সাইবার অপরাধীদের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার মোবাইল অ্যাপিস্নকেশন বা অ্যাপ। বিভিন্ন জনপ্রিয় অ্যাপের নকল তৈরি করে তার মাধ্যমে ফোনে ম্যালওয়্যার ছড়াচ্ছে। সেই সঙ্গে স্মার্টফোন হ্যাক করে চুরি করছে ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য। এ জন্য বুঝেশুনে অ্যাপ ডাউনলোড করার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। গুগল পেস্ন বা অ্যাপ স্টোর যেখান থেকেই অ্যাপ ডাউনলোড করুন না কেন কিছু বিষয় খেয়াল রাখুন। চেষ্টা করুন অফিশিয়াল অ্যাপ স্টোর বা পেস্ন স্টোর থেকে অ্যাপ ডাউনলোড করার। অনেকেই বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে অ্যাপস ডাউনলোড করেন। এতে নকল অ্যাপ স্মার্টফোনে ঢুকে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে অনেক বেশি। তাই এ কাজ এড়িয়ে চলুন।
ডাউনলোড করার আগে অবশ্যই অ্যাপের ডেসক্রিপশন দেখে নিন ভালোভাবে। অ্যাপের ডেসক্রিপশন কোনো ধরনের ভুল থাকা মানেই হলো অ্যাপটি ভুয়া হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। এটি সবচেয়ে সহজ উপায় ভুয়া অ্যাপ চেনার। অ্যাপের রিভিউগুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করুন। কোনো অ্যাপ ডাউনলোড করার আগে তার রিভিউগুলো পড়ে নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ। কারণ নকল অ্যাপে রিভিউ ভালো থাকে না। অ্যাপের ডাউনলোডের সংখ্যাকেও বিবেচনা করুন। যদি কোনো অ্যাপ ভুয়া থাকে তাহলে সেই অ্যাপের ডাউনলোড সংখ্যাও কম থাকবে। প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষই ডাউনলোডের সংখ্যা দেখে ডাউনলোড করেন। রিলিজের সময়টাও দেখুন। তাহলে বুঝতে পারবেন কত সময়ের মধ্যে কতসংখ্যক মানুষ এটি ডাউনলোড করেছে।
মোবাইলের ম্যালওয়্যার সম্পর্কে সতর্কতা
মোবাইলে ফ্রি অ্যাপ পেলেই আমরা ডাউনলোড করে ফেলি। কিন্তু এর সব অ্যাপস যে মোবাইলের জন্য উপকারী তা নয়- কিছু কিছু অ্যাপ মোবাইলের জন্য বেশ ক্ষতিকর। সেসব ক্ষতিকর অ্যাপগুলো জেনে নিই।
সাধারণত পেস্ন স্টোর বা অ্যাপ স্টোরে নানা ধরনের অ্যাপ উন্মুক্ত থাকে ব্যবহারকারীদের জন্য। বেশির ভাগ অ্যাপ বিনামূল্যে থাকায় অনেক ব্যবহারকারী বিভিন্ন ধরনের অ্যাপ ব্যবহার করেন মোবাইল ফোনে। তবে সব ধরনের অ্যাপ কিন্তু উপকারী নয়। গুগল পেস্ন স্টোরে লুকিয়ে আছে এমন কিছু ক্ষতিকারক অ্যাপ। গুগলের নানা প্রচেষ্টা সত্ত্বেও এসব অ্যাপ বিভিন্নভাবে গুগল পেস্ন স্টোরে জায়গা করে নেয়। সম্প্রতি একটি নিরাপত্তা সংস্থা জানায়, অফিসিয়াল গুগল পেস্ন স্টোরে বেশ কয়েকটি ক্ষতিকারক অ্যাপিস্নকেশন তালিকাভুক্ত আছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি অ্যাপ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ভাইরাস হিসেবে লুকিয়ে আছে। এসব অ্যাপ মোবাইলের পাশাপাশি তথ্য বেদখল হওয়ার ক্ষেত্রে সক্রিয় থাকে।
অ্যান্টিভাইরাস তৈরি প্রতিষ্ঠান সিমেন্টেক ও চেক পয়েন্টের মতো নিরাপত্তা সংস্থার গবেষকরা গুগল পেস্ন স্টোরে লুকানো ম্যালওয়্যার সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছেন ব্যবহারকারীদের। তাদের মতে, এ ধরনের অ্যাপিস্নকেশনগুলো সাধারণত ডিভাইস বুস্টার, ক্লিনার্স, ব্যাটারি ম্যানেজারস এমনকি হরোস্কোপ-থিমযুক্ত অ্যাপিস্নকেশনের মধ্যে লুকিয়ে থাকে। এ ছাড়া গেম, অ্যাডুকেশন বা ক্রিপ্টোকারেন্সি অ্যাপিস্নকেশনের মধ্যেও এসব ক্ষতিকারক অ্যাপ থাকতে পারে।
অ্যাপিস্নকেশনগুলোর মধ্যে কয়েকটি অ্যাপিস্নকেশন গ্রাহককে বাধ্য করে তাদের অ্যাপ ইনস্টলের জন্য। কোনো ব্যবহারকারী পেস্ন স্টোরে ঢোকামাত্রই কাজটি করে তারা। আবার কিছু অ্যাপ আছে যা দেখতে উপকারী মনে হলেও স্মার্টফোনকে ক্ষতি করছে। এরকম কিছু অ্যাপ সম্পর্কে জেনে নিন এবং এখনই আপনার স্মার্টফোন থেকে ডিলিট করুন :
মাস্টার ক্লিনার : স্মার্টফোনের গতি ঠিক রাখতে মাস্টার ক্লিনার ব্যবহার করেন অনেকে। এটা ব্যবহারকারীদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়তাও পেয়েছে। তবে অ্যাপটি স্মার্টফোনের জন্য অনেক ক্ষতির কারণ হতে পারে। এটি স্মার্টফোনে না রাখাই ভালো।
অ্যাপ-লক প্রাইভেসি প্রটেক্টর : ফোনের প্রাইভেসি বাড়ানোর জন্য অনেকের মধ্যেই এসব অ্যাপ ব্যবহার করার প্রবণতা দেখা যায়। কিন্তু এগুলো হতে পারে স্মার্টফোনেরর্ যামের জন্য অনেক সময় ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
কালারিং বুকস ফর কিডস : স্মার্টফোনের কল্যাণে আজকাল শিশুরা ফোনেই রং করা শিখতে পারছে। কিন্তু এসব অ্যাপ ইনস্টল করলে স্মার্টফোনের ব্যাটারির অনেক ক্ষতি হয়।
পারসোনাল হরোস্কোপ : প্রতিদিন হরোস্কোপ দেখার জন্য অনেকে অ্যাপটি ব্যবহার করেন। কিন্তু এটি স্মার্টফোনের গতি অনেকটাই কমিয়ে দেয়।
কলিং ফ্রি কলস অ্যান্ড ম্যাসেজেস টু অ্যানি কান্ট্রি : ইন্টারনেট ব্যবহার করে বিভিন্ন দেশে ফোন দেওয়ার জন্য পেস্ন স্টোরে আছে নানা ধরনের অ্যাপস। এগুলো স্মার্টফোনের গতি কমিয়ে দেয়।