ফ্রাঙ্কোইস বেটেনকোর্ট মেয়ার্স
বিশ্বের ধনী মহিলা প্রসাধনী সাম্রাজ্যের রানী
বস্নম্নমবার্গ বিলিয়নেয়ার্স ইনডেক্স অনুযায়ী, বছর ৭০-এ মেয়ার্সের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৮৬.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৯ লাখ কোটি টাকা। বিশ্বের ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় ১২তম স্থানে রয়েছেন তিনি। সূত্রের খবর, চলতি বছরে তার সম্পত্তির পরিমাণ ১৫.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বেড়েছে। উলেস্নখ্য, সম্প্রতি ল'রিয়েলের শেয়ারের দাম উলেস্নখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রকাশ | ০২ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
নন্দিনী ডেস্ক
ভারতীয় শিল্পপতি মুকেশ আম্বানিকে টপকে এগিয়ে গিয়েছেন এক নারী। ধনকুবের তালিকায় প্রথম ১০-এ জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। বর্তমানে কোন দেশে থাকেন দুনিয়ার সবচেয়ে ধনী নারী? কীভাবেই বা কোটি কোটি টাকার মালকিন হলেন তিনি?
বিশ্বের সবচেয়ে ধনী মহিলার নাম ফ্রাঙ্কোইস বেটেনকোর্ট মেয়ার্স। ব্যবসার পাশাপাশি সমাজসেবা ও লেখালেখির সঙ্গে যুক্ত তিনি। উত্তরাধিকার সূত্রে বহুজাতিক প্রসাধনী ব্র্যান্ড ল'রিয়াল হাতে পেয়েছেন মেয়ার্স। যার এক তৃতীয়াংশ অংশীদারিত্ব রয়েছে তার হাতে। গত বছর সংস্থাটির আয় ছিল ৪১.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
বস্নম্নমবার্গ বিলিয়নেয়ার্স ইনডেক্স অনুযায়ী, বছর ৭০-এ মেয়ার্সের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৮৬.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৯ লাখ কোটি টাকা। বিশ্বের ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় ১২তম স্থানে রয়েছেন তিনি। সূত্রের খবর, চলতি বছরে তার সম্পত্তির পরিমাণ ১৫.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বেড়েছে। উলেস্নখ্য, সম্প্রতি ল'রিয়েলের শেয়ারের দাম উলেস্নখ্যযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
মেয়ার্সের দাদা ইউজিন শ্যূলার ল'রিয়েল ব্র্যান্ডের সূচনা করেন। পরবর্তীকালে সেই ব্যবসাকে এগিয়ে নিয়ে যান মেয়ার্সের মা লিলিয়ান বেটেনকোর্ট। ১৯৯৭-তে মা'র হাত ধরেই ল'রিয়েলর বোর্ড অব ডিরেক্টরস পদে যোগ দেন তিনি। ২০১৭ সেপ্টেম্বরে মৃতু্য হয় লিলিয়ান বেটেনকোর্টের। এরপর সংস্থার এক তৃতীয়াংশ শেয়ার হাতে আসে মেয়ার্সের। ওই বছরই বিলিয়নিয়ারদের তালিকায় নাম ওঠে তার। দীর্ঘদিন ধরে যা দখলে ছিল মা লিলিয়ানের।
অন্যদিকে, বস্নম্নমবার্গের রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশ্বের ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় দু'ধাপ নিচে নেমে গিয়েছেন মুকেশ আম্বানি। বর্তমানে ১৩তম স্থানে রয়েছেন তিনি। অর্থাৎ মেয়ার্সের ঠিক পরেই তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন রিলায়েন্স কর্তা। আগে অবশ্য ১১ নম্বর স্থানে ছিলেন মুকেশ। সেখানে তার জায়গায় উঠে এসেছেন মেক্সিকোর কার্লোস স্স্নিম।
১৯৫৩-র ১০ জুলাই ফ্রান্সে জন্ম হয় মেয়ার্সের। ছোট থেকেই কঠোরভাবে ক্যাথলিক ধর্ম মেনে চলতেন তিনি। বড় হয়ে বাইবেলের বেশ কিছু ভাষ্যও লেখেন মেয়ার্স। কয়েক বছর আগে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে পুড়ে যায় প্যারিসের বিখ্যাত নটর ডেম দে নামের ঐতিহ্যবাহী গির্জা। যাকে নতুনভাবে গড়ে তুলতে ২২৬ মিলিয়ান ডলার দান করেন মেয়ার্স। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা। বিশ্বের খ্যাতনামি প্রসাধনী সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন ইউজিন পল লুই স্কালিয়র। ইউজিনের নাতনি ফ্রাঙ্কোইস। পারিবারিক সূত্রে ব্যবসা সামলানোর দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। শৈশব থেকে বাইবেল ধর্মগ্রন্থ মেনে চলেন ফ্রাঙ্কোইস। বাইবেল নিয়ে চর্চাও করেছেন প্রচুর। তাই বাইবেল নিয়ে দু'টি বই লিখেছেন তিনি। বাইবেলের পাশাপাশি গ্রিক দেবদেবী নিয়েও বই লিখেছেন ফ্রাঙ্কোইস। ব্যবসার কাজ নিয়ে যথেষ্ট ব্যস্ত থাকেন তিনি। তবুও কাজের ফাঁকে সময় বের করেন তিনি। ২০১৭ সালে মা মারা যান ফ্রাঙ্কোইসের। কানাঘুষো শোনা যায় যে, মায়ের সঙ্গে অম্স্নমধুর সম্পর্ক ছিল তার। দুই মহিলার মধ্যে নাকি এক সময় এমন অশান্তি হয় যে, তাদের মধ্যে আইনি লড়াইও হয়েছিল। মায়ের মৃতু্যর পর জোরকদমে ব্যবসার কাজে নেমে পড়েন ফ্রাঙ্কোইস। শোনা যায়, কোভিড অতিমারির সময় ব্যবসার পতন হতে শুরু থাকে তাদের। এক সমীক্ষায় জানা যায়, অতিমারির সময় প্রসাধনী দ্রব্যের ব্যবহার কম হয়েছিল বলেই প্রসাধনী সংস্থার ব্যবসার পতন হয়। পরে অবশ্য প্রসাধনী সংস্থার ব্যবসা সঠিক ছন্দে ফিরে যায় ফ্রাঙ্কোইসের। শেয়ার বাজারেও তার সংস্থার বাজারমূল্য ১২ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পায়। প্রসাধনী সংস্থা ছাড়াও অন্য একটি সংস্থার অধিকর্ত্রী ফ্রাঙ্কোইস। স্বামীসহ পুত্রকন্যাকেও সংস্থার উচ্চ পদে দায়িত্ব দিয়ে রেখেছেন তিনি। শোনা যায়, ইউজিনের সঙ্গে নাৎসিদের যোগাযোগ ছিল। তার প্রভাব নাকি ফ্রাঙ্কোইসের বিবাহিত সম্পর্কে পড়েছিল। বস্নম্নমবার্গ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে সম্পত্তির নিরিখে বিশ্বের ধনী মহিলাদের মধ্যে শীর্ষ স্থানে নাম লিখিয়েছিলেন ফ্রাঙ্কোইস। ২০২২ সালের হিসাব অনুযায়ী, ফ্রাঙ্কোইসের সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ৯৪ বিলিয়ন ডলার।