আমাকে কেউ কিছুই বলেনি,
তাচ্ছিল্য করেনি- তবু
লজ্জা পাচ্ছি আমি-
কী নিদারুণ লজ্জা!
উঠতে লজ্জা, বসতে লজ্জা
হাটতে লজ্জা, ঘরে-বাইরে
লজ্জা পাচ্ছি; যেন এ বিবেকেরই
এক লজ্জা বটে।
আমি তো বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসি
ভালোবাসি শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের
ভালোবাসি বাঙলার এই সবুজ
লতা-পাতা ঘাস, ভালোবাসি সংস্কার
আন্দোলনের শহীদদের; আহতদের।
তবে লজ্জা পাচ্ছি কেন?
লজ্জা পাচ্ছি- তোমার মন্ত্রী
এমপি, ব্যবসায়ীদের কু-কীর্তির
কথা জেনে- রাজনীতি তো
নয়; নয় মানবনীতিরও পরিচয় কোনো।
নিয়তির অমোঘ নিয়মেই ভেঙেছে
তোমার গড়া স্বার্থের শৃঙ্খল
আকাশে সাদা মেঘের ভেলায়
বাতাসে বাতাসের দোলায়
গুলির শব্দ-আর্তনাদ আর আর্তনাদ
এখনো ক্ষণে ক্ষণে ৫ আগস্টের
প্রতিধ্বনি শুনছি, শুনবো- আজীবন জাতিও
শুনবে; স্বপ্নেও আতকে উঠবে- ভয়ে
ও লজ্জায়।
এ দেশের মানুষের ছোট আশা
পূরণে দুরাশা, দিনে ও রাতের
ছায়ায় লড়েছে এক শ্রেণির নিরস্ত্র মানুষ-
ছিল চেপে ধরা
নীরবতা মানবতার কান্না;
শুনতেই পাওনি।
গোধূলী শেষে রাখালের বাঁশির
সুর পৌঁছেনি তোমার কানে-
দিনেও রাতের ছায়া দেখেছে
এ বিস্তীর্ণ জনপদের অসংখ্য মানুষ
বাংলার কষ্টের বাগানে
তোমার প্রতিহিংসার ইতিহাস জেনে
আমি বেশ লজ্জা পাচ্ছি।
কঠিন ঘটনার জন্ম হয় দেশে
প্রতিহিংসার আগুনে শুধু জামায়াত-
বিএনপি পুড়েনি, পুড়েছে জনগণও
সাথে পুড়েছে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযোদ্ধা,
পুড়েছে শিল্পী, বুদ্ধিজীবী দেশবোদ্ধা।
১৬ বছরের শাসনে ক্রোধ ছিল
ছিল না সম্মান- ছিল লজ্জা,
এখন জেনে বুঝে অন্যদের সাথে
আমিও লজ্জা পাচ্ছি-
লজ্জা পাচ্ছি তোমার বিস্তর ডুবে যাওয়ায়।
আন্দোলনের ট্রমা এখন রাজনীতিতে নেই
ছড়িয়ে পড়েছে জাতি ও সমাজ গড়া
শিক্ষকের মাঝে; ভয়ংকর সে দৃশ্য-
শিক্ষার্থী শিক্ষকের শরীরে তুলেছে হাত
এতে জাতির যায়নি কো জাত-
লজ্জা পাচ্ছি।
এদেশের মানুষের প্রতিদিনের কামনায়
সূঁচ হতে চেয়েছে; কাঁচি নয়।
জাতির পঞ্চাশ বছরে এমন ঘটনা ঘটেনি
জাতির পিতার শোক দিবস পালন হয়নি
বাংলায় এবার; আমি লজ্জা পাচ্ছি
লজ্জা পাচ্ছে জাতির পিতাকে
ভালোবাসে যারা।