বীরাঙ্গনা হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধে রণাঙ্গনের বীর নারী। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে অনেক নারী পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের সহযোগীদের দ্বারা ধর্ষিত হয়।
১৯৭১-এর ২২ ডিসেম্বর, যুদ্ধ শেষ হওয়ার ছয়দিন পর নির্যাতিত নারীদের বীরাঙ্গনা উপাধি দেওয়া হয়। রাষ্ট্রীয়ভাবে তাদের 'বীরাঙ্গনা' স্বীকৃতি দিয়ে সে সময় বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, 'আজ থেকে পাকবাহিনী কর্তৃক নির্যাতিত মহিলারা সাধারণ মহিলা নয়, তারা এখন থেকে বীরাঙ্গনা খেতাবে ভূষিত।' আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে নারীর সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল উলেস্নখযোগ্য। এই যুদ্ধে নারীর ভূমিকা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, নারী তার সর্বাত্মক শক্তি নিয়োগ করেছিল স্বাধীনতার মতো একটি বড় অর্জনে। পুরুষের পাশাপাশি নারীর অংশগ্রহণ ছিল তার জীবনবাজি রাখার ঘটনা। অথচ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে নারীকে মূলধারায় স্থাপন না করার ফলে নারীর প্রকৃত ইতিহাস যথাযথভাবে মূল্যায়ন করা হয়নি। সারাদেশের মতো ভাটি এলাকা সুনামগঞ্জেও রয়েছে অনেক বীরাঙ্গনা যাদের সবার পরিচয় আজো ওঠে আসেনি। সুনামগঞ্জের কৃতী সন্তান আমেরিকা প্রবাসী লেখক ও মুক্তিযুদ্ধ গবেষক রনেন্দ্র তালুকদার পিংকু তার 'ভাটির বীরাঙ্গনা' বইয়ে তুলে ধরেছেন সুনামগঞ্জ জেলার ১২ জন বীরাঙ্গনার জীবনবৃত্তান্ত। এরা হলেন- কাঁকন বিবি, পিয়ারা বেগম, বাসন্তী ধর, মুকতা বানু, জমিলা খাতুন, জাহেরা বেগম, প্রমিলা দাস, কুলসুমা বিবি, মোহিনী বিশ্বাস, লালবানু, মিনারা বেগম, মনজান বিবি। বইটি অমর একুশে গ্রন্থমেলা-২০২৪ এ প্রকাশ করেছে অভ্র প্রকাশন। প্রচ্ছদ করেছেন ধ্রম্নব এষ। রনেন্দ্র তালুকদার পিংকু তার বইয়ের সম্পাদকীয় অংশে মুক্তিযুদ্ধে সুনামগঞ্জ অঞ্চলের কথা বিশেষ দুর্গম জনপদ দিরাই ও শালস্নার কথা উলেস্নখ করেছেন। লেখক বলেন, '১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে সারাদেশের ন্যায় সুনামগঞ্জেও প্রতিরোধযুদ্ধ হয়। সুনামগঞ্জ জেলার সর্বত্র ছোট-বড় প্রায় ২৭টি সম্মুখযুদ্ধ সংঘটিত হয়। সুনামগঞ্জ জেলার হাওড়-বাঁওড় ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে দিরাই-শালস্নার ভাটি এলাকায় শত শত মা-বোনদের ইজ্জত দিতে হয়েছে। অনেকেই বীরাঙ্গনা হয়েছেন, শত্রম্নর সঙ্গে আপস করেননি। ১৯৮৪ সালে সংবাদপত্রের সঙ্গে জড়িত হওয়ার পর থেকে যখন যে এলাকায় সংবাদ সংগ্রহের জন্য হাজির হয়েছি, তখন থেকেই যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা কিংবা যুদ্ধে শহীদ হওয়া মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের খোঁজ নিয়েছি। সংবাদ তৈরি করে পত্রিকায় প্রকাশ করার চেষ্টা করেছি। বছরের পর বছর ঘুরে কাঁকন বিবিকে আবিষ্কার করেছি। সুনামগঞ্জে অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে নৌকায় শালস্না যেতে দুই দিন সময় প্রয়োজন ছিল- যা এখন কল্পনারও বাইরে। নৌকাই একমাত্র বাহন। দিরাই-শালস্নার অনেক গ্রামেই নির্যাতিত নারী ছিলেন, ছিলেন বীরাঙ্গনা। ৮০-র দশকে মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনাদের সংবাদ প্রকাশ দুরূহ ছিল। যেসব রাজাকার গ্রাম থেকে সুন্দরী যুবতীদের তুলে নিয়ে নিজেরা ধর্ষণ করেছে, পাকিস্তানি মিলিটারি বাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছে, তারা এরশাদ আমলেও ক্ষমতাধর ছিল। ভাটি এলাকায় শ্রেষ্ঠ প্রদীপ রাজাকারও তখন চেয়ারম্যান ছিল, ক্ষমতাবান ছিল। ফলে ভাটির মুক্তিযোদ্ধারা মুখ খুলতে সাহস পেতেন না।' মুক্তিযুদ্ধে বীরাঙ্গনা শিরোনামে লেখক সুনামগঞ্জ শহরে ও এ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় নারী নির্যাতন সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন, '১৯৭১ সালে পাকিস্তানি মিলিটারি বাহিনী সুনামগঞ্জ শহর ও জেলা দখলে নেওয়ার পর থেকে স্থানীয় রাজাকারদের সহায়তায় শত শত নারীর ওপর চালানো হয় পাশবিক নির্যাতন। ধর্ষণসহ বহু নারীকে হত্যা করা হয়। সাপ্তাহিক 'বিন্দু বিন্দু রক্তে' পত্রিকা ও সূর্যের দেশ পত্রিকায় সেসব নারীদের কথা বলা হয়েছিল। দিরাই উপজেলার চাঁনপুর গ্রামের গোকুলমণি রায়ের দুই কন্যা নন্দিতা রায় ও রঞ্জিতা রায়কে রাজাকাররা ধরে নিয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে ওরা মুক্তি পেলেও মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। টেংরাটিলা গ্রামের আব্দুর রহমানের মেয়ে মহেচানকে ধর্ষণ করে পাকিস্তান বাহিনী। সুনামগঞ্জ শহরের আরপিননগর এলাকার নাসিমা সম্ভ্রম হারান পাকবাহিনীর হাতে। নির্যাতনের শিকার হন, টেংরাটিলা গ্রামের আব্দুল হালিমের মেয়ে হালিমা বেগম, আছিম উদ্দিনের মেয়ে বকুল, আনমত আলী মুন্সীর মেয়ে সাহেদা বেগম, আজমপুর গ্রামের জবান উলস্নার মেয়ে আনোয়ারা বেগম একই গ্রামের ভরিফুস বেগম। সাচনা বাজারের কুমুদ বন্ধু ঘোষ চৌধুরীর দুই মেয়ে সবিতা ঘোষ চৌধুরী ও নমিতা ঘোষ চৌধুরী পাকবাহিনীর পাশবিক নির্যাতনে প্রাণ হারান। উত্তর কামলাবাজ গ্রামের আম্বিয়া নির্যাতিত হন পাকবাহিনীর দ্বারা। আরও ধর্ষিত হন পুরাণ লক্ষ্ণণশ্রী গ্রামে পরমা বর্মণ ও তার কন্যা, ডুংরিয়া গ্রামের জয়মালা বেগম, হোসেনপুর গ্রামের দীপালী রাণী দাস, দামোরতপী, চড়ুখাই এবং মামুদপুর গ্রামের পঞ্চগুলা সূত্রধর, বিপুলা দান, কানন বালা দাগ, শরী রাণী দাস, জবা প্রাণী দাস, বিষহরি দাস। এ ছাড়াও স্থানীয় রাজাকারদের সহায়তার সাফেলা গ্রামের সুকৃতি বালা, রুনু বালা, মাতুঙ্গিনী দেবীকে ধর্ষণ করা হয়। সদর উপজেলার জাহাঙ্গীরনগর, মঙ্গলকাটা, সুরুজপুর, আইমারগাঁও থেকে ১৫ জন নারীকে ধরে নিয়ে যায় পাকবাহিনী। ধর্মপাশার প্রীতি রাণী, কাজিরগাঁওয়ের হাসিনা, গণিগঞ্জের উমা রাণী এবং শ্যামারচরের সবিতা রাণী দাস পাকবাহিনীর লালসার শিকার হন।
ভাটির বীরাঙ্গনা বইয়ে যে ১২ জন বীরাঙ্গনার কথা লেখক বলেছেন তাদের মধ্যে অন্যতম কাঁকন বিবি। কাঁকন বিবি যাকে কেউ কেউ মুক্তিবেটি কাঁকন বিবি নামে চিনত। লেখক তার কাঁকন বিবি নিবন্ধে বলেছেন, ১৯৯৬ মালে সুনামগঞ্জ জেলায় দোয়ারাবাজার উপজেলার সীমাডকী ঝিরাগাঁও গ্রামের কৃষক শাহিদ আলীর বাড়িতে প্রথম কাঁকন বিবির দেখা পান। তখন কাঁকন বিবি ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। ৯টি সশস্ত্র সন্মুখ যুদ্ধে অংশ নেওয়া কাঁকন বিবি খাসিয়া নৃতাত্ত্বিকগোষ্ঠীভুক্ত নারী। তার মূল বাড়ি ছিল ভারতের মেঘালয় রাজ্যের নত্রাই নামক গ্রামে, বাবার নাম গিসয়, মায়ের নাম মেলি। কাঁকন বিবির মূল নাম কাঁতেক নিয়তা, ডাক নাম কাঁকন। মুক্তিযুদ্ধের সাক্ষাৎকার নেওয়ার সময় লেখক কাঁকন নামের সঙ্গে বিবি যুক্ত করেন- যা পরবর্তী সময়ে কাঁকন বিবি নামে প্রতিষ্ঠিত হয়। কাঁকন বিবির বয়স যখন ১৫ বছর তখন পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের আব্দুল মজিদ খান নামে এক সৈনিকের সঙ্গে বিয়ে হয়। চাকরিস্থল ছিল কাঁঠালবাগান গ্রাম থেকে সামান্য দূরে পাকিস্তান সীমান্তরক্ষী ক্যাম্পে। এক সময় মজিদ খান সিলেটের আখালিয়া ক্যাম্পে কাঁকন বিবিকে ফেলে রেখে নিরুদ্দেশ হন। পরবর্তী সময়ে দিরাই থানার কৃষক শহিদ আলীর সঙ্গে বিয়ে হলে কাঁকনের নাম হয় নূরজাহান বেগম। কন্যা সন্ধান জন্ম দেওয়ার অপরাধে কাঁকন বিবিকে তালাক দেয় শহিদ আলী। তখন কাঁকন তার স্বামী আব্দুল মজিদ খানের সন্ধানে দোয়ারাবাজার সীমান্তে যায়, তখন মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। দোয়ারাবাজার টেংরাটিলা ক্যাম্প স্বামীকে খুঁজতে গেলে পাকিস্তানি বাহিনী তাকে ব্যাংকারে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে নিযার্তন করে। কাঁকন বিবি হয়ে ওঠেন প্রতিশোধপরায়ণ। পরিচয় হয় লে. মীর শওকতের সঙ্গে। তখন কাঁকন বিবিকে গুপ্তচরের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ভিক্ষুকের বেশ ধারণ করে পাকিস্তানি ক্যাম্পে গিয়ে মুক্তিবাহিনীর জন্য খবর নিয়ে আসত কাঁকন। পাকিস্তান বাহিনীর সদস্যরা তাকে একনাগাড়ে ৭ দিন বিবস্ত্র করে সারারাত নির্যাতন চালিয়েছিল তার ওপর। একপর্যায়ে লোহার রড গরম করে তাকে ১২/১৩টি ছ্যাক দিয়েছিল। ৯টি সশস্ত্র সম্মুখযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল কাঁকন বিবি। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় কাঁকন বিবিকে 'বীর প্রতীক কাঁকন বিবি' শিরোনামে একটি সনদ দেয়। গ্যাজেটভুক্ত না হওয়ায় বীর প্রতীকের কোনো সুযোগ-সুবিধা পাননি কাঁকন বিবি?। ২০১৮ সালের ২১ মার্চ মৃতু্যবরণ করেন কাঁকন বিবি। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে চিরদিন অক্ষয় হয়ে থাকবে কাঁকন বিবির নাম। ভাটির বীরাঙ্গনা বই থেকে জানা যায়, ভাটির আরেক বীরাঙ্গনা পিয়ারা বেগমের বাড়ি হাওড় জনপদ সুনামগঞ্জের প্রত্যন্ত অঞ্চল শালস্না উপজেলার উজানীগাঁও গ্রামে। পিয়ারা বেগম তার স্মৃতিচারণে জানান, 'দেশে যুদ্ধ যখন তুমুল পর্যায়ে তখন অগ্রহায়ণ মাসের কোনো এক তারিখে আমার বাবা আপতর মিয়া আমার ভাইয়ের বিবাহ ঠিক করেন। দিন-তারিখ মনে নেই। বিয়ের রাতে আমাদের এলাকার রাজাকার খালেক তার সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে আমাদের বাড়িতে হামলা চালায়। আমাদের পুরো গ্রামে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করে। ভাইয়ের বিয়ের দিন আমার বাবা ও ভাইকে গুলি করে মেরে ফেলে। এছাড়া আত্মীয়স্বজনসহ সাতজনকে গুলি করে হত্যা করে। রাজাকাররা শুধু মেরেই ক্ষান্ত হয়নি, আমাকে চোখ বেঁধে নৌকায় তুলে একটি গ্রামে নিয়ে যায়। গ্রামের নামটি মনে নেই। আমাকে যে ঘরে রাখা হয় তার পাশের ঘরে আরও অনেক নারী ছিল। সন্ধ্যা হলেই প্রতিটি ঘর থেকে কান্না শোনা যেত। কিন্তু কে কার কান্না থামাবে। সন্ধ্যা হলে পাকিস্তানি আর্মি এসে আমাদের নির্যাতন করত। তাদের মনোবাসনা শেষ হলে পালাক্রমে স্থানীয় রাজাকাররা আমাদের দেহের ওপর লুটিয়ে পড়ত। যেসব নারী সহবাসে রাজি হতো না, তাদের জোরপূর্বক ধর্ষণ করে ভোরবেলা গুলি করে মেরে ফেলত। কোনো এক রাতে পাকিস্তানি সেনাদের অত্যাচার মারাত্মক আকার ধারণ করলে আমি চিৎকার দিতে থাকি, তখন আমাকে বিবস্ত্র করে বন্দুক দিয়ে আঘাত করে এবং মেরে ফেলার হুমকি দেয়।' এভাবে লেখক বীরাঙ্গনাদের ওপর নিষ্ঠুর নির্যাতনের কথা তুলে ধরেন ভাটির বীরাঙ্গনা বইয়ে। রনেন্দ্র তালুকদার পিংকু তার ভাটির বীরাঙ্গনা বইয়ে সুনামগঞ্জ শহরের জেল রোডের বাসিন্দা মাতৃমঙ্গলের সেবিকা রমার মা নামে পরিচিত বাসন্তী ধরের মুক্তিযুদ্ধের সময়ের ভূমিকার কথা তুলে ধরেন। ১৯৭১ সালে মার্চের এক রাতে আনুমানিক রাত ৩টার সময় প্রসূতি মায়ের সেবাদান শেষে বাসায় ফেরার সময় এসডিও বাংলার পাশ থেকে বাসন্তী ধরকে পাকবাহিনী চোখ বেঁধে নিয়ে যায় এবং সারা রাত নির্যাতন শেষে সকালবেলা ছেড়ে দেয়। যুদ্ধ চলাকালীন ৫নং সেক্টরের খ্রিষ্টান এজেন্সি হাসপাতালে সেবিকা হিসেবেও কাজ করেন তিনি। বালাট সাব-সেক্টরের আওতায় তিনি বিভিন্ন শরণার্থী ক্যাম্পে সেবিকা হিসেবে শত শত নারী ও শিশুস্বাস্থ্য পরিচর্যায় নিবেদিত ছিলেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর পুনরায় নিজ শহর সুনামগঞ্জে চলে আসেন এবং সুনামগঞ্জ পরিবার পরিকল্পনা অফিসে সেবিকা হিসেবে কাজ শুরু করেন। ভাটির জনপদের প্রত্যন্ত উপজেলা শালস্নার দাউদপুর গ্রামের আরেকজন বীরাঙ্গনা মুকতা বানু। মুকতা বানুর স্মৃতিচারণ থেকে জানা যায়, স্থানীয় রাজাকার আব্দুল খালেক, তোতা মিয়া, শামসু মিয়াদের সহযোগিতায় একরাতে পাকবাহিনী মুকতা বানুকে তুলে নিয়ে তিন দিন পালাক্রমে ধর্ষণ করে। নির্যাতন ও মারধর করত। পরে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা তাকে তিন দিন পর উদ্ধার করে।
এভাবে লেখক ও মুক্তিযুদ্ধ গবেষক রনেন্দ্রে তালুকদার পিংকু ভাটির হাওড় জনপদে অবহেলা ও অনাদরে লুকিয়ে থাকা প্রমিলা দাস, জমিলা খাতুন, জাহেরা বেগম, কুলসুমা বিবি, মোহিনী বিশ্বাস, লালবানু, মিনারা বেগম, মনজান বিবি নামক আরও আটজন বীরাঙ্গনাদের ছবিসহ পরিচিতি ও তাদের স্মৃতিচারণ তুলে ধরেছেন। এসব তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে সাংবাদিক ও লেখক রনেন্দ্র তালুকদার পিংকু অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন, এমনকি রাজাকার ও তাদের আত্মীয়স্বজনদের হামলার শিকার হয়েছেন। তবু পিছপা হননি দেশপ্রেমিক, মানবিক মানুষ, সমাজসেবক আমেরিকা প্রবাসী লেখক রনেন্দ্র তালুকদার পিংকু। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বীরাঙ্গনাদের ইতিহাসের একটি অন্যতম সংগ্রহ রনেন্দ্র তালুকদার পিংকুর 'ভাটির বীরাঙ্গনা' বইটি।