স্মৃতিতে কবি কাজী নজরুল ইসলাম
প্রকাশ | ২৩ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
বিমল ভৌমিক
১৯৭৬ সাল। আগস্ট ২৯ রোববার। বেলা ১০:৪৫ মিনিট। কর্মস্থলের উদ্দেশে বেরিয়েছি। আমি কালীগঞ্জ থানার হাকিমপুর দ্বিমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বর্তমানে চৌগাছা উপজেলার শিক্ষক। সাংবাদিক দৈনিক বাংলাদেশ, বগুড়া ও দৈনিক পূর্বাঞ্চল, খুলনার। কোর্টচাঁদপুর-চৌগাছা রোডে প্রায় ৫ কি.মি. যেতে হয়। বাইসাইকেল আমার বাহন। এ সময় সাহিত্য-সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও পরিচিতি এসেছে। আমাদের একজন বন্ধু মুশতার আহমেদ। মুন ট্রেডার্সের মালিক। সামাজিক কর্মে জড়িত। শহরের বিশিষ্টজন সখ্যতার কারণে এখানে বসেন। নিউ হাউস স্ট্রিটে দোকানের সামনে পৌঁছানো মাত্রই বিশিষ্ট সাহিত্যিক প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মুন্সী আব্দুল মান্নান, 'বিমল! সাইকেল রাখ। তোমার স্কুলে যাওয়া হচ্ছে না।' বললাম কেন? তুমি খবর জান না, বিদ্রোহী কবি আজ চলে গেলেন মহাপ্রস্থানে। থমকে গেলাম। চোখ দু'টো অশ্রম্নসিক্ত হ'য়ে উঠল। দ্রম্নত সাইকেলটা রেখে এলাম শেলেন'দার চায়ের দোকানে। ফিরে দেখি শহরের বিশিষ্টজনের প্রায় সবার উপস্থিতি। প্রস্তাব তাৎক্ষণিক শোক সভার। সব শোকাতুর বিশিষ্টজনের সিদ্ধান্তে তাৎক্ষণিক উদ্যোগ শুরু হলো। আমি মুন্সী আব্দুল মান্নান, সাংবাদিক মুশতার আহমেদ বুলবুল, অধ্যাপক হাবিবুলস্নাহ বাহার, সাংবাদিক উপাধ্যক্ষ আ. লতিফ, অধ্যক্ষ আ. মতলেব, অধ্যাপক আমজাদ হোসেন, শিক্ষক বাবু সুবোধ কুমার সেনগুপ্ত, শিক্ষক তাজউদ্দীন আহমদ, শিক্ষক শামসুর রহমান, বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব শান্তি মিয়া, সাহিত্যিক জিয়ারুল হোসেন, খান কামরুজ্জামান রতন, খুলনা বেতার শিল্পীদের মধ্যে ইকবাল আনোয়ারুল ইসলাম, রেজা খসরু, স্বপন চক্রবর্তী, রাজশাহী বেতার শিল্পী শাহাজান কবীর, বিশিষ্ট সাহিত্যিক আব্দুল মালেক, কাজী আব্দুর রহিমসহ আরও অনেক সুধীজনের উপস্থিতিতে এ অনুষ্ঠান অশ্রম্ন সিক্ততায় সার্থক হয়ে ওঠে। একটি লালশালু কাপড় জোগাড় হলো। চারকোনায় ধরলেন বিশিষ্ট ব্যক্তি-মধ্যমণিরা। কোরাস গেয়ে প্রচার ও তাৎক্ষণিক অর্থসংগ্রহের জন্য আমরাও শিল্পীদের সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে গাইলাম- "ভিক্ষা দাও গো নগরবাসী...।" কবি নজরুলের এ গানই আমাদের অর্থ সংগ্রহের প্রধান আকর্ষণ হ'য়ে উঠল। সঙ্গে সুন্দর ও সাবলীল প্রচার হলো। বেশ কিছু অর্থের সংস্থান হলো। মাইক আনা হলো। আরও আনুষঙ্গিক কিছু কেনা হলো। কোটচাঁদপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির হল ঘর। এখানেই শোকসভা অনুষ্ঠিত হবে। শুরু হলো অনুষ্ঠান। পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করলেন আমাদের হাইস্কুলের মৌলভী স্যার মো. মকবুল হোসেন। কবির আত্মার প্রশান্তি কামনায় মোনাজাতের আবেগময় বাণীতে শোকাতুর মানুষ হলো শোক-বিহ্বল। অতঃপর সংক্ষিপ্ত স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্যেও উপস্থিত সবাই আবেগাপস্নুত-অশ্রম্নসিক্ত। স্মৃতিচারণে কবির গান গাইলেন, ইকবাল আনোয়ারুল ইসলাম- 'বাগিচায় বুলবুলি তুই...।' স্বপন চক্রবর্তী গাইলেন- 'ঘুমিয়ে গেছে শ্রান্ত হয়ে আমার গানের বুলবুলি।' পরিশেষে শাহাজান কবির গাইলেন, 'মসজিদেরই পাশে আমায় কবর দিও ভাই, যেন গোরে থেকেও মুয়াজ্জিনের আজান শুনতে পাই।' শাহাজান কবীরের এ গান শেষে সেদিন কেউ কেউ ফুপিয়ে কেঁদে ফেলেছিলেন। কারও চোখই শুকনা ছিল না। অশ্রম্নসজল নেত্রে এক মৌন শোক মিছিল সেদিন, 'নিউ হাউস স্ট্রিট শহর সড়ক, জন ম্যাকলিউড লেন পরিক্রমা শেষে শহীদ মিনারে এসে শেষ হয়। সে স্মৃতি কখনো ভোলার নয়। মনের মণিকোঠায় থাকবে চির অম্স্নান।
কবি কাজী নজরুল ইসলামের বয়স তখন বাইশ বছর। মুজাফফর আহমেদের সঙ্গে কোলকাতার তালতলায় একই বাসায় থাকেন দু'জন। নিচতলার একটি ঘরে দু'জনের সংসার। মুজাফফর আহমেদের লেখা থেকে জানা যায়, তখন খ্রিষ্ট মাসের সময় সেদিন রাত ১০টার পর মুজাফফর ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। নজরুল সারারাত ঘুমাননি। সকালে মুখ ধুয়ে এসে বসি। নজরুল এসে বলল, মুজাফফর শোন। তার কবিতা শোনালেন। রাতের কোন প্রহরে কবিতা লিখেছিলেন তা তিনি জানেন না। এ কবিতার নাম 'বিদ্রোহী'। তিনি কোনো উচ্ছ্বাসে আপস্নুত হননি। আবেগ প্রকাশ করেননি। তাই নজরুল আহত। কিন্তু মুজাফফরের মনের মণিকোঠায় তখন ভাসছিল- এই কবিতা লিখে তার মাথার নিউরোন এবং স্নায়ুগুলো ঠিক আছে তো। মুজাফফর আহমদ-ই বিদ্রোহী কবিতার প্রথম শ্রোতা। 'বিজলী'। বিখ্যাত সপ্তাহিক পত্রিকা। নজরুলের বিদ্রোহী কবিতা ছাপা হয়। বৃষ্টিকে উপেক্ষা করেও এক সপ্তাহে দু'বার ছাপতে হয়েছিল 'বিজলী'। যা বিজলী প্রকাশনার অন্যতম রেকর্ড। তার লেখা থেকে আরও জানা যায়-রবীন্দ্রনাথ তখন মধ্যগগনের সূর্যালোকে বিশ্বব্যাপী উদ্ভাসিত। তবুও তিনি এ কবিতা শুনে নজরুলকে বুকে জড়িয়ে ধরেছিলেন। তিনি নতুনকে বরণ করে বুকে নিতে জানতেন। তিনি বুঝেছিলেন, নতুন কবির আগমন। যার বয়স ২২ বছর। সে রাতে কী হয়েছিল যে এ কবিতা লিখতে হলো নজরুলকে। তখন ১৯২১ সাল। স্বমহিমায় প্রথিতযশা সুবোধ সরকারের লেখায় জানলাম এ-এক মহাসময়। সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্তের মাঝের একটি রাত। যে রাতে ২২ বছরের যুবক সমস্ত ভারতবর্ষের মানচিত্রে এঁকেছিলেন-'বলবীর/বল উন্নত মমশীর!' একটি মাত্র কবিতার দায়বদ্ধতা প্রকাশিত হয়। ইউরোপের সব কবিতা যখন হিটলারের বিরুদ্ধে। সব উপন্যাসে অত্যাচারের বিপক্ষে রুখে দাঁড়ায়। সব নাটক জেগে ওঠে অন্যায়ের বিপক্ষে। এ সময় রচিত নজরুলের এ কবিতায় ভারতের স্বাধীনতা অর্জনে রাখে অনবদ্য ভূমিকা। এমন একটা আবহাওয়ায় নজরুলের 'বিদ্রোহী' বাংলার ঘরে ঘরে তুলেছিল সংগ্রামমুখর সেস্নাগান। ১৯৪৫-এ বার্লিনের পতন, ১৯৪৭-এ ইংরেজ রাজত্বের সূর্যাস্ত। ১৯২১-এর পর নজরুলকে ১০টা জর্দা সাজা পান দিয়েও আর কখনো আর একটা 'বিদ্রোহী' লেখা সম্ভব হয়নি। কিন্তু তারপরও বারবার এ কবিতা লেখা হয়- যা নজরুল লেখেননি, লিখেছিল সাধারণ মানুষ। পরাধীন ভারতবর্ষের পুলিশ ভয় পেয়েছিল এ কবিতাকে। স্বাধীন ভারতের পুলিশ ভীত-সন্ত্রস্ত। ব্রিটিশ গোয়েন্দারাও লালবাজারে বসে অনেক পরিকল্পনা করেও পারেনি থামাতে এ কবিতার যুদ্ধময় গতি। স্বাধীনতা পাওয়ার পর আরও বহু স্বাধীনতার জন্য মানুষ লড়াই করেছে। প্রতিটা লড়াইয়ের পুরোভাগে এ কবিতার যুদ্ধময় গতিময়তা জুগিয়েছে আর্শিবাণী। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে মুক্তিযোদ্ধার হৃদয়ে তুলেছিল ঝড়। উৎসাহ দিয়েছিল সংগ্রামমুখর জীবনের অগ্রগতিতে। পাকিস্তানি বাহিনীর সিংহাসন কাঁপিয়ে বজ্র নিনাদের হুংকারে দেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছিল। এ স্বাধীনতা যুদ্ধের মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে মৃতু্যর অন্ধকার প্রকোষ্ঠ থেকেও করেছিল উদ্ধার এ কবিতার যুদ্ধ-জয়ের অমৃত বাণী। যুগে যুগে এ কবিতার কবি পরাধীনতার শিকল ভেঙে মুক্ত করেছে অসহায় নিপীড়িত, নির্যাতিত, বঞ্চিতদের। আজও এ কবিতার আগুন সমভাবে প্রজ্বলিত। যেদিন নিভে যাবে এ আগুন, সেদিন মৃতু্য হবে- একটি মহাদেশের, মৃতু্য হবে একটি জাতির, মৃতু্য হবে একটি সংস্কৃতির, মৃতু্য হবে মানবতার, মৃতু্য হবে সব ন্যায় যুদ্ধের।
১৯৬৯ সাল। সম্বিত-চেতনাহীন কবির বয়স ৭০ বছর পূর্ণ হয়। বিশ্বময় তার জন্মদিন পালনের উদ্যোগ চলছে। কোলকাতার রবীন্দ্র-ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় সম্মান সূচক ডি-লিট উপাধিতে ভূষিত করে। ১৯৭১ সালে নজরুলের জন্মবার্ষিকী প্রাক্কালে বাংলাদেশের গণপ্রজাতন্ত্রী প্রবাসী সরকার; বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলমান; মুক্তিযুদ্ধের পরিচালকের নির্দেশেই 'স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে তাকে নিয়ে নতুন আঙ্গিকে অনুষ্ঠান উপস্থাপনা আরম্ভ করা হয়। তারপর ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১। স্বাধীন বাংলাদেশ মুক্তির গানে মুখরিত হয়- শহর, বন্দর, গ্রাম। ১৯৭২ সাল। সদ্য মুক্তিযুদ্ধোত্তর বাংলাদেশে প্রথম কাজী নজরুল জন্মবার্ষিকীর প্রাক্কলন কাল। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগে কবিকে সপরিবারে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। ধানমন্ডির কবি ভবনে তার অবস্থান নিশ্চিত হয়। সেখানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয় নিয়মিত। স্বাধীন বাংলাদেশে কবির জন্মবার্ষিকী উদযাপন। রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আর সাঈদ চৌধুরী ও প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আনুষ্ঠানিকভাবে কবিকে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। ১৯৭৪ সাল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এ সময় কবিকে সম্মানসূচক ডি-লিট উপাধি প্রদান করেন। ১৯৭৫ সাল, ২২ জুলাই। কবিকে ঢাকা পিজি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১৯৭৬ সাল, ২৯ আগস্ট। কবি এই এক বছর, ঢাকা পিজি হাসপাতালের ১৯৭নং কেবিনে নিঃসঙ্গ অচেতন জীবন অতিবাহিত করেন। ২১ ফেব্রম্নয়ারি, ১৯৭৬ সাল। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক 'একুশে পদক' প্রদান সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন এবং প্রথম কবি নজরুলকেই 'একুশে পদকে' ভূষিত করা হয়।
১৯৭৬ সাল, আগস্ট মাস। কবির স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে। ২৭ আগস্ট, শুক্রবার কবির শরীরের তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। তিনি ব্রঙ্কোনিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হন। ২৯ আগস্ট, রোববার সকালে কবির দেহের তাপামত্রা অতিরিক্ত বেড়ে যায়। ১০৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছাড়িয়ে যায়। অক্সিজেন দিয়ে সাকশানের সাহায্যে কবির ফুসফুস থেকে কফ ও কাশি অপসারণের চেষ্টা অব্যাহত থাকে। কিন্তু চিকিৎসকদের সব আন্তরিক ও আপ্রাণ প্রচেষ্টা সত্ত্বেও কবির অবস্থার ক্রমাবনতি অব্যাহত গতিতে চলমান। সার্বিক প্রচেষ্টা ব্যর্থ। সেদিন ১৩৮৩ বঙ্গাব্দ ১২ ভাদ্র, ২৯ আগস্ট, ১৯৭৬ খ্রিষ্টাব্দ সকাল ১০টা ১০ মিনিট। সব ভক্ত প্রাণ, অসহায়, নিপীড়িত, নির্যাতিত, বঞ্চিতদের নয়নমণি এ বিশ্বভুবনকে কাঁদিয়ে ইহধামের মায়া পরিত্যাগ করে অনন্তলোকের পথে পাড়ি জমান। বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনে কবির মৃতু্য সংবাদ প্রচারিত হয়। সারাদেশের নজরুলপ্রেমী মানুষ মুহূর্তের মধ্যেই যেন শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়ে। পিজি হাসপাতালে শোকাহত মানুষের ঢল নামে। সেদিন কবির মরদেহ প্রথম পিজি হাসপাতালের গাড়ি বারান্দায় রাখা হয়। পরে সাধারণ শোকাহত মানুষ কবির বিদায়লগ্নে একনজর দেখতে পারে এবং শেষ শ্রদ্ধা জানাতে পারে সেজন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির সামনে নেওয়া হয়। হাজারো ভক্ত প্রাণ জনস্রোতে কবির দেহ আবৃত হয় শ্রদ্ধার পুষ্পার্ঘে। শোক সভাও অনুষ্ঠিত হয়েছিল সেদিন কোটচাঁদপুরের মতো শ্রদ্ধাভক্তির নৈবেদ্যের অশ্রম্নসিক্ততায় সমগ্র বাংলাজুড়ে।
ওইদিন আসরের নামাজের পর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কবির জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। কোটি মানুষের অশ্রম্নধৌত জানাজা শেষে কবির দেহকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদ আঙিনায় আনা হয় ভক্তির পুষ্পার্ঘে সুসজ্জিত করে। এ শোকসভায় শোভিত হয়েছিল সেদিন জাতীয় পতাকা মিছিলে শুধু অশ্রম্নসিক্ত ভক্তিময় নীরব কান্নার জনস্রোত ভরে গিয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদ প্রাঙ্গণ।
কবির বিদায়লগ্নের শোভাযাত্রায় যারা কবিকে বহন করে এনেছিলেন তারা হলেন- তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম, সেনাবাহিনীপ্রধান মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান, নৌবাহিনীপ্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম এইচ খান, বিমানবাহিনীপ্রধান এয়ার ভাইস মার্শাল এজি মাহমুদ, বিডিআরপ্রধান মেজর জেনারেল দস্তগীর প্রমুখ শ্রদ্ধাসিক্ত ব্যক্তিরা। ধর্ম-বর্ণ-সম্প্রদায় নির্বিশেষে ভক্তির শ্রদ্ধায় সিক্ত করে লাখো-কোটি মানুষের উপস্থিতিতে পূর্ণাঙ্গ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় কবিকে সমাহিত করা হয়।
১৯৮৭ খ্রি.। বাংলাদেশের জাতীয় কবির মর্যাদায় কবিকে সম্মানিত করা হয়। অতঃপর ১৯৯৮-২০০০ খ্রি. কবির জন্মশতবার্ষিকী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয় যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যে সমগ্র বিশ্বব্যাপী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদের আঙিনায় কবির প্রাণহীন দেহ শায়িত। চিরনিদ্রায় নিদ্রিত হলেও ওখানে যেন আজও ধ্বনিত হয় ভক্তির শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদিত মুক্তিকামী মানুষের কণ্ঠ নিঃসৃত বাণী-
'মসজিদেরই পাশে আমায় কবর দিও ভাই,
যেন গোরে থেকেও মুয়াজ্জিনের আযান শুনতে পাই।'