আধুনিক নারী সমাজ
প্রকাশ | ০৯ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতি থেকেই সভ্যতার সৃষ্টি এবং আধুনিক সভ্যতার বাহনও মূলত তাই। আধুনিক সমাজ বিনির্মাণে আমাদের নারীরা শিল্প সংস্কৃতির এ ধারায় সম্পৃক্ত আছে সেই প্রাচীন কাল থেকে। বিশ্ব সভ্যতার এক মহীয়ান ও বলীয়ান শক্তির অপর নাম নারী। নারী কখনো নদী, কখনো প্রকৃতি, কখনো কোমলতার প্রতীক, কখনো সৌন্দর্যের, অপরিমিত ও ঐশ্বর্যমন্ডিত সভ্যতার সূতিকাগার হলো এই নারী। নারী শুধু সৌন্দর্যের প্রতীক-ই নয় বরং সুন্দরের শোভা ধারণকারী ও ভিত রচনাকারী। একজন নারীই পারে আদর্শ একটা সমাজ ও জাতি গঠন করতে। নারী শুধু একটা সত্তার নাম নয়, শুধু অনুপ্রেরণাই নয় বরং গুণ, বৈশিষ্ট্য ও কর্মদক্ষতার অন্যতম সমাহার। বেঁচে থাকার অবলম্বন, টিকে থাকার অনিবার্য দাবি ও নতুনত্ব সভ্যতা রূপায়ণের চালিকাশক্তির ভিত। নারীর কারণেই পৃথিবীটা এত সুন্দর, সুষমামন্ডিত ও গৌরবান্বিত হয়েছে। কেননা, 'এ নারীই গড়ে তুলেছে স্বপ্নের প্রসাদ, ভবিষ্যতের বুনিয়াদ ও নব-উদ্ভাবন। সমস্ত মেধা, যোগ্যতা, দক্ষতা, সহনশীলতা, সহযোগিতা, প্রেম-ভালোবাসা দিয়ে উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে পুরুষ জাতিকে। গড়ে তুলেছে সভ্যতার সোপান। পরম মমতায় গড়ে তুলেছে এ পৃথিবী। বাসযোগ্য করে তুলেছে এ বিশ্ব জগৎ। পুরুষকে সর্বদা শক্তি যুগিয়েছে, সাহস যুগিয়েছে, যুগিয়েছে হিম্মত। নারী ভালোবাসার মূর্তপ্রতীক ও অনুপ্রেরণা আলোকোজ্জ্বল পথনির্দেশিকা।' আমরা যদি প্রাচীন ভারতের ইতিহাসের দিকে নজর দেই তাহলে দেখতে পাই যে, রামায়ণ মহাভারতের মধ্যে নারী চরিত্র সৃষ্টি করে নারী যেভাবে মহিমা অর্জনে সক্ষম হয়েছেন, তার তুলনামূলক চিত্রায়ণের পথ ধরে আধুনিক নারীরাও সব বৈরী পরিস্থিতির মোকাবিলা করে তার যথাযথ নিয়ন্ত্রণ ও কর্মকুশলতায় অগ্রসরমান প্রগতির ধারায় এক অদম্য প্রেরণায় দু্যতি ছড়িয়েছেন বলা যায়। আর যদি সামান্য পেছনের দিকে তাকাই তাহলে আমাদের এ বাংলাদেশেই অসামান্য ব্যক্তিত্বের ইতিহাস সমৃদ্ধ ও মহিমার অধিকারী মহীয়সী নারীরা আছেন- যারা কিংবদন্তির অংশ হয়েছেন। তাদের মধ্যে বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন, বেগম সুফিয়া কামাল, নীলিমা ইব্রাহিম প্রমুখ। একাধারে প্রাবন্ধিক, ঔপন্যাসিক, সাহিত্যিক বেগম রোকেয়া নানান প্রতিবন্ধকতা আর সামাজিক কুসংস্কার থেকে মুসলিম নারী সমাজকে আলোর পথ দেখিয়েছিলেন। তার লেখনীতে একদিকে যে বিজ্ঞান সম্পর্কে অনুসন্ধিৎসার পরিচয় পাওয়া যায়। অন্যদিকে, নারী সমাজের পশ্চাৎপদতার নানা কারণ উলেস্নখ করে তাদের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক স্বাবলম্বিতা অর্জন করে সম-অধিকার প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছেন। দেশে নারী আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ ও প্রথিতযশা কবি সুফিয়া কামাল। বাঙালি নারী জাগরণের আরেক পথিকৃত নীলিমা ইব্রাহিম। মেধাবী এই নারী প্রথম বাঙালি যিনি নারী হিসেবে বাংলায় ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেছিলেন। তিনি ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক ও সমাজকর্মী। সংস্কৃতি বলতে আমরা সাধারণত সাহিত্য, শিল্প, নৃত্যগীত ও বাদ্য বুঝে থাকি। এগুলো সংস্কৃতির অপরিহার্য অঙ্গ, তবে এগুলোই সংস্কৃতির সবটা নয়। সংস্কৃতি বলতে মুখ্যত দু'টি ব্যাপার বোঝায় : বস্তুগত সংস্কৃতি আর মানস-সংস্কৃতি। ঘরবাড়ি, যন্ত্রপাতি, আহার-বিহার, জীবনযাপন প্রণালি- এসব বস্তুগত সংস্কৃতির অন্তর্গত। আর সাহিত্যে-দর্শনে শিল্পে-সঙ্গীতে মানসিক প্রবৃত্তির যে বহিঃপ্রকাশ ঘটে, তাকে বলা যায় মানস-সংস্কৃতি। বস্তুগত আর মানস-সংস্কৃতি মিলিয়েই কোনো দেশের বা জাতির সাংস্কৃতিক পরিচয় ফুটে ওঠে। একইভাবে বস্তুগত শিল্প আর মানসগত শিল্পরূপ আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশে পরিণত হয়েছে। নারীর কর্মক্ষেত্র প্রসারিত হলেই সংস্কৃতি বিচিত্ররূপে বিকশিত হতে পারে উৎপাদন কাজে এবং শিল্প সাহিত্য জগতে- দুই ক্ষেত্রেই। কৃষিকাজে নারী এখন কঠিন শ্রম দেয় (কৃষি নারীরই আবিষ্কার), কোনো কোনো সমাজে দুরূহ পদ্ধতিতে অন্ন সংগ্রহ, পানীয় সন্ধান ও বহন করে আনে নারী, ভারতের উত্তর প্রদেশের প্রত্যন্ত এলাকায় এটি বেশি ঘটে। কিন্তু দ্রম্নত শিল্পায়ন নারীকে অনেকভাবে সংকটগ্রস্ত করছে। প্রযুক্তিগত উন্নতি ও শিল্পায়নে পুরুষ যত বেশি কাজ ও মজুরি পাচ্ছে, নারী তা পাচ্ছে না। এ পুরুষ চাষবাস থেকে সরে আসে, পেছনে ফেলে আসে নারী ও অপ্রাপ্তবয়স্ক অসহায় শিশুদের। কর্মহীন নারীরা শিশু কোলে নিয়ে ভিক্ষুক সাজে, অন্ন সংগ্রহের আদিম অবস্থায় ফিরে যায়। পৃথিবীব্যাপী আজ দারিদ্র্যের মুখ, অন্ন সংগ্রহের ক্ষুৎকাতর প্রতিচ্ছবি নারী ও শিশুর, তাই এ বিশ্বের অপুষ্টি ও অভুক্ত অবস্থার প্রতীক হচ্ছে নারী ও শিশু। পণ্যজীবী সভ্যতা আর মুক্তবাজার অর্থনীতিতে তৈরি হচ্ছে এ রকম সাংস্কৃতিক রূপ, পাশাপাশি রমরমা চমক, চাকচিক্যের দৃষ্টান্তও কম নেই। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ। এ দেশের উন্নয়নে নারীর অংশগ্রহণও ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারে বা রাখছে। কারণ আমাদের দেশের জনগোষ্ঠীর প্রায় অর্ধেকই নারী। তাই নারীসমাজকে সঙ্গে নিয়েই আমাদের উন্নয়নের পথে হাঁটতে হবে। নারীরা উন্নত দেশ গড়ার লক্ষ্যে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে নিজেদের শামিল করতে পারে। তথ্যপ্রযুক্তির যথোপযুক্ত ব্যবহার নারীকে তার অধিকার রক্ষায় যে এগিয়ে নিতে পারে তেমনি তার ক্ষমতায়নেও সহায়ক ভূমিকা পালন করে। আইসিটির ক্রমবর্ধমান বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে একজন নারী শিক্ষিত হলে একটি অঞ্চল এমনকি একটি দেশের মানুষ শিক্ষিত হতে পারে। এ জন্য তাদের প্রযুক্তি ব্যবহারের মধ্য দিয়ে নারীর ক্ষমতায়ন, নতুন প্রযুক্তিভিত্তিক দক্ষতা ও আইসিটি পেশায় প্রবেশ করার সুযোগ রয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উপলব্ধি করেছিলেন যে, জাতীয় উন্নয়নের জন্য নারীর ক্ষমতায়ন জরুরি। তাই বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানে রাষ্ট্র ও জনজীবনের সব পর্যায়ে নারীদের সমঅধিকারের নিশ্চয়তা দেওয়া হয় ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে রাষ্ট্রের বিশেষ বিধান প্রণয়নের ক্ষমতার সংযোজন করা হয় (অনুচ্ছেদ-২৮)। আবার ১০ নম্বর অনুচ্ছেদে ন্যায়ানুগ সমাজ গঠনের অঙ্গীকার করা হয়েছে। সর্বোপরি ১৯ নম্বর অনুচ্ছেদে সুনাগরিকদের মধ্যে সুযোগের সমতা, সমাজের সুষম বণ্টন এবং সামাজিক অর্থনৈতিক অসাম্য বিলোপের প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়। জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আইসিটি খাতে নারীর ক্ষমতায়ন ও সমতায়নে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। রূপকল্প-২০২১ এর মাধ্যমে সরকার নারী উন্নয়ন নিশ্চিত করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করেছে। ন্যাশনাল ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি (আইসিটি) পলিসি-২০১৫ লিঙ্গ সমতার ওপর জোর দিয়েছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের জন্য দেশ লিঙ্গ সমতা ও নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার নানা কৌশল গৃহীত ও বাস্তবায়িত হয়েছে। আমাদের বর্তমান সমাজে 'নারীদের উন্নয়ন এবং অর্থনীতির উন্নতি' আলোচনার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটি মূলত জেন্ডার সমতা নির্দেশ করে- যা অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক বা সামাজিক প্রেক্ষাপটে নারীদের অবস্থানকে বুঝায়। সমাজের নিপীড়িত নারীরা অনলাইন অ্যাক্টিভিজমের মাধ্যমে অপর নারীকে সংগঠিত করে তাদের মতামত প্রকাশের মাধ্যমে নিজেদের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে পারে। শুধু তাই নয়, নারীরা এখন তাদের বাড়ি থেকে অধ্যয়ন করতে পারে। ই-লার্নিংয়ের মতো নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রশিক্ষণের দ্বারা নারীরাও এগিয়ে যেতে পারে। সারাদেশে প্রায় ৬ লাখ ৫০ হাজার ফ্রিল্যান্সার রয়েছে। মাত্র কয়েক বছরে ১০ হাজার ৫০০ নারী উদ্যোক্তা তৈরি হয়েছে। আইসিটি বিভাগের এলআইসিটি প্রকল্প থেকে, মাস্টার ক্লাসে অংশগ্রহণ করে প্রান্তিক গ্রামীণ নারীরা ডিজিটাল বিপণন এবং উৎপাদন থেকে শুরু করে বিক্রয় পর্যন্ত একটি ব্যবসায়িক মডেল তৈরি সম্পর্কে ধারণা লাভ করেছে। দেশে ৮ হাজার শেখ রাসেল ডিজিটাল কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। শতবর্ষ স্বপ্ন আশা প্রকল্পের মাধ্যমে ১০০ কোটি টাকা দিয়ে ৫০টি স্টার্টআপ প্রদান করা হয়েছে। এতে নূ্যনতম ৩০ শতাংশ নারী উদ্যোক্তা অন্তর্ভুক্ত রাখার অঙ্গীকার করা হয়েছে। বিগত এক যুগে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নসহ শিক্ষা, শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণ এবং মজুরির মতো ক্ষেত্রগুলোতে লিঙ্গবৈষম্য দূর করার ক্ষেত্রে বৈপস্নবিক অগ্রগতি হয়েছে। তবে, ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারে সুযোগ লাভের ক্ষেত্রে লিঙ্গ ব্যবধান এখনো বেশি। যদিও নারী আমাদের জনসংখ্যার অর্ধেক, আইসিটি সেক্টরে তাদের অংশগ্রহণ এখনো সন্তোষজনক নয়। দেশে ৮৬ শতাংশ পুরুষের কাছে মোবাইল ফোন রয়েছে যেখানে শুধু ৬১ শতাংশ নারী মোবাইল ফোনের মালিক। ৪০ শতাংশ পুরুষের তুলনায় ৩১ শতাংশ প্রযুক্তি-অক্ষম নারীদের ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। তবে অধিকাংশ পুরুষ মনে করে একজন নারীকে প্রযুক্তি ব্যবহার করার জন্য শিক্ষিত হতে হবে- যা পুরুষদের জন্য প্রয়োজনীয় নয়। এর পেছনের কারণ হলো গ্রামীণ সমাজে নারীর প্রতি ধারণা, পুরুষতান্ত্রিক মনোভাব ও সংস্কৃতি। সভ্যতার শুরু থেকেই পুরুষের পাশাপাশি নারীরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের যোগ্যতা ও দক্ষতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছেন। কৃষি থেকে শুরু করে শিল্প সংস্কৃতিতে তাদের অবদান অনস্বীকার্য। আমাদের দেশের নারীরা প্রাচীনকাল থেকেই চারু ও কারুশিল্পে বেশ পারদর্শী। গ্রামীণ সমাজে গৃহস্থালি কাজের ফাঁকে নারীরা নকশিকাঁথা, মাটির পুতুল, নকঁশিপাখা, শীতল পাটি, পাটের শিকা, চারকা কাটা, তাঁতে কাপড় বোনা, কাগজের ফুল, কাপড়ের পুতুল, বাঁশ ও বেতের সরঞ্জাম তৈরিসহ বিভিন্ন ধরনের কারুপণ্য তৈরি করে আসছেন। লোক ও কারুশিল্পে নারীদের তাদের অবদানের স্বীকৃতি দিতে ও এ শিল্পের প্রসারে ভূমিকা পালনের জন্য বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন পুরুষ কারুশিল্পীদের পাশাপাশি নারী কারুশিল্পীদের নিয়মিত লোকজ উৎসবে অংশ নেওয়ার সুযোগ দিচ্ছেন। এতে নারী কারুশিল্পীদের দেখে অনেকেই এ শিল্পকে পেশা হিসেবে নেওয়ার জন্য আগ্রহী হচ্ছেন। পাশাপাশি নতুন নতুন নারী উদ্যোক্তাও সৃষ্টি হচ্ছে। নারীরা তাদের মেধা ও মননশীলতাকে কাজে লাগিয়ে স্ব স্ব শিল্পকর্ম তৈরি করে সবার কাছে প্রশংসিত হচ্ছেন। শুধু আমাদের দেশে নয়, বিদেশেও বিভিন্ন লোকজ মেলা, প্রদর্শনী ও কারুশিল্প সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন এ নারী কারুশিল্পীরা। সোনারগাঁওয়ের লোকজ উৎসবসহ দেশের বিভিন্ন কারুশিল্প প্রদর্শনীতে কারুশিল্পীরা অংশগ্রহণ করে থাকেন। বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত বিভিন্ন কারুশিল্পীরা যদি উপযুক্ত উদ্যোক্তা পস্নাটফর্মে আসার সুযোগ পায় তাহলে তাদের উৎপাদিত পণ্য বিশ্বে জনপ্রিয়তা লাভ করবে। আর বিশ্বেও তাদের পণ্যের চাহিদার বিস্তৃতি লাভ করবে। আজকের এ বিশ্বায়নের যুগে আমাদের উৎপাদিত পণ্য বিশ্বায়ন মানের হবে এবং আমাদের নারীরা শিল্প, কারুশিল্প সাংস্কৃতিক জগৎকে আরো উর্বর, সতেজ, দৃষ্টিনন্দন ও আকর্ষণীয় করে তুলবেন- সেই দিন আর বেশি দূরে নয়।