থ্রিডি প্রিন্টার তৃতীয়মাত্রার বস্তু তৈরি করতে পারে
প্রকাশ | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক
প্রিন্টার হলো একটি পেরিফেরাল যন্ত্র, যা মানুষের বোধগম্য গ্রাফ, ছবি, শব্দ, লেখা কাগজে ছাপায়। সাধারণ প্রিন্টার দুটি হলো সাদা-কালো এবং রঙিন। সাদা-কালো লেজার প্রিন্টারগুলো দিয়ে কাগজপত্রাদি, দলিলাদি প্রিন্ট করা হয়। পৃথিবীর প্রথম কম্পিউটার প্রিন্টার ছিল ১৯ শতকের চার্লস ব্যাবেজ কর্তৃক আবিষ্কৃত ডিফারেন্স ইঞ্জিনের যন্ত্রটি। এই যন্ত্রটিতে লোহার রডে অক্ষর ছাপা থাকত আর কাগজগুলো রডের নিচে রাখা হতো। এভাবে ছাপার কাজ করা হতো। প্রথম বাণিজ্যিক প্রিন্টারগুলো যেমন ইলেক্ট্রিক টাইপরাইটার এবং টেলিটাইপ মেশিন এই পদ্ধতিতে কাজ করত। দ্রম্নতগতির প্রিন্ট নেওয়ার চাহিদা থেকে নতুন ধরনের পদ্ধতি আবিষ্কারের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিল, বিশেষ করে কম্পিউটারের সঙ্গে ব্যবহারের জন্য। ১৯৮০ দশকে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত যন্ত্রগুলো যেমন ডেইজি হুইল পদ্ধতির মিল ছিল টাইপরাইটারের সঙ্গে। লাইন প্রিন্টার একই ধরনের আউটপুট দিত। ডট মেট্রিক্স পদ্ধতি যাতে লেখা এবং গ্রাফ বা ছবি একত্রে প্রিন্ট করা যেত। বস্নুপ্রিন্টের মতো উচ্চমানের গ্রাফিক্সের জন্য পস্নটার ব্যবহার করা হতো।
১৯৮৪ সালে কম খরচে প্রথম এইচপি লেজারজেট লেজার প্রিন্টার-পরবর্তী বছর অ্যাপলের পোস্টস্ক্রিপ্ট লেজার রাইটারের মধ্য দিয়ে ডেস্কটপ প্রকাশনা মুদ্রণে বিপস্নব আসে।
১৯৯০ এবং ২০০০ দশকের সময়ে ইন্টারনেট ই-মেইলের দ্রম্নত বিস্তার ও ব্যাপক ব্যবহার মুদ্রণের প্রয়োজনীয়তাকে মস্নান করে দেয়। কাগজে মুদ্রিত লেখা যা অফলাইনে পড়ার জন্য ব্যবহার করা হতো। যেমন বিমানযাত্রা বা গণপরিবহণে সেখানেও এখন ইবুক রিডার বা ট্যাবলেট ব্যবহার করা হয়। আজকাল প্রিন্টারগুলো ব্যবহার করা হয় বিশেষ উদ্দেশ্যে। যেমন ছবি বা শিল্পকর্ম প্রিন্ট করতে। আগের মতো আবশ্যকীয় পেরিফেরাল হিসেবে এখন প্রিন্টার আর ব্যবহার করা হয় না।
২০১০ সাল থেকে ৩য় মাত্রার মুদ্রণে ব্যাপক আগ্রহ দেখা গেছে, যাতে বাস্তবিক বস্তুর প্রতিরূপ মুদ্রণ সম্ভব। যেমনটা আগের লেজার প্রিন্টার একটি চালান প্রিন্ট করা হতো।
প্রিন্টারের প্রকারভেদ : ব্যক্তিগত প্রিন্টার বানানো হয়েছে একক ব্যক্তির ব্যবহারের উদ্দেশ্যে, যা হয়তো শুধু একটি কম্পিউটারেই ব্যবহার করা হবে। প্রিন্টারটি বসাতে তেমন কোনো অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হয় না। এগুলোর নকশা করা হয়েছে কম পরিমাণ মুদ্রণের এবং স্বল্প ক্ষমতার মুদ্রণ কাজের জন্য। তাই এগুলো সাধারণত নিম্নগতিসম্পন্ন হয়। যেমন ৬ থেকে প্রায় ২৫ পাতা। প্রতি মিনিটে এবং প্রতি পাতা অনুসারে খরচ বেশি পড়ে। কিছু প্রিন্টার রয়েছে যেগুলো মেমোরি কার্ড বা ডিজিটাল ক্যামেরা বা স্ক্যানার থেকে প্রিন্ট করতে পারে।
নেটওয়ার্ক বা বণ্টিত প্রিন্টারের নকশা করা হয়েছে উচ্চ পরিমাণ ও দ্রম্নতগতির জন্য। এগুলো সাধারণত একই নেটওয়ার্কে থাকা অনেকেই ব্যবহার করে এবং প্রিন্টের গতি ৪৫ থেকে ১০০ পাতা প্রতি মিনিটে। জেরক্স ৯৭০০ প্রতি মিনিটে ১২০ পাতা পর্যন্ত প্রিন্ট করতে পারে।
ভার্চুয়াল প্রিন্টার হলো এমন এক প্রিন্টার, যা বাস্তবিক প্রিন্টারের মতোই আচরণ করে। কিন্তু আসলে এটি সফটওয়্যার। একটি থ্রিডি প্রিন্টার হলো এমন এক যন্ত্র, যা তৃতীয়মাত্রার বস্তু তৈরি করতে পারে থ্রিডি মডেল বা অন্যান্য উৎস থেকে। আরো কিছু প্রিন্টার রয়েছে, সেগুলো হলো : ডিজিটাল মিনিল্যাব, ইলেক্ট্রোলিটিক প্রিন্টার, স্পার্ক প্রিন্টার, বারকোড প্রিন্টার, বিলবোর্ড/সাইন পেইন্ট স্প্রে প্রিন্টার, পণ্য মোড়কীকরণের জন্য লেজার প্রিন্টার, মাইক্রোস্পিয়ার।
প্রযুক্তি : খরচের ওপর প্রিন্টার প্রযুক্তির বাছাই করার ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। এছাড়া কার্য সম্পাদনের খরচ, দ্রম্নততা, মান এবং কাগজের ব্যবহার ও শব্দের প্রভাবও লক্ষ্য করার মতো। কিছু কিছু প্রিন্টার প্রযুক্তি বিশেষ ধরনের মাধ্যমের সঙ্গে কাজ করে না যেমন স্বচ্ছ বা কার্বন কাগজ। পরিবর্তনে বাধা প্রিন্টার প্রযুক্তির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যা প্রায়শই উপেক্ষা করা হয়। যেমন তরল কালির প্রিন্টার প্রযুক্তিতে প্রিন্ট করলে কালি কাগজের উপরিভাগে প্রবেশ করে, যা পরিবর্তন করা কষ্টকর। কিন্তু টোনার বা সলিড কালিতে এই সমস্যা হয় না।
আধুনিক প্রিন্টারগুলোতে নিম্নোক্ত প্রযুক্তি দেখতে পাওয়া যায় : টোনারভিত্তিক প্রিন্টার, তরল ইঙ্কজেট প্রিন্টার, সলিড ইঙ্ক প্রিন্টার, রঞ্জক-সাবলিমেশন প্রিন্টার, কালিবিহীন প্রিন্টার, অপ্রচলিত এবং বিশেষ উদ্দেশ্যের প্রিন্টার প্রযুক্তি, ইমপেক্ট প্রিন্টারস, টাইপরাইটার ডিরাইভড প্রিন্টার, টেলিটাইপরাইটার থেকে আগত প্রিন্টার, ডেইজি হুইল প্রিন্টার, ডট মেট্রিক্স প্রিন্টার, লাইন প্রিন্টার, তরল কালিবিশিষ্ট ইলেক্ট্রোস্ট্যাটিক প্রিন্টার।