ব্যাটারি কাহিনী
প্রকাশ | ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
ইউনুস মোহাম্মদ
বর্ষাকাল। পুরো চরজুড়ে বর্ষার পানি থইথই করে। দিনরাত চব্বিশ ঘণ্টা বাড়িঘরের পাশ দিয়ে হালকা স্রোত বয়ে যায় পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে। কোথাও কোথাও কাশবন আর কলমিলতার শরীর গলা পর্যন্ত ডুবে আছে।
চরের প্রায় সব বাড়িতেই নৌকা আছে যাতায়াতের জন্য। প্রতিবার বর্ষাতেই এই চর পানিতে ভেসে যায়। পানি উঠে বাড়ির উঠোন পর্যন্ত। কোনোবার ঘর-দুয়ারও পানিতে ভেসে যায়। যখন এই চর পানিতে ভেসে যায় তখন নদী খুব কাছে মনে হয়। দুয়ারে দাঁড়ালেই নদীর বুকে ফুলেফেঁপে উঠা জলরাশি চোখে পড়ে। ওপারে মেঘুলা বাজার। বাজার এবং চরের মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে পদ্মার এই ধারা। মাঝখানের এই চর পদ্মা থেকে পৃথক করেছে এই ধারাকে। চরের এপার থেকে মেঘুলা বাজার দেখা যায়।
আমিনাদের বাড়ির উঠোন পর্যন্ত পানি এসেছে। উঠোনের নিচে এক কোমড় পানি। বাড়ির উত্তর দিকে গ্রামের ভেতর একটা রাস্তা আছে। কাঁচা রাস্তা। রাস্তায়ও পানি উঠেছে। রাস্তার এক জায়গায় ভেঙে গেছে। ভেঙে যাওয়া জায়গা দিয়ে ঘোলা পানির তোড় ছুটেছে। দিন দিন ভাঙা জায়গাটা আরও প্রসারিত হচ্ছে। লোকেরা মাছ ধরার দুয়াইর পেতে রেখেছে রাস্তা ঘেঁষে; স্রোতের বিপরীতে।
চরের মানুষ ট্রলারে চেপে বাজারে যাতায়াত করে। ট্রলার আসে রাস্তা পর্যন্ত। দুধ নিয়ে আর বাড়ির বিভিন্ন শাকসবজি নিয়ে রাস্তায় এসে দাঁড়ায় সবাই। ট্রলারও এসে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে। তারপর সময় হলেই সবাইকে নিয়ে ট্রলার ছাড়ে।
প্রতিবার বর্ষায় চর এলাকায় ডাকাতের আনাগোনা বেড়ে যায়। চরের মানুষ এখন খেয়ে-পরে ভালো। প্রায় বাড়িতেই আতালে গরু আছে। বাড়িতে বড় ঘর আছে। কেউ কেউ ঘর-দুয়ার পাকাও করেছে। চালচলন আর পোশাক-আশাকেও এসেছে আভিজাত্যের ছাপ। অনেকে স্বর্ণের গহনা পরে বের হয়। কাজেই এসব ডাকাতদের নজর এড়ায় না। প্রতি বছর বর্ষায় ডাকাতদের উৎপাতের জন্য পাহারা চলে রাতে। পাহারাদার এলাকার মানুষেরাই।
আমিনা কাজী বাড়ির মেয়ে। এ বছর পনেরোতে পড়েছে সে। গায়ের রং যেমন ফর্সা তেমনই চেহারা সুন্দর। আমিনা পর্দা করে। সে কিছুদিন মেঘুলা মাদ্রাসায় পড়েছে। দরকার না হলে বাড়ির বাইরে বের হয় না। বাড়িতে বড় বড় দুটি চার চালার টিনের ঘর। পাটাতন করা। দুই ঘরেই কেবিন আছে। চার ভাইয়ের এক বোন আমিনা। চার ভাইই বিদেশে থাকে। বড় দুই ভাই বিয়ে করেছে। বড় ভাইয়ের বউটা খুব হাসিখুশি। আমিনার সঙ্গে একঘরে ঘুমায়।
যাদের ঘরে যুবতী মেয়ে আছে, তারা অর্থসম্পত্তির পাশাপাশি যুবতী মেয়ে নিয়েও ডরায়। কারণ, ডাকাতরা অর্থসম্পত্তি কেড়ে নেওয়ার পাশাপাশি যুবতী মেয়েদের যে ক্ষতি করবে না তার কোনো গ্যারান্টি নেই। ডাকাত তো ডাকাতই। ওদের তো কোনো লজ্জাশরম বা দয়ামায়া নেই। এজন্য বর্ষার এই সময়টায় অনেক পরিবার তাদের যুবতী মেয়েদের কোনো না কোনো আত্মীয়বাড়ি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়। অনেকে পাঠায়ও। আর যারা কোনো কারণে পাঠাতে পারে না তারা সাবধানে থাকে। ডাকাত এলে ভুলেও যুবতী মেয়েরা বের হয় না। যতটা সম্ভব নিজেকে লুকিয়ে রাখে। এতসব অসুবিধার পাশাপাশি কিছু সুবিধাও আছে। চরে গরু-ছাগল লালন-পালন করা যায় ইচ্ছে মতো। চারদিকে ঘাসের অভাব নেই। শুকনো মৌসুমে শুধু ঘাসের জমিতে গরু-ছাগল ছেড়ে দিলেই হলো। পেট ভরে ঘাস খেয়ে ইচ্ছেমতো ফিরে আসে বাড়িতে। প্রতি বছর কোরবানির ঈদে চরের মানুষজন হালি হালি গরু ছাড়ায়। গরু-ছাগল প্রতিপালন করে অনেকে এখন স্বাবলম্বী। সাবেক এলাকায় এরা অনেকে জায়গা রেখেছে। স্বর্ণের গহনা বানিয়েছে। তাই বিপদ হলেও চলে যায় না।
বাড়ির দক্ষিণ পাশে দুটি পেয়ারা গাছ হয়েছে। দেশি প্রজাতির ছোট ছোট পেয়ারা। দুই গাছেই পেয়ারা ধরেছে প্রচুর। গাছ বেশি উঁচু না। ইচ্ছে করলে হাত দিয়ে টেনে পেয়ারা পারা যায়। পেয়ারা গাছের গোড়ায় এখন বর্ষার পানি এসেছে। আমিনা প্রতিদিনই চার-পাঁচটি করে এই গাছ থেকে পেয়ারা পেড়ে খায়। ভাবীদেরও দেয় পেড়ে। আজ দিনের মধ্যে দুই-তিনবার সে গাছ থেকে পেয়ারা পেড়ে নিল। হাত দিয়ে ধরে গাছের ডাল নোয়ালেই পেয়ারা পাড়া যায়। তার পেয়ারা পাড়া দেখে বড় ভাইয়ের বউ রসিকতা করল, 'বিয়া অইলে তো আর যহন তহন পেয়ারা খাইবার পারবা না, তাই কি অহন হেই পেয়ারা খাইয়া শোধ করতাছাওনি?'
আমিনা শুধু মিষ্টি করে হেসে বলল, 'আমি একলা খাইবার লাগছিনি? আপনেওতো খাইবার লাগছেন।'
বড় ভাইয়ের বউটাও সুন্দরী। সাবেক এলাকার মেয়ে। মেঘুলা থেকে এনেছে এই বউ। বউয়ের বাপের বাড়ি বাজারের পার্শ্ববর্তী গ্রামে।
একটা পেয়ারা পাড়তে গিয়ে আমিনার হাতে পিঁপড়া উঠে এলো। কালো পিঁপড়ে। পেয়ারাটার বোটায় বাসা বেঁধেছে পিঁপড়েগুলো। বর্ষার পানিতে ভেসে অন্যসব পোকামাকড়ের সঙ্গে পিঁপড়েরাও উঠে এসেছে স্থলে। এসে বাসা বেঁধেছে পেয়ারা গাছসহ অন্যান্য গাছে। আমিনা তবু পেয়ারাটা ছিঁড়ে আনলো। বাম হাত দিয়ে ঝেড়ে পিঁপড়েগুলো ফেলে দিল সে। দুয়ারে এসে একটা চেয়ারে বসে মাথায় ওড়না টেনে দিয়ে পেয়ারা খেতে লাগল আমিনা। ভাবী পেয়ারা নিয়ে ঘরে চলে গেছে।
দুয়ারে যদিও পানি উঠে আসেনি কিন্তু পানির লেভেল প্রায় দুয়ারের সমান হওয়ায় দুয়ারের মাটি শুকনো নেই। কিছুটা ভিজে উঠেছে। পানি যদি আর দুই-একদিন বাড়ে তাহলে দুয়ারে উঠে যাবে।
আমিনার মা দুই হাতে ময়লা লাগিয়ে দুয়ারের ভেতর এলো। বাড়ির চারপাশে বিভিন্ন আগাছার স্তূপ ফেলে যাব দিচ্ছে সে। ঢেউ এসে মাটি ধুয়ে নিয়ে যায়। ঘর থেকে একটা দা নিয়ে আবার বেরিয়ে গেল সে। আমিনা তার পেছনে পেছনে গেল। তার পেয়ারা খাওয়া তখনও শেষ হয়নি।
বাড়ির উত্তর পাশে অনেকটা জায়গা ফাঁকা। কোনো বাড়িঘর নেই। পূর্ব আর পশ্চিমে কয়েকটি বাড়ি আছে। চারপাশ বর্ষার পানিতে ডুবে আছে বলে এখন আরও ফাঁকা লাগছে। ঢেউয়ের ছাঁট আসে অনবরত।
আমিনা তার মাকে সাহায্য করতে গেল। কিন্তু তার মা তাকে ধরতে দিল না। বলল, এডি দইরা অহন আর তর তলান লাগব না। তুই যা। রাগ করে না, এমনিতেই বলল সে।
আমিনা তবু দাঁড়িয়ে রইল। মাথায় এখনো ওড়না টানা আছে। বড় ভাইয়ের বউ মোবাইলে কথা বলতে বলতে বাড়ির বাইরে এসেছে। বাড়ির ভেতরে নেট পায় না। এখানে এলে নেট একটু ভালো পায়।
সন্ধ্যা নামল। তার আগে একপশলা বৃষ্টি হয়ে গেল। হঠাৎই বৃষ্টি হলো। ভাদ্র মাসের পনেরো দিন যায়।
রাত একটা বাজে।
বাড়ির কাছে পানি আসার পর আমিনা কেবিনের রুমে শোয়। কেবিনের রুমে শক্ত দরোজা লাগানো। লোহা কাঠের মোটা পালস্না। বার্মাইয়া লোহা কাঠ। আমিনার সঙ্গে তার ভাবীও শোয়। দুই ননদ-ভাবী আজও শুয়েছে। চরে বিদু্যৎ-এর লাইন নেই। সৌরবিদু্যৎ-এ লাইট জ্বলে। পুরো চরজুড়েই ঘরে ঘরে এই ব্যবস্থা। ঘরে মৃদু আলো জ্বলছে। সারারাতই জ্বলে এই আলো। ঘরের চালার ওপর সৌরবিদু্যতের পাত লাগানো। দিনের বেলা বহুদূর থেকে চকচক করে সেই পাত। আচমকাই ডাকাত পড়ল বাড়িতে। ডাকাতের নৌকা ভিড়েছে তাদের বাড়ির ঘাটায়। নৌকা থেকে নেমে বাড়ির চারপাশ ঘিরে ধরেছে সবাই।
ডাকাতরা খবর জেনেই এসেছে। এই বাড়ির চার ছেলে বিদেশে থাকে। বাড়ির অবস্থা ভালো।
অল্প সময়ের মধ্যেই বাড়ির সবাইকে জিম্মি করে ফেলল।
আমিনার বাবা-মাকে বেঁধে ফেলেছে।
ডাকাত সর্দার হাতে চকচকে একটা রামদা নিয়ে বলল, ট্যাকা-পয়সা আর সোনা-গয়না কোতায় রাকছস ক?
আমিনার বাবা-মায়ের মুখের ভেতর গামছা ভরে বাঁধল ঘরের খামের সঙ্গে। যাতে কোনোরকম শব্দ করতে না পারে।
কেবিনের দরোজা ভাঙল। আমিনা আর তার ভাবী ধান রাখার বেরির ভেতর গিয়ে লুকিয়েছে। বাড়িতে ডাকাত পড়েছে শুনে আগেই তারা গিয়ে লুকিয়েছে। নিজেদের তো রক্ষা করতে হবে।
কেবিনের ভেতর আলমারি, শোকেস যেখানে যা ছিল সবকিছু এলোমেলো করে ডাকাতদল তাদের প্রত্যাশিত জিনিস খুঁজে বেড়াল। কিছু গহনা আর নগদ কিছু টাকা পেল তারা। কাপড়-চোপড় আর বিভিন্ন আসবাবপত্র ঘরভরে ছড়িয়ে পড়েছে।
ডাকাতরা চলে যাবে ঠিক এই মুহূর্তে আমিনা ভয়ে চিৎকার দিয়ে উঠল। ডাকাতরা ফিরে এলো কয়েকজন। এর ভেতরে একজন হাফপ্যান্ট পরা। কালো কুচকুচে শরীর। বড় বড় দুটি চোখ। কেবিনের ভেতর এসে সে আমিনাকে বাইরে বের করে আনল। গলার কাছে ছ্যান ধরে বলল, যদি শব্দ করোস তাইলে এক কোপে গলা নামাই দিমু।
আমিনা চুপ হয়ে গেল।
ভাইয়ের বউ তখন অন্য জায়গায় গিয়ে লুকিয়েছে। ডাকাতরা তার কথা জানতেই পারল না।
আমিনার বাবা অস্পষ্ট করে গুঙিয়ে বলল, 'তগো পায় ধরি। আমার মেয়ার সর্বনাশ করিস না। তোরা আমারে মার কাট যা খুশি কর। ওর সর্বনাশ করিস না।
কিন্তু ডাকাতরা শুনবে কেন? আমিনার রূপে তারা তখন অন্ধ হয়ে গেছে। এবং তাকে ভোগ করার জন্য উন্মত্ত হয়ে উঠেছে।
বাবা-মার সামনেই আমিনার সঙ্গে যা করার করল। এবং ডাকাতরা চলে যাওয়ার পর দেখা গেল আমিনার ইজ্জত হরণের পাশাপাশি তারা তার আর বড় একটি ক্ষতি করে গেছে। তিনজন ডাকাত পালা করে তাকে ধর্ষণ করেছে। এবং ধর্ষণ শেষে টর্চ লাইটের বড় ব্যাটারি ঢুকিয়ে দিয়ে গেছে তার যোনিতে। আমিনা এখন যন্ত্রণার চেয়ে লজ্জাটাতেই বেশি ভেঙে পড়েছে। মুখ দেখাতে চাইছে না কাউকে। এই দুর্ঘটনা ঘটার প্রথম পর্যায়ে আমিনা জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিল। এখন জ্ঞান ফিরেছে। জ্ঞান ফেরার পর থেকেই সে কাউকে মুখ দেখাতে চাইছে না। সেই সঙ্গে প্রচন্ড যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে সে। পাড়াপড়শিরা এলো নৌকা নিয়ে। তারা টের পেয়েছিল এই বাড়িতে ডাকাত পড়েছে। কিন্তু ভয়ে কেউ আসার সাহস পায়নি।
আমিনার মা মাটিতে মূর্ছা যাচ্ছে। কি সর্বনাশ হয়ে গেল তার।
আমিনার বাবার পিঠে দুটি বারি দিয়েছে ডাকাতরা। এখন মোটা হয়ে আঘাতের দাগ ফুটে উঠেছে। গেঞ্জির তলে সেই দাগ দেখে অনেকে শিউরে উঠল।
আমিনার ব্যাপারটা সবাই জানল। ধর্ষণ করে ব্যাটারি ঢুকিয়ে দিয়ে গেছে ডাকাতরা।
আমিনাকে জরুরিভাবে ডাক্তারের কাছে নিতে হবে।
পরদিন সকালে সবকিছু ঠিক করে আমিনাকে ডাক্তারের কাছে নেওয়া হলো। অপারেশন করতে হবে। ব্যাটারি যোনিতে গিয়ে শক্ত হয়ে আটকে গেছে। এবং এসিডযুক্ত ধাতব পদার্থ হওয়ায় যোনিতে ইনফেকশন হতে শুরু করেছে।
এক সপ্তাহ ধরে চিকিৎসা চলল আমিনার। এই ঘটনা পুরো চর ভরে জানাজানি হয়ে গেল। চর পেরিয়ে এই খবর নদীর এপারে এসেও পৌঁছাল। চরের মানুষ তাজ্জব বনে গেছে। ডাকাতির বহু ঘটনা শুনেছে তারা, এই ঘটনা তারা কোনোদিন কল্পনাও করেনি।
আমিনা এখনো ক্লিনিকেই আছে। ঢাকার মিরপুরে একটা প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসা চলছে তার। অপারেশন হয়ে গেছে। আমিনা এখন অনেকটাই সুস্থ। তার কাছে তার মা আছে। ভাইয়ের বউ এসে দুই রাত থেকে গেছে। আমিনার পেছনে অনেক টাকা লাগছে। প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসা খরচ অনেক বেশি। তবে টাকার কোনো সমস্যা নেই। আমিনার ভাইয়েরা ফোন দিয়ে বলেছে যত টাকা লাগে আমরা দিমু। আমিনার চিকিৎসা করেন ভালো করে।
আমিনা শারীরিকভাবে সুস্থ হয়ে উঠলেও মানসিকভাবে এখনো সুস্থ হয়ে উঠতে পারেনি। কারো সঙ্গে কথা বলে না। সব সময় মুখটা কেমন শুকনো করে রাখে। সারাক্ষণ তার মুখে একটা দুশ্চিন্তার ছাপ দেখা যায়। সারাক্ষণ তার মনে একটাই চিন্তা, বাড়িতে গিয়ে এলাকায় সে কেমন করে মুখ দেখাবে? মানুষ কি তার দিকে অন্য নজরে তাকাবে না? তাকে দেখে একে অন্যের সঙ্গে কানাকানি করবে না?
এই মুখ কেমন করে দেখাবে মানুষকে?
এই কয়দিনে এই নোংরা কাহিনী চরের মানুষ সবাই জেনে গেছে। ঘটনার দিন সকাল বেলা মানুষে বাড়ি ভরে গিয়েছিল।
সাত দিনের দিন এলাকার চেয়ারম্যান-মেম্বার এলো ক্লিনিকে। এই ঘটনায় মামলা হবে থানায়। এলাকার চেয়ারম্যান-মেম্বারের মুখজবানি দরকার। আমিনার সঙ্গে কথা বলতে এসেছে তারা। তাদের দেখেই আমিনা ওড়নায় মুখ ঢেকে বেড ছেড়ে ধরফর করে উঠল। এবং কারো কোনো কথা না শুনে সোজা ছাদে দৌড়ে গেল। নিচে ঢাকা শহরের ব্যস্ত রাস্তা। মানুষজন যাতায়াত করছে। গাড়ি আসছে যাচ্ছে। ব্যস্ত জনপদ। কেউ তার কাছে আসার আগেই আমিনা ছাদ থেকে লাফিয়ে নিচে পড়ল। আমিনার মা চিৎকার করে পাগলের মতো সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামতে লাগল। চেয়ারম্যান আর মেম্বার দুইজন লিফটে চড়ে নিচে নেমে এলো। ততক্ষণে আমিনার চারপাশে মানুষের জটলা তৈরি হয়ে গেছে। মারা গেছে আমিনা। ঢালাই রাস্তার একপাশ দিয়ে রক্তের ধারা ছুটছে।