবান ব্যক্তিদের এটা করতে হয় কিন্তু কোরবানি করার সময় আমি কাছে থাকি না। আমার কাছে জবাই করার দৃশ্যটা খুব খারাপ লাগে। জবাই শেষ হলে অবশ্য কাছে যাই। পারলে অন্যদের কাজে সহযোগিতা করি। এ সময় মাংস কাটাকাটি করতে আমার ভালোই লাগে।'

এবারের ঈদে এজাজ মুন্নার রচনা 'মুনিরা মঞ্জিল' ও মাসুম শাহরিয়ারের রচনায় 'গালিবের গপ্পো' নামে দুটি নাটকের নির্দেশনার দিয়েছেন মিলন। এ নিয়ে তিনি বলেন, 'তিনটি নাটক নির্দেশনার পরিকল্পনা করেছিলাম কিন্তু দুটি নাটকের পরিচালনা করেছি। দুটি নাটকের গল্প ও ধরন ভিন্ন। নির্দেশনার পাশাপাশি নাটক দুটিতে অভিনয়ও করেছি।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<107462 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1